সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সালের ২৩-৩১ জানুয়ারি পাকিস্তানে হতে যাচ্ছে সাউথ এশিয়ান গেমস। লাহোর, ইসলামাবাদ ও ফয়সালাবাদে হবে দক্ষিণ এশিয়ার অলিম্পিক খ্যাত এ আসর। বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদদের জন্য আকাঙ্ক্ষার নাম এস এ গেমস। ২০১৯ সালে নেপালে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ আসরে ১৯টি স্বর্ণপদক জিতেছিলেন লাল-সবুজের ক্রীড়াবিদরা। 

১০ মাসের মতো বাকি গেমসের অথচ এখনও ঘুমে অনেক ফেডারেশন। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে অনেক ফেডারেশনে বইছে স্থবিরতা। কয়েকটি ফেডারেশন ধারাবাহিক প্রস্তুতি নিলেও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করতে পারেনি। এমন অবস্থায় এখনও কর্মপরিকল্পনা গুছিয়ে আনতে পারেনি বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনও। 

কয়টি ডিসিপ্লিনে কতজন অ্যাথলেট অংশ নিবে তা যেমন চূড়ান্ত হয়নি, তেমনি গেমসের প্রস্তুতি এবং অংশগ্রহণের বাজেটও আলোচনাধীন। অতীতের মতো এবারও গেমসের প্রস্তুতি ছয় মাসের মতো হবে বলে বৃহস্পতিবার সমকালের কাছে নিশ্চিত করেছেন বিওএর ট্রেনিং অ্যান্ড গেমস ডেভেলপমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব এ কে সরকার। 

নেপালে ১৯টি ডিসিপ্লিনে অংশ নিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার সংখ্যাটা বেড়ে ২৫ কিংবা ২৬ হতে পারে। পাকিস্তানে অনুষ্ঠেয় এস এ গেমস সামনে রেখে ইতোমধ্যে ফেডারেশনগুলোকে চিঠি দিয়েছে অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন। এরই ধারাবাহিকতায় ঈদের আগেই ফেডারেশনগুলোর সঙ্গে বসবেন বিওএ কর্তারা। 

আর এপ্রিলে নির্বাহী কমিটির সভায় চূড়ান্ত হবে বাংলাদেশ কয়টি ডিসিপ্লিনে অংশ নিবে। ‘গেমসের এখনও ১০ মাস আছে। আমরা সবাইকে অর্থ ভাগ করে দিয়ে দেওয়ার পর দেখলাম ওই টাকা দিয়ে ছয় মাস ট্রেনিং করা যাবে। বাকিটা তাদেরই করে নিতে হবে। আমি মনে করি এখন থেকেই ফেডারেশনগুলোর কর্মপরিকল্পনা শুরু করে দেওয়া উচিত। এটাই আমরা আশা করি। আমরা যদি ছয় মাসের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করি, সে হিসেবে মে মাস থেকে হয়তো ক্যাম্প শুরু করা যাবে’– বলেন এ কে সরকার। 

তবে বিওএর চাওয়া ফেডারেশনগুলো যেন নিজ উদ্যোগে প্রস্তুতি শুরু করে। এ প্রসঙ্গে এ কে সরকার বলেন, ‘সাফ গেমস যেহেতু একটা বড় আসর, এখানে সব ফেডারেশনই খেলতে চায়। আমাদের চেষ্টা থাকবে সম্ভাবনাময় বেশির ভাগ ফেডারেশনকে পাঠানো। কিন্তু এখানে আর্থিক বিষয়টিও জড়িত। আমরা মন্ত্রণালয়ে যে বাজেট পাঠাব, সেখানে অর্থ প্রাপ্তির বিষয়টাও থাকবে। সেই প্রাপ্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের প্রস্তুতির সময় কতদিনের হবে, তা নিশ্চিত করা যাবে। এখানে আমরা পদক পাই, সেখানে ফেডারেশনগুলোকে একটা দায়িত্ব নিতে হবে। বলতে পারেন নিজ উদ্যোগে অনুশীলন শুরু করতে পারে তারা। ফেডারেশনগুলো কেমন প্রস্তুতি নিচ্ছে, তা জানতে আমরা ইতোমধ্যে চিঠি দিয়েছি।’ 

দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে শুটিংয়ে অচলাবস্থা। কোনো খেলা নেই। এর মধ্যে যদি অ্যাডহক কমিটি না হয়, তাহলে শুটিংয়ের প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনে অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন ব্যয় বহন করবে বলে জানান এ কে সরকার, ‘আমরা ঈদের আগে ফেডারেশনগুলোর সঙ্গে বসব। কারাতে তো কমিটি হয়েছে। তাদের আমরা ডাকব। শুটিংয়ে সাধারণ সম্পাদক নেই। বাকি তো কমিটি সদস্যের থাকার কথা। যদি খুব বেশি সমস্যা হয় শুটিংয়ের, তাহলে অলিম্পিক তার প্রশিক্ষণ ব্যয় বহন করবে। এর বাইরে কোনো রাস্তা নেই। কারণ শুটিং তো আমাদের সম্ভাবনাময় ইভেন্ট।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অল ম প ক ফ ড র শনগ ল ছয় ম স সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও

রংপুরের গংগাচড়ায় ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ঘিরে সহিংসতার শিকার হিন্দু পরিবারের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। তবে ঘটনার তিন দিন পরেও এলাকায় ফেরেনি অনেক পরিবার। আতঙ্কে এখনো আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে অনেকে।

গত ২৭ জুলাই রাতে ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার আগে এলাকায় মাইকিং করে লোকজন জড়ো করা হয়।

পুলিশ, প্রশাসন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বলছেন, যারা হামলা করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকে ছিলেন ‘বহিরাগত’। পাশের নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে লোকজন এসে হামলা চালিয়ে চলে যায়। হামলার সময় ২২টি ঘরবাড়ি তছনছ ও লুটপাট করা হয়। 

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প বসানো হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে পুলিশ টহল। প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ঢেউটিন, কাঠ, চাল-ডাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছে এবং ঘরবাড়ি মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে। তবু আতঙ্কিত পরিবারগুলো। 

ক্ষতিগ্রস্তদের একজন অশ্বিনী চন্দ্র মোহান্ত বলেন, “সেদিনের ঘটনা ছিল এক ভয়াবহ। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ম অবমাননাকারী কিশোরকে থানা হেফাজতে দিয়েছি। কিন্তু তারপরও ঘরবাড়ি রক্ষা হয়নি। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি এবং কিছু মুরুব্বি আমাদেরকে অভয় দিয়েছিলেন, কিন্তু রক্ষা হয়নি।” 

তিনি আরো বলেন, “আমরা নিজেরাই অভিযুক্ত কিশোরকে থানায় সোপর্দ করেছি। তারপরও মিছিল নিয়ে এসে দুই দফায় আমাদের ২০ থেকে ২৫টি ঘরবাড়ি তছনছ করে দিয়ে লুটপাট করেছে তারা। এদের মধ্যে অধিকাংশ লোকেই অপরিচিত।” 

আরেক ভুক্তভোগী দেবেন্দ্র চন্দ্র বর্মন জানান, “প্রথমে অল্পসংখ্যক কম বয়সী কিছু ছেলে আসে। পরে হাজারো লোকজন এসে আমাদের বাড়িঘরে তাণ্ডব চালায়। অনেকেই এখনো আত্মীয়দের বাড়িতে। আমরা চরম আতঙ্কে আছি।”

রবীন্দ্র চন্দ্রের স্ত্রী রুহিলা রানী বলেন, “ছোট ছেলেটা যদি ভুল করে থাকে, আমরা তাকে থানায় দিয়েছি। কিন্তু তারপরও এমন ধ্বংসযজ্ঞ কেন? আমাদের গরু, সোনা-টাকা সব লুটে নিয়েছে। শুধু চাল-ডাল আর টিনে কি জীবন চলে?”

গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকুসহ একটি প্রতিনিধি দল। তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

গংগাচড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল এমরান বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে কিশোরটিকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয় এবং পরে আদালতের মাধ্যমে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তারপরও পুলিশ প্রশাসন সর্বাত্মক নিরাপত্তায় নিয়োজিত।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদ হাসান মৃধা বলেন, “অপরাধীদের ধরতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হচ্ছে সহায়তা। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে।” 

উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্যমতে, হামলায় ১৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাতে ২২টি পরিবার বসবাস করতেন। ঘর মেরামতের পর কিছু পরিবার ফিরলেও অভিযুক্ত কিশোর ও তার চাচার পরিবারের কেউ এখনো ফিরে আসেনি।

ঢাকা/আমিরুল/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের
  • মেসি বনাম ইয়ামাল: ফিনালিসিমার সময়-সূচি ঘোষণা
  • গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও