ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর সাজঘরগুলো জমজমাট
Published: 30th, March 2025 GMT
নিজেকে পরিপাটি রাখতে দেড় থেকে দুই মাস পরপর বিউটি পারলারে যান তাসনিম জাহান (২৮)। রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার স্বনামধন্য একটি পারলারে যেতে স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করেন তিনি। এবার পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে তিনি ভেবে রাখেন, ঈদের ছুটি শুরু হলেই পারলারে ঢুঁ দেবেন।
তাসনিম জানান, ঈদের আগে পারলারে গিয়ে ফেসিয়াল, ম্যানিকিউর, পেডিকিউর আর ভ্রু প্লাক করাবেন। চুলটাও চলতি কোনো আঙ্গিকে কেটে নেওয়ার ইচ্ছা আছে তাঁর।
তাসনিম বলেন, ‘ঈদে সবাই একটু অন্য রকম আর নতুনভাবে সাজতে চান। আমিও ব্যতিক্রম নই।’
ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর বিউটি পারলারগুলো এখন জমজমাট। শেষ মুহূর্তে সাজঘরগুলোতে ভিড় বাড়ছে।
শুধু নারীদের বিউটি পারলারগুলো নয়, পুরুষদের সেলুনেও এখন ভীষণ ব্যস্ততা। কাঙ্ক্ষিত সেবা নেওয়ার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে একেকজনকে।
মোহাম্মদপুরের রেড বিউটি পারলারের অপারেশনাল পরিচালক মোনা পারভেজ বলেন, বাড়তি ভিড়ের কারণে চানরাত পর্যন্ত বুকিং–সুবিধা চালু রাখা হয়েছে। আসার আগে ফোন করে বুকিং দিলে সেবা নেওয়ার জন্য খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে না।
মোনা পারভেজ বলেন, ঈদের আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি হিসেবে ফেসিয়াল, পেডিকিউর আর ম্যানিকিউর করাচ্ছেন নারীরা। চুল কাটছেন অনেকে। নতুন করে চুলে রং করিয়ে নিচ্ছেন। এ ছাড়া কেউ চুলে রিবন্ডিং, বোটক্স ও ক্যারাটিন করছেন। আবার কেউ কেউ হাতের নখে এক্সটেনশন লাগিয়ে নিচ্ছেন।
এ ছাড়া অনেক নারী বিউটি পারলারে গিয়ে বেশ কয়েকটি সেবা একসঙ্গে নিচ্ছেন। তাঁদের জন্য আছে প্যাকেজ–সুবিধা। ফেসিয়াল, ম্যানিকিউর, পেডিকিউরসহ কয়কেটি সেবার এমন প্যাকেজ মিলছে ২ হাজার টাকা থেকে ৬ হাজার টাকায়।
পিছিয়ে নেই পুরুষেরাও। অভিজাত প্রতিষ্ঠান থেকে পাড়ার অলিগলির সেলুন—সবখানে ভিড়। খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, নারীদের পারলারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পুরুষদের জন্যও গড়ে উঠেছে বেশ কিছু আধুনিক সেলুন। তেমনি একটি ধানমন্ডি ৪ নম্বর রোডের ফেসওয়াশ ম্যানস গ্রুমিং সেলুন। রাস্তায় দাঁড়িয়েই পুরুষদের জন্য আধুনিক এই সেলুনের ভেতরের ভিড় দেখা যায়।
আরও পড়ুনবাংলাদেশি ক্রেতা নেই: সুনসান কলকাতার ঈদবাজার২৬ মার্চ ২০২৫প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার হৃদয় হাসান বলেন, পুরুষ গ্রাহকদের বেশির ভাগ চুল কাটাচ্ছেন। গরমের জন্য এখন সবাই ‘সোয়েট কাট’; অর্থাৎ কানের পাশের চুল কমিয়ে ওপরের দিকে চুল রেখে কাটছেন বেশি। পরিপাটি করে নিচ্ছেন গোঁফ-দাড়ি।
এ ছাড়া ফেসওয়াশ, ম্যানিকিউর, পেডিকিউর করাচ্ছেন ছেলেরা। কোনো প্যাকেজ–সুবিধা না থাকলেও যেকোনো স্টাইলে চুল কাটার খরচ ২০০ টাকা। আর মুখমণ্ডল, হাত-পা, চুলের যত্নের পূর্ণাঙ্গ সেবা নিতে চাইলে সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা খরচ হতে পারে বরে জানালেন হৃদয় হাসান।
এই সেলুনে নিয়মিত সেবা নেন লালমাটিয়ার বাসিন্দা নাহিদ আলম। কথার শুরুতে জানালেন, ঈদের ছুটি পেয়ে সময় নিয়ে সেলুনে এসেছেন। চুল কাটাবেন। আরও কিছু সেবা নেওয়ার ইচ্ছা আছে তাঁর।
এ বিষয়ে নাহিদ বলেন, নিজেকে সুন্দর বা পরিচ্ছন্ন করে তোলাই নয়, সেলুনের সেবাগুলো কর্মজীবনের ধকল দূর করে শরীর আর মনকে ফুরফুরে করে তোলে।
ঈদের আগে একটু কম খরচে সৌন্দর্য সেবা খুঁজছিলেন তেজগাঁওয়ের রাইদা (২২)। প্রায় সব আধুনিক বিউটি পারলারের অনলাইন বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পেজে দরদাম দেখছিলেন তিনি। তবে এবার খরচ কিছুটা বেশি বলে মনে হয় তাঁরা।
আরও পড়ুনঈদের আগে বিক্রি কমেছে প্রযুক্তিপণ্যের বাজারে২৭ মার্চ ২০২৫রাইদা বলেন, খরচ অনেক বেড়েছে। কোনো ভালো মানের ফেসিয়াল ১ হাজার টাকার কমে নেই। আগে ৫০০ টাকার কম দিয়েও চুল কাটা যেত। এখন শুরুই হচ্ছে ৫০০ টাকা থেকে। তবে উৎসব উপলক্ষে অনেক পারলারে প্যাকেজ–সুবিধা দিচ্ছে। এগুলো কিছুটা সাশ্রয়ী। যে পারলারের পরিবেশ যত ভালো, সেখানকার সেবার মূল্য তত বেশি।
নিকেতন ৮ নম্বর সড়কে অবস্থিত শোভন মেকওভারের স্বত্বাধিকারী ও পরিচালক শোভন সাহা বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেবার মূল্য কিছুটা বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। সেবার ব্যবহৃত উপকরণের দাম বেড়েছে। অনেকেই আবার ভালো মানের উন্নত উপকরণ ও আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করতে চান। যেমন হাইড্রা ফেসিয়ালের জন্য বিশেষ একটি যন্ত্র ব্যবহার করতে হয়। তখন এই সেবার দামও বেশি হয়।
শোভন সাহা বলেন, ঈদ উপলক্ষে ফেসিয়ালসহ অন্যান্য সেবা নিতে চাইলে দেরি না করাই ভালো।
আরও পড়ুনঈদের আগে কোন ধরনের ফেসিয়াল করালে সেরা ফল পাবেন২৫ মার্চ ২০২৫আরও পড়ুনঈদের ছুটিতে ঢাকায় থাকবে ১৫ হাজার পুলিশের কড়া নিরাপত্তা২৬ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে যথাযথ প্রচারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা বলেছেন, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে যথাযথ প্রচারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষ্যে সরকারের প্রচার কার্যক্রমকে আরো গতিশীল ও জোরদার করতে হবে। বিশেষ করে হ্যাঁ-না গণভোটের বিষয়টি জনগণকে বোঝানো বড় চ্যালেঞ্জ। ভোটের প্রস্তাবগুলো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে সহজবোধ্য করে তুলতে তিনি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত জনসংযোগ কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক তথ্য অফিসের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি কথা বলেন।
সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. নিজামূল কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত জনসংযোগ কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক তথ্য অফিসের কর্মকর্তাদের নিয়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে প্রচার কার্যক্রম বিষয়ক আলোচনা ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
মাহবুবা ফারজানা বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের সাথে সমন্বয় করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগ কার্যক্রমকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে বেশ কিছু কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচন উপলক্ষে ৩০টি জেলায় সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রতিটি বিভাগে একটি করে সেমিনার আয়োজন করা হবে। গুজব এবং অপতথ্য দূর করতেও তথ্য কর্মকর্তাদের বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে। এ সময় কর্মকর্তাদের নির্বাচনি আইন ও নিয়মকানুন সম্পর্কে জেনে নেওয়ার অনুরোধ জানান তথ্য সচিব।
তথ্য সচিব বলেন, গত ১৫ বছরের নির্বাচন নিয়ে জনগণের বহু তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে। জনগণকে নির্বাচন এবং ভোটকেন্দ্রে আসার ব্যাপারে উৎসাহী করে তুলতে হবে; বিশেষ করে তরুণ, নারী ও অনগ্রসর অঞ্চলের ভোটারদের।
সচিব বিগত দিনগুলোতে বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেও পেশাদারিত্বের সাথে সরকারের যোগাযোগ কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্নভাবে চালিয়ে যাওয়ায় তথ্য অধিদপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক তথ্য কর্মকর্তাদের প্রশংসা করেন।
ঢাকা/এএএম//