রোজ রোজ ইফতারের টেবিলে একই ধরনের খাবার একটু একঘেয়ে লাগতে পারে। সে ক্ষেত্রে মাঝেমধ্যে খাবারে ভিন্নতা আনতে পারেন। সহজ পদ্ধতিতে ঘরেই বানিয়ে নিতে পারেন চিড়ার ডেজার্ট, ফ্রুট সালাদ ও পটেটো চিকেন চিপ বল। রেসিপি দিয়েছেন কোহিনুর বেগম
চিড়ার ডেজার্ট
উপকরণ: চিড়া ২৫০ গ্রাম, গরুর দুধ ১ কেজি, কাস্টার্ড পাউডার এক টেবিল চামচ, চিনি স্বাদমতো, বিভিন্ন ধরনের ফল যেমন– আপেল, কলা, আম, পাকা পেঁপে, আঙুর, আনার, ভ্যানিলা আইসক্রিম।
প্রস্তুত প্রণালি: প্রথমে চিড়া ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখতে হবে। এবার ১ কেজি দুধ জ্বাল দিয়ে হাফ কেজি করতে হবে। ঘন হয়ে এলে কাস্টার্ড পাউডার গুলিয়ে দুধে মিলিয়ে নাড়তে হবে। ক্রিমি ভাব হলে চুলা বন্ধ করে নামিয়ে ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে নিন। এবার চিড়ার ওপরে ঠান্ডা দুধ, চিনি, ফল কিউব করে কেটে মিশিয়ে নিন। ভ্যানিলা আইসক্রিম ওপরে দিয়ে পরিবেশন করুন।
ফ্রুট সালাদ
উপকরণ: বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি ফল যেমন তরমুজ, আপেল, আঙুর, গাজর, শসা, পেঁপে, কলা, পছন্দ অনুযায়ী বাদাম, পুদিনাপাতা, ধনেপাতা, কাঁচামরিচ, পেঁয়াজ কুচি এক টেবিল চামচ, টালা জিরার গুঁড়া, বিট লবণ বা সাধারণ লবণ স্বাদমতো, টক দই ২ টেবিল চামচ, সরিষার তেল এক টেবিল চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি: সব ধরনের ফল কিউব করে কেটে সব উপকরণ দিয়ে মেখে নিন। সার্ভিং ডিশে সুন্দর করে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
পটেটো চিকেন
চিপ বল
উপকরণ: আলু ২৫০ গ্রাম, মুরগির সিনার মাংস ১০০ গ্রাম, চিজ ১০০ গ্রাম, আদা-রসুন গুঁড়া এক চা চামচ, টমেটো সস-সয়াসস এক চা চামচ, কাঁচামরিচ কুচি-পুদিনাপাতা কুচি-ধনেপাতা কুচি এক টেবিল চামচ, গরম মসলা গুঁড়া এক চা চামচ, তেল পরিমাণমতো, লবণ স্বাদমতো, ব্রেডক্রাম ১০০ গ্রাম, ডিম দুটি।
প্রস্তুত প্রণালি: আলু সেদ্ধ করে ম্যাশ করে নিন। মুরগির মাংস কিমা করে কেটে সামান্য তেল দিয়ে আদা-রসুন গুঁড়া, গরম মসলা, সয়া সস, টমেটো সস, সামান্য লবণ দিয়ে ভেজে নিন। এবার আলুর মধ্যে পুদিনাপাতা, ধনেপাতা, কাঁচামরিচ, গরম মসলা, লবণ দিয়ে ভালো করে মেখে নিন। চিকেন ও চিজ দিয়ে বল আকার তৈরি করে ডিমে চুবিয়ে ব্রেডকাম দিয়ে মাখিয়ে নিন। তেলে ভেজে গরম গরম পরিবেশন করুন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শেয়ারবাজারে লেনদেন-খরা কাটছে না, হতাশ বিনিয়োগকারীরা
ঈদের ১০ দিনের ছুটির পর লেনদেন শুরুর প্রথম দিনেই বিনিয়োগকারীদের আশাবাদী করতে পারেনি দেশের শেয়ারবাজার। দীর্ঘ ছুটির পর আজ রোববার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় দরপতনে। যদিও দিন শেষে সূচক ও লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। তবে তা বিনিয়োগকারীদের আশাবাদী হওয়ার মতো নয়। উল্টো ভালো মৌল ভিত্তির কিছু শেয়ারের দরপতন বিনিয়োগকারীদের আরও বেশি দুশ্চিন্তায় ফেলেছে।
ঢাকার বাজারে রোববার লেনদেন হওয়া ৩৯২ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭৯টিরই দরপতন হয়েছে, দাম বেড়েছে ১৪৫টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৬৮টির দাম। লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর দামের উত্থান–পতনের প্রভাবে দিন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৭২৪ পয়েন্টে। আর লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২৬৩ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ৩৯ কোটি টাকা বেশি।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেয়ারবাজারের লেনদেন বর্তমানে যে পর্যায়ে নেমেছে, তাতে বাজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী কারও জন্যই তা আশান্বিত হওয়ার মতো না। এই লেনদেনে অনেক প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর পরিচালন খরচ তোলায় দুঃসাধ্য হয়ে গেছে। ফলে অনেক ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক মাস শেষে বাজার থেকে পরিচালন খরচ তুলতেই হিমশিম খাচ্ছে। একইভাবে লেনদেন থেকে স্টক এক্সচেঞ্জগুলো যে কমিশন আয় করে তা দিয়ে স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালন খরচ উঠছে না।
সংশ্লিষ্টরা আরও বলেন, বাজেটকে সামনে রেখে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা আশান্বিত হয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঘোষিত বাজেটে সরাসরি বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো সুখবর ছিল না। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাজার নিয়ে হতাশা আরও বেড়েছে। এ অবস্থায় নতুন করে বাজারে কোনো বিনিয়োগকারী তো আসছেনই না, উল্টো বিদ্যমান বিনিয়োগকারীরাও সুযোগ পেলে লোকসানে শেয়ার বিক্রি করে বাজার ছাড়ছেন। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে বাজার দীর্ঘ মন্দার কবলে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
ব্রোকারেজ হাউস লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকার বাজারে আজ রোববার সূচকের পতনে যেসব কোম্পানি বড় ভূমিকা রেখেছে তার মধ্যে ছিল ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, ইসলামী ব্যাংক, গ্রামীণফোন, বেক্সিমকো ফার্মা, বিএসআরএম লিমিটেড, আইএফআইসি ব্যাংক, রেনাটা, ওরিয়ন ইনফিউশন, ইউনাইটেড পাওয়ার ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। এসব কোম্পানির শেয়ারের দরপতনে আজ ডিএসইএক্স সূচকটি ৭ পয়েন্ট কমেছে। তার বিপরীতে সূচকের উত্থানে বড় ভূমিকা রেখেছে ব্র্যাক ব্যাংক, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, স্কয়ার ফার্মা, লাভেলো আইসক্রিম, সিটি ব্যাংক, এসিআই, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, আল–আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ও বীকন ফার্মা। এসব কোম্পানির শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধিতে ডিএসইএক্স সূচকটি ১৮ পয়েন্টের বেশি বেড়েছে।
লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের এই প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, একদিকে ভালো মৌল ভিত্তির কিছু কোম্পানির শেয়ারের দরপতনে সূচক কমেছে, অন্যদিকে কিছু ভালো কোম্পানির শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধি সেই পতনকে রোধ করেছে। এই কারণে দিন শেষে সূচকটি ইতিবাচক ধারায় ছিল।
ঢাকার বাজারে আজ লেনদেনের এক–পঞ্চমাংশ বা প্রায় ২০ শতাংশই ছিল খাদ্য খাতের দখলে। এ খাতের লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৫২ কোটি টাকা। যার প্রায় অর্ধেকই আবার একটি কোম্পানির, সেটি লাভেলো আইসক্রিম। রোববার ঢাকার বাজারে লেনদেনের শীর্ষে ছিল কোম্পানিটি। দিন শেষে ২৫ কোটি টাকার শেয়ারের হাতবদল হয়। মূলত লাভেলো আইসক্রিমের লেনদেনের ওপর ভিত্তি করেই এদিন খাদ্য খাত লেনদেনের শীর্ষে জায়গা করে নেয়। খাতভিত্তিক লেনদেনের দিক থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে ছিল ব্যাংক খাত। এই খাতের কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩৪ কোটি টাকা। ব্যাংক খাতকে এদিন লেনদেনের দ্বিতীয় অবস্থানে রাখার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল ব্র্যাক ব্যাংকের। ঢাকার বাজারে আজ রোববার ব্র্যাকের ব্যাংকের ১৫ কোটি টাকার শেয়ারের হাতবদল হয়। সেই হিসাবে ব্যাংক খাতের সম্মিলিত লেনদেনের প্রায় অর্ধেকই ছিল ব্যাংকটির একক লেনদেন।
বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে শীর্ষস্থানীয় এক ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহী প্রথম আলোকে বলেন, বাজারে এখন নতুন করে কোনো আশা দেখছেন না সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। এ কারণে প্রতিদিনই কোনো না কোনো বিনিয়োগকারী বাজার ছেড়ে যাচ্ছেন। বাজেটকে ঘিরে বিনিয়োগকারীদের যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, সেটি পূরণ না হওয়ায় হতাশা আরও বেড়েছে। যার প্রভাব বাজারে পড়ছে।