দ্বিতীয় বর্ষে উঠলেও গণরুমেই দিন কাটাচ্ছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সুলতানা রাজিয়া হলের শিক্ষার্থীরা। কক্ষ বরাদ্দের দাবিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে হলের সামনের সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। রাত ৯টায়ও চলছিল অবরোধ।

অবরোধ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ‘গণরুম নাকি জেল, প্রশাসনের নাকে তেল’, ‘হলে হলে বৈষম্য, চলবে না চলবে না’, ‘সিঙ্গেল বেডে দুইজন করে, থাকব না থাকব না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। শিক্ষার্থীদের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব গণরুম থেকে সরিয়ে তাঁদের হলের নির্দিষ্ট কক্ষে আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। দীর্ঘ দেড় বছর ধরে এক বেডে (শয্যা) দুজন করে থাকতে হচ্ছে। প্রশাসন যদি কক্ষ বরাদ্দে দেরি করে, অন্তত তখন পর্যন্ত এক বেডে একজন থাকার সুযোগ করে দিতে হবে।

সুলতানা রাজিয়া হলের দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা দ্বিতীয় বর্ষের ১২৬ জন শিক্ষার্থী চারটি গণরুমে থাকি। সিঙ্গেল বেডেও দুজন করে গাদাগাদি করে থাকতে হয়। ১২৬ জনের জন্য মাত্র চারটি বাথরুম। দেড় বছর ধরে এই অমানবিক অবস্থায় আছি। আর পারছি না।’ আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘হল প্রাধ্যক্ষের কাছে গিয়েছিলাম, তিনি ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টার কাছে পাঠালেন। উপদেষ্টা আবার জানালেন, তারও কিছু করার নেই। তাহলে আমরা যাব কোথায়? নিজেদের দাবি আদায় করতে আমরা এখন আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

এ বিষয়ে জানার জন্য সুলতানা রাজিয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো.

রুহুল আমিনের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. শহীদুল হক বলেন, ‘সুলতানা রাজিয়া হলের শিক্ষার্থীরা গণরুম সমস্যার বিষয়ে আমার সাথে আলোচনা করেছিল। আমি তাদের তখন বুঝিয়েছিলাম যে রাতারাতি এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। হলে খালি আসন না থাকলে তো তাঁদের আসন বরাদ্দ দেওয়া যাচ্ছে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সর্বাত্মক চেষ্টা করছে যাতে যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষার্থীদের এই সমস্যার সমাধান করা যায়।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বর দ দ অবর ধ গণর ম

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমার তো একেবারেই গন্ডারের চামড়া’

ভারতীয় বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীনন্দা শঙ্কর। সৃজিত মুখার্জির ‘এক যে ছিল রাজা’, সুমন ঘোষের ‘বসুপরিবার’-এর মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন এই তারকা। বলা যায়, টলিউডের প্রথম সারির সব নির্মাতার সঙ্গেই কাজ করেছেন এই নৃত্যশিল্পী। 

গত কয়েক বছর ধরে কলকাতা ছেড়ে মুম্বাইয়ে বসবাস করছেন শ্রীনন্দা। সেখানে সংসার, কাজ নিয়ে সময় কাটছে তার। তবে অভিনয়ে নেই। অভিনয় থেকে দূরে থাকার কারণ কী? ফের কী অভিনয়ে ফিরবেন না শ্রীনন্দা?  

ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে আলাপকালে এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন শ্রীনন্দা। এ অভিনেত্রী বলেন, “টলিউডে যাদের সঙ্গেই কাজ করেছি, তাদের সঙ্গে এখনো আমার খুব ভালো সম্পর্ক। ভীষণ ভালো অভিজ্ঞতাও বলা চলে। মুশকিল হলো, বাংলা সিনেমায় তেমন বাজেট থাকে না। সত্যিই যদি খুব ভালো সিনেমা হয় বা এমন কোনো পরিচালক আমাকে অফার দেন যেখানে কোনো ভাবেই ‘না’ করব না। আমি নিশ্চয়ই আবার অভিনয়ে ফিরব।”

আরো পড়ুন:

কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি অভিনেত্রী

পরিচালকের আপত্তিকর মন্তব্য নিয়ে মুখ খুললেন শোলাঙ্কি

কিছু কিছু লোকের সঙ্গে কাজ করতে গিয়েও মাঝপথে থেমে গিয়েছেন শ্রীনন্দা। কারণ, তাদের সঙ্গে মানসিকভাবে মেলেনি। তার ভাষায়—“মুম্বাই, কলকাতা বা সাউথ ইন্ডাস্ট্রি যেখানেই হোক না কেন, আমি ভালো মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চাই। কেউ এমন চরিত্রে সুযোগ দেন, যেখানে প্রয়োজনে টাকাটা ভুলে গিয়ে শুধু পরিচালকের নাম দেখেই কাজটা করব।”

কিছুটা ইঙ্গিপূর্ণভাবে শ্রীনন্দা বলেন, “কাজের পাশাপাশি আমার সংসারও রয়েছে। কর্মক্ষেত্রে এমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবশ্যই পেতে হবে, যার জন্য সংসারটা ইগনোর করার কথা ভাবব। অর্থাৎ মনে হবে সংসার ফেলে এই সিনেমাটা আমাকে করতেই হবে। এই বয়েসে একটু কফি খেতে যাবেন? কাজ দেবেন? এগুলো করতে পারব না। সবাই তো চেনেই আমাকে। কাজ দিতে হলে দেবেন।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব শ্রীনন্দা। অনেকে ভেবেছিলেন, এ মাধ্যমে কাজ করে টাকা আয় করে থাকেন। তাদের উদ্দেশে শ্রীনন্দা বলেন, “অনেকেরই ভ্রান্ত ধারণা এটাও আমার পেশা। এখান থেকে অনেক টাকা উপার্জন করা যায়। আমি নিজেও আগে বিষয়টা জানতাম না। পোস্ট করতে করতে বুঝেছি। আমি এখন মুম্বাইয়ে মায়ের সঙ্গে পুরোদমে নাচের স্কুল চালাচ্ছি। এখন মোট ছয়টা ব্রাঞ্চ এবং ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও নেহাতই কম নয়। সব মিলিয়ে ভালো আছি।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রলের শিকার হন শ্রীনন্দা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার তো একেবারেই গন্ডারের চামড়া হয়ে গিয়েছে। কয়েকদিন আগে আমাকে একজন বলেছিলেন, ‘রিল মামনি’। আমি আর মা এটা শুনে হেসে গড়িয়ে পড়েছি। মাঝেমধ্যে এসব বেশ মজাও লাগে। তবে যে পরিমাণ ভালোবাসা পাচ্ছি, সেটা খুব মন থেকেই ভক্তরা দিচ্ছেন বলে আমার বিশ্বাস। আমি মনে করি, এটা আমার জীবনে আশীর্বাদ।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ