আবরার হত্যা: আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় কাল
Published: 15th, March 2025 GMT
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন), জেল আপিল ও আপিলের ওপর আগামীকাল রোববার রায় ঘোষণা হতে পারে।
বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের রোববারের কার্যতালিকায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন), আপিল ও জেল আপিল রায়ের জন্য রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, রাষ্ট্র বনাম মেহেদী হাসান রাসেল এবং অন্যান্য শিরোনামে রায়ের জন্য ডেথ রেফারেন্সটি কার্যতালিকায় রয়েছে। ডেথ রেফারেন্সের নিচে লেখা আংশিক শ্রুত; এর সঙ্গে আপিল ও জেল আপিলগুলো রয়েছে।
ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন), জেল আপিল ও আপিলের ওপর শুনানি নিয়ে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন। এখন রায়ের জন্য আদালতের রোববারের কার্যতালিকায় এলো।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আবরারের বাবা চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে বুয়েটের ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। অভিযোগপত্রে বলা হয়, ‘আসামিরা পরস্পর যোগসাজশ করে ছাত্রশিবিরের কর্মী সন্দেহে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে আবরারকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছেন।’ অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
ওই মামলায় ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর রায় দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১। রায়ে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য বিচারিক আদালতের রায়সহ নথিপত্র ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসে পৌঁছায়, যেটি ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নথিভুক্ত হয়।
ফৌজদারি কোনো মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে কারও মৃত্যুদণ্ড হলে, তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যেটি ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করতে পারেন। সাধারণত ডেথ রেফারেন্স ও এসব আপিলের ওপর একসঙ্গে হাইকোর্টে শুনানি হয়ে থাকে।
ওই মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর কারাগারে থাকা দণ্ডিত ব্যক্তিরা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জেল আপিল ও আপিল করেন। পৃথক জেল আপিল গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানির জন্য ২০২২ সালের ২৬ জানুয়ারি হাইকোর্টে ওঠে। সেদিন আদালত তা শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। পাশাপাশি নিয়মিত আপিল করেন কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা। আসামিদের এই ডেথ রেফারেন্স, জেল আপিল ও আপিলের ওপর হাইকোর্টে একসঙ্গে শুনানি হয়।
গত বছরের ২৮ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে শুনানি শুরু করে। এরপর পেপারবুক থেকে উপস্থাপনের মাধ্যমে গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে পুনরায় শুনানি হয়। সেদিন থেকে মধ্যে এক দিন ছাড়া প্রতি কার্যদিবসে শুনানি হয়। সর্বশেষ গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শুনানি নিয়ে আদালত মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আবর র ফ হ দ র য় র জন য আবর র
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষার্থী সাজিদ স্মরণে ইবিতে ব্যতিক্রমী আয়োজন
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রয়াত শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহ স্মরণে স্মৃতিচারণ ও নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণে ক্যাম্পেইন করা হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝাল চত্বরে দিনব্যাপী এ কর্মসূচির আয়োজন করে ‘জাস্টিস ফর শহীদ সাজিদ আব্দুল্লাহ’ এর ব্যানারে একদল শিক্ষার্থী।
এতে সাজিদের সহপাঠী, বন্ধুসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হয়ে তার সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো স্মরণ করেন এবং ক্যাম্পাস নিরাপত্তা জোরদারে লিখিত আকারে বিভিন্ন প্রস্তাবনা উত্থাপন করেন।
আরো পড়ুন:
জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
৭ উপাচার্যের অংশগ্রহণে গোবিপ্রবিতে শিক্ষা সমাপনী
কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষার্থী তানভীর মণ্ডল স্মৃতিচারণ করে লেখেন, “ইনকিলাব সন্ধ্যা এবং এ বছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে বাংলা মঞ্চে একসঙ্গে কাওয়ালি করেছিলাম। পুকুর পাড়ে, বিভিন্ন চায়ের দোকানে একসঙ্গে গানের আড্ডা দিয়েছি অনেক।”
আরেক শিক্ষার্থী লেখেন, “২০২১ সালে সর্বপ্রথম একসঙ্গে এ ক্যাম্পাসে এসেছিলাম। আজ সাজিদ ছাড়া একা একা ক্যাম্পাসে ঘোরাঘুরি করতে কষ্ট হচ্ছে।”
এ সময় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ক্যাম্পাস নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা উত্থাপন করেন।
এর মধ্যে রয়েছে- ক্যাম্পাসকে বহিরাগতমুক্ত রাখতে হবে ও ২৪ ঘণ্টা শিক্ষার্থীরা যেন নিরাপদে চলাচল করতে পারেন সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে; প্রশাসনকে আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে; সব হল প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকদের হলে অবস্থান বাধ্যতামূলক করতে হবে; ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত পরিমাণে ডাস্টবিন স্থাপন ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হ্যালোজেন বা হাই-পাওয়ার লাইট এবং সিসিটিভি বসাতে হবে।
তাদের অন্য প্রস্তাবনাগুলো হলো- দ্রুত সময়ের মধ্যে ইকসুর (ইবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ) নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে; শিক্ষার্থীদের জন্য একটি কার্যকর অভিযোগ সেল গঠন করতে হবে এবং যেখানে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযোগের প্রতিকার নিশ্চিত করা হবে; প্রতিটি হলের প্রতিটি ব্লকে সিসি ক্যামেরা স্থাপন এবং শক্তিশালী ওয়াই-ফাই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা এই প্রস্তাবনাগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানানোর পাশাপাশি প্রয়াত বন্ধু সাজিদের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানান।
১৭ জুলাই বিকেল সাড়ে ৬টায় শাহ আজিজুর রহমান হল পুকুর থেকে আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর থেকে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটনের দাবিতে উত্তাল ক্যাম্পাস।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী