খ্যাতিমান ডিজাইনার ও ফ্যাশন হাউস বিবিয়ানার স্বত্বাধিকারী লিপি খন্দকার। দেশের ফ্যাশন ইন্ড্রাস্ট্রিকে মৌলিকতা ও নিজস্বতার পথে এগিয়ে নিয়েছেন অনেক দূর। নিজস্ব সাজ-পোশাকেও রয়েছে মৌলিক নান্দনিকতার প্রকাশ। পোশাক আর সাজ অনুসঙ্গের মধ্যে গয়নার প্রতি বিশেষ ভালোবাসা রয়েছে লিপি খন্দকারের। বিশেষ করে মালা খুব পছন্দ করেন এই ডিজাইনার। আর বেশিরভাগ সময় বেছে নেন এক রঙের পোশাক। দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণ থেকে লিপি খন্দকার এবারের ঈদ ফ্যাশন আর বিগত ঈদ ফ্যাশনের মধ্যে তুলনামূলক পার্থক্যের কথা রাইজিংবিডিকে জানিয়েছেন। একইসঙ্গে ঈদের দিন নিজে কি পরবেন তাও জানিয়েছেন তিনি। রাইজিংবিডির পাঠকদের জন্য দিয়েছেন ফ্যাশন টিপস।

লিপি খন্দকারের তিন লুক

লিপি খন্দকার বলেন, ‘‘গত তিন চার বছর ধরে একেবারে ‘স্পেসিফিক ফ্যাশন ট্রেন্ড’ ধরে ঈদ করছে না। দেখা যেতো যে, একটা, দুইটা ড্রেস খুব পপুলার, সেই ড্রেসটাই সবাই পরছে এখন ওই জায়গাটা একেবারে ভেঙে গেছে। এখন ওই চিন্তাভাবনা মানুষের মধ্যে এখন নেই। এটা খুবই ইতিবাচক। আমি মনে করি, প্রত্যেকে নিজস্বতা বজায় রেখে যে পোশাকটা পরবে সেটাই আসলে ফ্যাশন। আমার কাছে মনে হয় যে, এখন মানুষ সিপ্লিসিটিকে প্রাধান্য দিচ্ছে। মানুষ জমকালো পোশাকও কিনছে কিন্তু ওইটা হয়তো স্পেশালি ঈদের পার্টির জন্য কিনছে। কিন্তু নরমালি দেখা যাচ্ছে যে, মানুষ একটু প্যাটার্ন বেইজ, একটু ভালো ম্যাটেরিয়াল, ভালো কাটের প্রাধান্য দিচ্ছে। পাশাপাশ কালারও। এবার ঈদটা সামারে পড়ছে। মানুষ একটু আর্দি টোনটা পছন্দ করছে। অফ হোয়াইট, লাইট ব্রাউন, লাইট ব্লু; এই ধরনের কালার পছন্দ করছে। আমাদের ক্লায়েন্টেদের কাছে এই রেসপন্স পেয়েছি।’’

লিপি খন্দকার আরও বলেন, ‘‘এবার ঈদে লম্বা ছুটি থাকছে। লম্বা ছুটিতে অনেক জায়গায় ঘোরাফেরা করা যায়। অনেক রকম আনুষ্ঠান থাকে। অনুষ্ঠান বা পার্টিতে যোগ দেওয়ার জন্য মানুষ একাধিক পোশাক কেনে। সেক্ষেত্রে একটু ফিউশন প্যাটার্নের পোশাকগুলো বেছে নিচ্ছে। কেউ হয়তো একটু আউটডোরে যাবে, রিসোর্টে যাবে, কেউ দেশের বাইরে যাবে আবার অনেকে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাবে। দেখা গেছে যে তারা একটু আরামদায়ক পোশাকগুলো কিনেছে।  মোট কথা এবার ভালো রেসপন্স হচ্ছে আরামদায়ক কাপড় আর প্যাটার্ন বেইজ পোশাক। স্পেশাল পার্টির জন্য বা বড় কোনো গ্যাদারিংয়ে যোগ দেওয়ার জন্য ।’’

ঈদের দিন আপনি কেমন পোশাক পরবেন? এই প্রশ্নের জবাবে লিপি খন্দকার বলেন, ‘‘আমি সারাজীবন ঈদের সময় খুব সিম্পল কাপড় পরতে পছন্দ করি। ছোটবেলা থেকে এই পর্যন্ত আমি অলওয়েজ একটা খুব সুন্দর প্যাটার্নের একটা প্লেইন ড্রেস পরবো। সাথে সুন্দর গয়না পরবো। গয়না আমার কাছে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। গলায় মালা, হাতে চুড়ি পরবো। কানে কোনো সময় গয়না পরি আবার কোনো সময় পরি না। ঈদের সময় আমার স্পেশাল গয়না থাকতেই হবে। স্যালোয়ার কামিজ বানিয়েছি একটা প্লেইন ব্লু কালারের। আর এর সঙ্গে রয়েছে একটা দোপাট্টা। এইটা আমি সারাদিনের জন্য পরবো।’’

একরঙা পোশাক এতবেশি পছন্দের কারণও জানালেন লিপি খন্দকার। তিনি বললেন, অনেক ব্যস্ত জীবনতো। আর নিজে যখন কোথাও বেড়াতে যাবো, তখন নিজের পোশাক নিয়ে ভাবতে যে সময়টা নষ্ট হয়, আমার কাছে মনে হয় যে, একটা সলিড কালারের পোশাক পরলে তেমন কিছু ভাবতে হয় না। সলিড কালারের সঙ্গে ব্যাগ, জুতা ম্যাচিং করতে সুবিধা হয়। আর গয়নাটা সলিড রংয়ের পোশাকের সঙ্গে অনেক বেশি ফুটে ওঠে। এভাবেই পরতে পরতে অভ্যাস হয়ে গেছে। এর বাইরে গেলে মনে হয় যে আমি ক্যারি করতে পারছি না। 

রাইজিংবিডির পাঠকদের জন্য লিপি খন্দকারের পরামর্শ— যে পোশাকই বেছে নেন না কেন প্রথমত বুঝতে হবে আপনি কমফরটেবল ফিল করছেন কিনা। কমফরটেবল ফিল না করলে সেই পোশাকে আপনাকে আত্মবিশ্বাসী লাগবে না। ভালোও লাগবে না। অনেকে যেটা করে একজন নায়িকার পোশাক দেখে হুবহু একই রকম পোশাক কিনে ফেলে। এরপর দেখা যাচ্ছে , সে ওই পোশাকটি ক্যারি করতে পারছে না। যে পোশাকে নিজেকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে প্রেজেন্ট করতে পারবেন, অস্বস্তি বোধ হবে না, পোশাকটি ক্যারি করতে পারবেন; এমন পোশাক পরলে ভালো লাগবে। 

এই ডিজাইনার আরও জানান, পোশাক কেনার আগে আয়নায় দেখে পোশাক নির্বাচন করা উচিত।

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইসরায়েলের হামলা

রবিবার বিকেল থেকে ইরানজুড়ে নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

রবিবার রাতে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইদ খাতিবজাদেহ ইসরায়েলি হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি জানান, রবিবার রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।

এক্স-পোস্টে সাইদ বলেছেন, “ইসরায়েলের অপরাধী শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবনে ইচ্ছাকৃত এবং নির্মম হামলা চালিয়েছে।”

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত

ইসরায়েলে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান, তেল আবিব ও হাইফাতে সরাসরি আঘাত

উপ-মন্ত্রী আরো বলেন, “এই হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন, আমার বেশ কয়েকজন সহকর্মীও আহত হয়েছেন, যাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”

সাইদ বলেন, “এটি আরো একটি স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর চলমান ও নিয়মতান্ত্রিক আগ্রাসন অভিযানের অংশ।”

এর আগে শনিবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তেহরানের অস্ত্র উৎপাদন ক্ষমতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে ইরানের আইআরজিসি ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রবিবার নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে।

বিবৃতিতে  বলা হয়, এই হামলায় ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি), গার্ডস কুদস ফোর্স এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরো জানিয়েছে, ইরানজুড়ে অসংখ্য অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে। 

ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই হামলায় আইআরজিসিরি গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার সহকারী হাসান মোহাকিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া মোহসেন বাঘারি নামে আইআরজিসির আরো একজন জেনারেল নিহত হয়েছেন। এর প্রতিশোধ নিতে রবিবার রাতে ইসরায়েলে ৫০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও শতাধিক ড্রোন ছুড়েছে ইরান।

ইসরায়েলের ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিসের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, উত্তর ইসরায়েলে দুটি এবং হাইফায় একটি আবাসিক ভবনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানার খবর পেয়েছে তারা।

ইসরায়েলি জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা জানিয়েছে, হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সাতজন আহত হয়েছেন। এছাড়া কিরিয়াত গাটের কাছে দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহরে একজন আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির ইরানের ওপর আক্রমণ আরো তীব্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একটি বিবৃতি জারি করে ইসরায়েরি সেনাপ্রধান বলেছেন, “আমরা আমাদের অভিযান তীব্রতর করে যাব এবং এটি করে, আগামী বছরগুলোতে আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করব। আমরা জানতাম এর একটি মূল্য দিতে হবে এবং এটিই বোঝায় যে, আমরা কেন এখনই পদক্ষেপ নিয়েছি, তা অনেক দেরি হওয়ার আগেই।”

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২২৪ জন নিহত এবং ৯০০ জন আহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ৩৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ