নোয়াখালীর কবিরহাটে শিরিন গার্ডেন নামে একটি বিনোদনকেন্দ্রে দুর্বৃত্তদের হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় এক পুলিশসহ ৭ জন আহত হয়েছেন। নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছেন বিনোদনকেন্দ্রে আসা নারী ও শিশুসহ দুই থেকে ৩ শতাধিক দর্শনার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী। 
 
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য সুন্দলপুর গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

আহত দুজন স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আহত বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বিনোদনকেন্দ্রের মালিক সিদ্দিকী নাছির উদ্দিন জানান, প্রতি বছর ঈদের সময় স্থানীয় একটি কিশোর গ্যাং বিনোদনকেন্দ্রে এসে হাঙ্গামা করে দর্শনার্থীদের ইভটিজিং, মুঠোফোন ও টাকা ছিনতাই করে। প্রতি বছরের ন্যায় বুধবার সন্ধ্যার দিকে কিশোর গ্যাংয়ের কয়েকজন সদস্য পৃথক পৃথকভাবে বিনোদনকেন্দ্রে প্রবেশ করে উশৃঙ্খল আচরণ শুরু করে। একপর্যায়ে বিনোদন কেন্দ্রে থাকা কর্মচারী ও পুলিশ তাদের বের করে দেয়। 

তিনি আরও বলেন, কিছুক্ষণ পর কিশোর গ্যাংয়ের ২০-৩০ জন সদস্য পুনরায় সংঘটিত হয়ে বিনোদনকেন্দ্রে প্রবেশ করে হামলা ভাঙচুর শুরু করে। পরবর্তী সময়ে তারা বিনোদনকেন্দ্রের ক্যাশে থাকা নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় এক পুলিশ তাদের প্রতিহত করতে এসে আহত হন। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করেছি। অনতিবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হামলাকারীরা ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ইতোমধ্যে হামলার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। বিনোদনকেন্দ্রের মালিক নিরাপত্তার ভয়ে কারো নাম উল্লেখ করে কথা বলতে রাজি হননি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কবিরহাট উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কামরুল হুদা চৌধুরী লিটন বলেন, হামলার বিষয়টি আমি শুনেছি।  তবে এর বেশি কিছু আমার জানা নেই।  

কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

শাহীন মিয়া বলেন, মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।  তবে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনও পুলিশ সদস্য তেমন আহত হয়নি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আহত ব ন দনক ন দ র

এছাড়াও পড়ুন:

‘কবর’ কবিতার শতবর্ষ পূর্তি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক

পল্লিকবি জসীমউদ্‌দীনের ‘কবর’ কবিতা বাংলা সাহিত্যের এক অবিস্মরণীয় সৃষ্টি। ১৯২৫ সালে লেখা অমর এ কবিতার শতবর্ষ এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ‘কবর’ কবিতা তৎকালীন সময়ের সমাজের চিত্রকে তুলে ধরেছে।

‘কবর’ কবিতার শতবর্ষ উপলক্ষে প্রকাশিত ‘শতবর্ষে কবর’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে এ কথা বলেন বক্তারা। শনিবার বিকেলে রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মিলনায়তনে ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

‘শতবর্ষে কবর’ গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন মফিজ ইমাম মিলন। ৪৮ জন লেখকের লেখা নিয়ে প্রকাশিত এই গ্রন্থ প্রকাশ করেছে নয়নজুলি প্রকাশনাী।

অনুষ্ঠানে অতিথিদের বক্তব্যে উঠে আসে জসীমউদ্‌দীনের অবিস্মরণীয় সৃষ্টি ‘কবর’ কবিতার নানান প্রসঙ্গ। কবিতাটি ১৯২৫ সালে ‘গ্রাম্য কবিতা’ পরিচয়ে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল কল্লোল পত্রিকার তৃতীয় বর্ষ তৃতীয় সংখ্যায়।

আলোচকেরা বলেন, ‘কবর’ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই বিপুল সাড়া জাগিয়েছিল। কবিতাটি দীনেশচন্দ্র সেন, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। এমনকি ‘কবর’ পড়ে দীনেশচন্দ্র সেন ‘অ্যান ইয়াং মোহামেডান পোয়েট’ শিরোনামে একটি আলোচনাও লিখেছিলেন ফরওয়ার্ড পত্রিকায়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল (সি আর) আববার বলেন, ‘কবর’ কবিতার শত বছর পূর্তির ঘটনা একটা গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। কবিতাটির শতবর্ষ নিয়ে বই প্রকাশ ব্যতিক্রমী প্রয়াস।

এ সময় শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, প্রতিটি শহরে ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের মতো সংগঠন থাকা উচিত। একটা বৃহত্তর পরিবারের মতো কাজ করে তারা। তিনি বলেন, এ ধরনের নাগরিক সমাজ রাষ্ট্রের বাইরে থেকে দেশ ও সমাজ সম্পর্কে ভাবে। এটা বিশাল শক্তি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফরিদপুর ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জালাল আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক আন্দালিব রাশদী, পক্ষিবিশারদ ইনাম আল হক, কথাসাহিত্যিক ফারুক মঈন উদ্দীন। গবেষক, সাংবাদিক ও ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মফিজ ইমাম মিলনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন নয়নজুলি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলী খান, অধ্যাপক এম এ সামাদ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ কাকলী মুখোপাধ্যায়, ডেইলি স্টারের সাহিত্য সম্পাদক ইমরান মাহফুজ প্রমুখ।

‘শতবর্ষে কবর’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠান শুরু হয় ‘কবর’ কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে। স্বাগত বক্তব্য দেন ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক আলতাফ হোসেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ