আড়াইহাজারে পারিবারিক কলহের জেরে দায়েরকৃত মামলা থেকে স্বামীর নাম বাদ দেওয়ার কথা বলে স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে জালাল নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ঘটনাটি উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের সখেরগাঁও গ্রামে ঘটে। তবে ধর্ষণের আগে প্রেম হয় বাদী ও এক বিবাদীর। সেই ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে ব্লাকমেইল করে চলে একাধিকবার ধর্ষণ।

এঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরআগে বুধবার রাতে ভিকটিম (৩৫) বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। 

মামলার আসামিরা হলেন- আড়াইহাজারের সাতগাঁও ইউনিয়নের সখের গাওঁ গ্রামের মৃত বিল্লাল হোসেনের ছেলে মো.

জালাল হোসেন (৪০), সেলিম (৪২) ও জামালের ছেলে মো. সোহেল (৩৫)। পুলিশ প্রধান আসামি জালাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে।

মামলার সূত্রে জানা যায়, আসামি জালাল বাদীর স্বামীর চাচাতো ভাই। ২০২৪ সালে পারিবারিক কলহের ঘটনায় আড়াইহাজার থানায় দায়েরকৃত মামলায় বাদীর স্বামীকে প্রধান আসামি করে ভয়ভীতি দেখায় আসামি জালাল।

এ সময় মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ফোনে কথা বলার প্রস্তাব দেওয়া হয়। ফোনে কথা বলতে বলতে তারা প্রেমে জড়িয়ে পড়েন।

ঘটনার এক পর্যায়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বাড়ি ফাঁকা পেয়ে বাদীকে ধর্ষণ করে জালাল। পরবর্তীতে আবারও মামলা খারিজের কথা বলে নরসিংদীর হোটেল রিল্যাক্সে নিয়ে যায় এবং পুনরায় ধর্ষণ করে এবং মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে। 

পরবর্তীতে তার কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ভিডিও বাকি আসামিদের সরবরাহ করে এবং তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করতে থাকে এবং বিবাদ নিষ্পত্তির জন্য ৩ লাখ টাকা দাবি করে।

এভাবে ব্ল্যাকমেইল করে পুনরায় বাদীকে ধর্ষণ করে আসামি। এক পর্যায়ে এ ঘটনায় কোনো মামলা না করার শর্তে স্ট্যাম্প পেপারে বাদীর স্বাক্ষর করিয়ে নেয় আসামিরা। পরবর্তীতে পুনরায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি প্রচার করতে থাকলে থানায় মামলা করেন তিনি।

আড়াইহাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এনায়েত হোসেন জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। প্রধান আসামি জালালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ গ র প ত র কর ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা

মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমাই দেশে প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম দেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেন। একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন তিনি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এন লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

‘বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন কমিটি’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।

আলোচনা সভায় লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ১৯৫৫-৬৫ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘বাইনারি বিভাজন’ পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশে সরকার। ‘বাইনারি’ মনস্তত্ত্বকে এখনো এই দেশে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এম এন লারমা ‘বাঙালি হেজিমনি’র বিরুদ্ধে আত্মপরিচয়ের বয়ান বাঁচিয়ে রাখতে তৎকালে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন।

জেএসএসের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নকালেই এসব বিষয় নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।

দীপায়ন খীসা বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কখনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। আমরাও এই দেশের অংশ। তাহলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের কেন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হলো না?’ তিনি বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরও অংশীদারত্ব আছে। কিন্তু অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তাদেরই ভুলে গেল এই সরকার।

সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, ‘বাঙালি হয়ে যাও’ কথাটার পেছনে বাঙালি মুসলিমদের জাত্যভিমানের ব্যাপারটি রয়েছে। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা।

অনুষ্ঠানটি শুরু হয় এম এন লারমাকে সম্মান জানিয়ে কবিতা পাঠের মাধ্যমে। কবিতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেই চাকমা ও লাল নিকিম বম। কবিতা আবৃত্তির পর এম এন লারমার জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা, জেএসএসের কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতিআগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন টিআইবির
  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • ডাকসুর ব্যালট পেপারে ২ ভোট নিয়ে যা বলছে নির্বাচন কমিশন
  • নরসিংদীতে ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি স্থগিত
  • দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে
  • নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা: দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে
  • গাজায় পাগলের মতো বোমা ফেলছে ইসরায়েল
  • ফতুল্লা পুলিশের সহায়তায় আপন ঠিকানায় মানসিক প্রতিবন্ধী নারী
  • দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা
  • ফতুল্লায় প্রতারণা করে ১৫ লাখ টাকার রড নিলো প্রতারক চক্র, কুমিল্লায় গ্রেপ্তার ৩