বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সুলতানা রাজিয়া হলের চারটি গণরুমের ছাত্রীরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করছেন বলে অভিযোগ এনে দ্রুত সিট সংকট সমাধানের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। 

বুধবার (১৮ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নামেন হলটির দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা।

ছাত্রীদের দাবি, তাদের দ্রুত গণরুম থেকে সরিয়ে নিয়মিত কক্ষে আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। দীর্ঘ দেড় বছর ধরে তারা অস্বাস্থ্যকর ও দুর্বিষহ পরিবেশে বসবাস করছেন। বর্তমানে তারা একজনের বেডে দুজন করে থাকছেন, আর মাত্র চারটি বাথরুম ব্যবহার করছেন ১২৬ জন শিক্ষার্থী। সেই হিসেবে ৩২ জনের জন্য মাত্র একটি বাথরুম সুবিধা রয়েছে।

আরো পড়ুন:

দেশের ১১৬তম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘গ্রামীণ ইউনিভার্সিটি’

এবার এসএসসি-সমমানে পরীক্ষার্থী ১৯ লাখ ২৮ হাজার, কমেছে প্রায় ১ লাখ

হলে আসন দিতে সময় লাগলে অন্তত আপাতত যেন একজন শিক্ষার্থীকে এক বেডে থাকার ব্যবস্থা করা হয়, প্রশাসনকে এমন প্রস্তব দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, “চারটি গণরুমে ১২৬ জন থাকছেন। এক বেডে দুজন করে ঘুমাচ্ছেন। মাত্র চারটি বাথরুম ব্যবহার করতে হচ্ছে সবাইকে। এত দিন ধৈর্য ধরেছেন কিন্তু এখন আর সম্ভব না। তারা সিট চান।

সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নামেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুলতানা রাজিয়া হলের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা।

আরেকজন বলেন, “কয়েক দিন আগে হল প্রভোস্টের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাদের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টার কাছে পাঠান। সেখানে গিয়েও কোনো সমাধান পাইনি। সবাই শুধু অসহায়ত্ব প্রকাশ করছে, কিন্তু আমাদের সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছি।”

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা ‘গণরুম নাকি জেল, প্রশাসনের নাকে তেল’ , ‘হলে হলে বৈষম্য, চলবে না চলবে না’, ‘সিঙ্গেল বেডে দুইজন করে, থাকব না থাকব না’-সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন।

এ বিষয়ে বাকৃবির ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক মো.

শহীদুল হক বলেন, “সুলতানা রাজিয়া হলের শিক্ষার্থীরা গণরুম সমস্যার বিষয়ে আমার সাথে আলোচনা করেছিল। আমি তাদের তখন বুঝিয়েছিলাম যে, রাতারাতি এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। হলে খালি আসন না থাকলে তো তাদের বরাদ্দ দেওয়া যাচ্ছে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সর্বাত্মক চেষ্টা করছে যাতে যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষার্থীদের এই সমস্যা সমাধান করা যায়।”

ঢাকা/ লিখন/রাসেল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সমস য গণর ম

এছাড়াও পড়ুন:

সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন

প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।

জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।

অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।

কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।

সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আ.লীগ নেতা–কর্মীদের ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে গ্রেপ্তার ২২, সেনা হেফাজতে মেজর
  • দেশের চারজনের একজন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার
  • ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে
  • ডেঙ্গুতে দুজনের, করোনাভাইরাসে একজনের মৃত্যু
  • যৌথ বিবৃতি প্রত্যাখান করে বাহা’কে বয়কট ঘোষণা শিক্ষার্থীদের
  • জাওয়াইদেহ বেদুইনদের মৌখিক সাহিত্য
  • রাবিতে আ.লীগ ট্যাগ দিয়ে চিকিৎসা কর্মীকে বিবস্ত্র করে মারধর
  • ইরানের সঙ্গে সংঘাত: ইসরায়েলকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা দিতে সৌদি সরকারকে অনুরোধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র
  • সিরিজের শেষ ম্যাচে নেই স্টোকস, দায়িত্বে পোপ
  • সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন