যশোরে মেলায় ফুচকা খেয়ে ২৩৫ জনের অসুস্থতার ঘটনায় মামলা, দোকানি গ্রেপ্তার
Published: 3rd, April 2025 GMT
যশোরের অভয়নগরের ঈদমেলায় ফুচকা খেয়ে ২৩৫ জনের অসুস্থতার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। এ মামলায় গতকাল বুধবার রাতে মনিরামপুর উপজেলার ঢাকুরিয়া এলাকার নিজ বাড়ি থেকে ফুচকা দোকানি মনির হোসেনকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় অভয়নগর থানায় নিরাপদ খাদ্য আইনসহ কয়েকটি ধারায় মামলা করেন তানজিম হোসাইন নামের এক ভুক্তভোগী। এতে মনিরকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুনযশোরে ঈদমেলায় ফুচকা খেয়ে ১০০ নারী-পুরুষ ও শিশু হাসপাতালে০১ এপ্রিল ২০২৫বিষয়টি নিশ্চিত অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আলিম জানান, ফুচকা খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া তানজিম হোসাইন গতকাল দোকানি মনিরের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। এরপর গতকাল রাতেই গ্রামের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে নেওয়ার কথা আছে।
গত সোমবার ঈদের দিন বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত উপজেলার দেয়াপাড়া গ্রামের দক্ষিণ দেয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ফুচকা খেয়ে প্রায় আড়াই শ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। অধিকাংশের পেটে ব্যথা, বমি, পাতলা পায়খানা, খিঁচুনি ও জ্বর দেখা দেয়। তাঁদের মধ্যে অন্তত ২৩৫ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। গুরুতর অসুস্থতার জন্য ১৪ জনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আর বাকিদের অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এসব রোগীর সবাই বর্তমানে সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।
আরও পড়ুনযশোরে মেলায় ফুচকা খেয়ে অসুস্থ আরও ১১৮ জন, সব মিলিয়ে হাসপাতালে ২১৩২২ ঘণ্টা আগেঅভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলীমুর রাজিব আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বলেন, অবস্থার উন্নতি হওয়ায় ওই ঘটনায় অসুস্থ ১৪৮ জনকে চিকিৎসাপত্র দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। আর ৭৩ জন রোগী ভর্তি আছেন। তাঁদের অবস্থাও উন্নতির দিকে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে গভীর রাতে অস্ত্রের মুখে ৭ জনকে জিম্মি করে সোনার দোকানে ডাকাতি
যশোরের অভয়নগর উপজেলার একটি সোনার দোকানে ডাকাতি হয়েছে। গতকাল রোববার গভীর রাতে মশিয়াহাটী বাজারের সৌখিন জুয়েলার্সে এ ঘটনা ঘটে।
দোকানটির মালিক গৌতম কর্মকার (৫০)। তিনি মনিরামপুর উপজেলার কুলটিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
গৌতম কর্মকার জানান, গতকাল রাত ১০টার দিকে তিনি দোকান বন্ধ করে বাড়িতে যান। গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনে একটি কল আসে। অপর প্রান্ত থেকে তাঁকে জানানো হয়, তাঁর সোনার দোকানে ডাকাতি হচ্ছে। কিন্তু ভয়ে তিনি রাতে বাড়ি থেকে বের হননি। আজ সকালে দোকানটিতে গিয়ে তিনি ডাকাতির আলামত দেখতে পান।
গৌতম কর্মকারের দাবি, তাঁর দোকানের লকারে প্রায় ২ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার ও ২৪ ভরি ওজনের রুপার গয়না ছিল। এগুলোর বাজারমূল্য চার লাখ টাকার বেশি। ডাকাত দলটি এগুলোর সব লুট করেছে।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, গতকাল রাত ২টার দিকে ১০ থেকে ১২ জনের একটি সশস্ত্র ডাকাত দল মশিয়াহাটী বাজারে আসে। তাদের সবার মুখ কাপড়ে দিয়ে বাঁধা ছিল। একপর্যায়ে অস্ত্রের মুখে একজন নারীসহ বাজারের অন্তত সাতজনকে দড়ি দিয়ে হাত বেঁধে এবং মুখে টেপ লাগিয়ে ফেলে রাখে। এরপর সৌখিন জুয়েলার্সের কলাপসিবল গেটের একটি পাশ এবং শাটারের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। পরে লকারের তালা ভেঙে সোনা ও রুপার গয়না নিয়ে যায় তারা। ভোর চারটা পর্যন্ত সেখানে ডাকাতি হয়। এ সময় শব্দ শুনে ঘর থেকে বের হন স্থানীয় বাসিন্দা বিকাশ বিশ্বাস (৬০) ও তাঁর স্ত্রী প্রতিমা বিশ্বাস (৫৫)। ডাকাতেরা অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে প্রতিমা বিশ্বাসের গলার একটি সোনার হার নিয়ে যায়।
মশিয়াহাটী বাজারের পাশে সুজাতপুর গ্রাম। ওই গ্রামের কৌশিক দাস (১৬) জানায়, গতকাল রাতে ঘুম আসছিল না। রাত ২টা ২০ মিনিটের দিকে হেঁটে বাজারের দিকে যাচ্ছিল। বাজারে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ডাকাতেরা তাকে ধরে ফেলে। এরপর তার দুই হাত দড়ি দিয়ে পেছনে বেঁধে মুখে চওড়া স্কচটেপ লাগিয়ে দেয়।
কৌশিক দাস বলে, ‘ডাকাত দল চলে যাওয়ার পর ভোর চারটার দিকে আমি কৌশলে হাতের বাঁধন খুলে ফেলি। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যদের হাত ও মুখের স্কচটেপ খুলে দিয়েছি।’
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে এম রবিউল ইসলাম, বিষয়টি চুরি না ডাকাতি, তা তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।