গত বছরের জুলাই অভ্যুত্থানের সময় তিন হত্যায় জড়িত অভিযোগে মো. হোসাইন (১৯) নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

র‍্যাব-১০–এর গণমাধ্যম শাখার সহকারী পুলিশ সুপার শামীম হোসেন সরদার আজ শুক্রবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, গত বছরের ১ জুলাই থেকে সারা দেশে কোটাবিরোধী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলন পরে গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়।

এর অংশ হিসেবে গত ১৭ জুলাই রাজধানী যাত্রাবাড়ীর বিভিন্ন এলাকায় ছাত্র-জনতার কোটা ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন শ্রেণির নেতা–কর্মী এবং অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র, রড, লাঠিসোঁটাসহ বিভিন্ন প্রকার অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আন্দোলনকারী নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার হামলা চালায়। তারা সাইদুল ইসলামসহ তিনজনকে কুপিয়ে রাস্তায় ফেলে রাখে। সাইদুলসহ তিনজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁরা পরে মারা যান। ওই ঘটনায় গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর সাইদুলের মা বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন।

পুলিশ কর্মকর্তা শামীম হোসেন বলেন, থানায় মামলা হওয়ার পর বিষয়টি জানতে পেরে আসামি হোসাইনসহ অন্য আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় র‍্যাব-১০ কেরানীগঞ্জ এলাকায় তাঁর অবস্থান নিশ্চিত হয় এবং পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। হোসাইন দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর টানপাড়ায় থাকতেন। তাঁকে যাত্রাবাড়ী থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী

রাজধানীর আদাবরে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে রিপন সরদার (৪২) খুনের ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিপন হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমন ওরফে ভাইগ্না ইমন ওরফে দাঁতভাঙা ইমনকে তাঁর দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সেনাবাহিনী জানায়, গতকাল ভোরের দিকে রাজধানীর আদাবর থানার বালুর মাঠ এলাকায় বাসায় ঢুকে রিপন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কিশোর গ্যাং এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ। পরে আহত অবস্থায় রিপনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তিনি মারা যান।

৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গতকাল সকালে বালুমাঠ এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় এলেক্স সবুজ, মনির ও ইমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নির্ণয় করে অভিযান চালিয়ে ইমন ও তাঁর দুই সহযোগীকে দুটি সামুরাইসহ গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান চালানোর কিছুক্ষণ আগে সবুজ ও মনির সেই জায়গা থেকে পালিয়ে যান। তাই তাঁদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। বাকিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে আদাবরের ১০ নম্বরের বালুর মাঠ এলাকায় ‘বেলচা মনির’ ও ‘রাজু গ্রুপে’র মধ্যে এ মারামারি হয়। ‘বেলচা মনিরের’ লোকজন ‘রাজু গ্রুপের’ রিপনকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের মৃত্যু হয়।

আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটির বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।

আরও পড়ুনআদাবরে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারামারিতে নিহত ১১৮ ঘণ্টা আগে

তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের ছেলে ইমন সরদার গতকাল দাবি করেন, রিপন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন না। রিপন পেশায় চা–দোকানি। বেলচা মনিরের লোকজনের সঙ্গে দুই দিন আগে তাঁর বাবার কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাঁর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর মা আরজু বেগমও আহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়।

পুলিশের ভাষ্য, নিহত রিপন সরদার মাদক কারবারি রাজুর চাচাতো ভাই। ‘রাজু গ্রুপ’ ও ‘বেলচা মনিরের’ নেতৃত্বে আদাবরের ১০ ও ১৭ নম্বর এলাকায় মাদক ব্যবসা হয়। ওই বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। নিহত রিপনের বিরুদ্ধে ভোলায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী