ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলে জ্বলছে দক্ষিণ কোরিয়া। আগুনে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ৮৮ হাজার ৫০০ একর এলাকা পুড়ে গেছে। এটা যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের আয়তনের প্রায় অর্ধেক। দাবানলে এখন পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এলাকা ছেড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।

দক্ষিণ কোরিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানবসৃষ্ট কোনো দুর্ঘটনা থেকে এই দাবানলের সূত্রপাত হয়েছে। তবে বিস্তর এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। সেগুলো হলো ঝোড়ো বাতাস ও শুষ্ক আবহাওয়া। এ ছাড়া দেশটির উত্তর গিয়েওংসাং প্রদেশে পাইনগাছের ঘন জঙ্গল আগুন ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়তে সহায়তা করেছে।

গত সপ্তাহজুড়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় যে দ্রুততা ও তীব্রতার সঙ্গে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে বড় ভূমিকা রেখেছে পাইনগাছের চিরহরিৎ বৈশিষ্ট্য।

দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট সায়েন্সের বিশেষজ্ঞ লি বিয়ুং-ডো বলেন, পাইনগাছে রেসিন নামে এক ধরনের উপাদান থাকে। রেসিন জ্বালানি তেলের মতো কাজ করে। এটি আগুনকে আরও তীব্র করে তোলে। এর কারণে দাবানল আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, শক্তিশালী রূপ নেয় এবং দীর্ঘ সময় ধরে জ্বলতে থাকে।

দাবানল সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে আনডং শহরে। সেখানে পাইনের জঙ্গল রয়েছে। জঙ্গলগুলো স্থানীয় বন্য প্রাণীর জন্য আশ্রয় হিসেবে কাজ করে, সেগুলোর খাবার জোগায়। কখনো কখনো বাতাসের গতি কমাতেও সহায়তা করে এই জঙ্গল। তবে দাবানলের সময় সেগুলো সমস্যা হয়েছে ওঠে বলে জানান লি বিয়ুং–ডো।

দক্ষিণ কোরিয়ার উইসেওং এলাকায় আগুনে পুড়ে যাওয়া বাড়ির পাশি দাঁড়িয়ে আছেন ৭২ বছর বয়সী কুন ইয়েওং–নাম। এই বাড়িতে ৫২ বছর ধরে বসবাস করেছেন তিনি.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চ্যাটজিপিটি ৫ প্রকাশের আগেই এল গ্রোক ৪, মাসিক খরচ ৩০০ ডলার

চ্যাটজিপিটি ৫ প্রকাশের আগেই নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মডেল উন্মোচন করল ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান এক্সএআই। বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ‘গ্রোক ৪’ নামের এই নতুন চ্যাটবটটি এক সরাসরি সম্প্রচারে (লাইভস্ট্রিম) উন্মোচন করা হয়। একই সঙ্গে চালু হয়েছে এর উচ্চক্ষমতার সংস্করণ ‘গ্রোক ৪ হেভি’ এবং নতুন সাবস্ক্রিপশন প্ল্যান ‘সুপারগ্রোক হেভি’।

প্রতিষ্ঠানটির দাবি, গ্রোক ৪ এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী এআই মডেল। এক্সএআইয়ের মতে, নতুন এই মডেল একাডেমিক জ্ঞান ও বিশ্লেষণী দক্ষতায় এতটাই উন্নত যে, এটি পিএইচডি পর্যায়ের গবেষকের চেয়েও ভালো পারফরম্যান্স দিতে পারে। যদিও মডেলটি এখনো নতুন কোনো প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেনি, ইলন মাস্কের ভাষ্য অনুযায়ী ভবিষ্যতে সেটিও সম্ভব। গ্রোক ৪ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস যন্ত্রের জন্য গ্রোক অ্যাপে এটি ব্যবহার করা যাচ্ছে। ব্যবহারকারীরা এখনই এটি ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন।

এক্সএআই জানিয়েছে, ‘হিউম্যানিটি লাস্ট এক্সাম’ নামের এক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে গ্রোক ৪ উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে। কোনো ধরনের সহায়ক টুল ছাড়াই এই পরীক্ষায় মডেলটি ২৫ দশমিক ৪ শতাংশ নম্বর পায়। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, এতে গুগলের জেমিনি ২ দশমিক ৫ প্রো এবং ওপেনএআইয়ের ও থ্রি মডেলকেও ছাড়িয়ে গেছে গ্রোক ৪। যখন টুল ব্যবহারের সুযোগ রাখা হয়, তখন সেই পরীক্ষায় গ্রোক ৪ পায় ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ স্কোর, যা গুগলের শীর্ষস্থানীয় মডেলের চেয়েও বেশি।

গ্রোক ৪-এর পাশাপাশি চালু হয়েছে ‘গ্রোক ৪ হেভি’ নামের একটি উন্নত সংস্করণ। এ জন্য চালু করা হয়েছে ‘সুপারগ্রোক হেভি’ নামের একটি সাবস্ক্রিপশন প্ল্যান। এর মাসিক খরচ ৩০০ মার্কিন ডলার। এটি মূলত গবেষক, সফটওয়্যার নির্মাতা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর কাজের সঙ্গে জড়িত পেশাজীবীদের জন্য তৈরি। সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য এটি এখনো অনেক ব্যয়বহুল।

সূত্র: নিউজ১৮

সম্পর্কিত নিবন্ধ