কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে একটি মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত মাওলানা গোলাম সাদিকের বিচারের দাবিতে রোববার সকালে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত ১৮ মার্চ নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে কোচিং ক্লাসে দেরিতে আসায় একটি নির্জন কক্ষে নিয়ে যৌন নিপীড়ন করেন সহ-সুপার গোলাম সাদিক। ১৯ মার্চ মাদ্রাসার সুপার মাওলানা জামাল উদ্দিনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয় ওই ছাত্রী। অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযুক্ত সহ-সুপারকে ডেকে যৌন নিপীড়নের ঘটনাটি জানতে চান সুপার। সে সময় তিনি বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে সুপারকে উল্টো হুমকি দিয়ে অফিস কক্ষ থেকে বের হয়ে যান। পরে একটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে অফিস কক্ষে এসে প্রভাব খাটিয়ে মাদ্রাসার সুপার জামাল উদ্দিনকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে সহ-সুপার গোলাম সাদিকের হাতে একাধিক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনা বেরিয়ে আসে। শুরু হয় প্রতিবাদ। 

অভিযুক্ত সহ-সুপারের বিচার ও পদত্যাগী সুপার জামাল উদ্দিনের পুনর্বহালের দাবিতে রোববার সকালে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। এ সময় একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, ক্লাসে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে গোলাম সাদিক তাদের শরীরে হাত দিত। বাধা দিলে তিনি অন্য কারণ দেখিয়ে বেত্রাঘাত করতেন।

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে সহ-সুপার মাওলানা গোলাম সাদিকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিয়ে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

মাদ্রাসার সুপার মাওলানা জামাল উদ্দিন বলেন, ‘নবম শ্রেণির এক ছাত্রী সহ-সুপার গোলাম সাদিকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেছে। বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্তের ব্যবস্থা করলে তিনি একটি রাজনৈতিক দলের প্রভাব খাটিয়ে আমাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছেন। যদি আমি পদত্যাগ না করি, তারা আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। বাধ্য হয়েই গত ২২ মার্চ পদত্যাগ করি।’

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামাল হোসেন জানান, এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। তবুও খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সহ স প র পদত য গ য গ কর

এছাড়াও পড়ুন:

‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘হয় মোদের চাকসু দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’, ‘চাকসু মোদের অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’—এমন স্লোগান দেন। 

আরো পড়ুন:

আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ

জবির প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থি ‘ক্যাডার’ শিক্ষকরা যেখানে আছেন

আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, “জুলাই মাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের জানা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীও সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সবার আগে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ ডাকসু, রাকসু, জাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এরপর আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। “যদি তা না হয়, তাহলে আমরা দুর্বার ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব,” বলেন তিনি।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এতদিন রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, এখন আর রোডম্যাপ নয়—তফসিল চাই।”

তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সক্রিয় ছাত্র সংসদ। তাই আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন চাই।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।” 

চাকসু গঠনের ধারণা মূলত এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর আদলে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ মে। এই নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি।

২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসুর মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছেন। 

ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দর নির্বাচনী আসনকে দুই ভাগে বিভক্তি করার প্রতিবাদে মানববন্ধন 
  • অনশনের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক
  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • সোনারগাঁয়ে মাদ্রাসায় কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
  • ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন, হুশিয়ারী
  • ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’