যশোরের অভয়নগরের ঈদমেলায় ফুচকা খেয়ে ২৩৫ জনের অসুস্থতার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। এ মামলায় গতকাল বুধবার রাতে মনিরামপুর উপজেলার ঢাকুরিয়া এলাকার নিজ বাড়ি থেকে ফুচকা দোকানি মনির হোসেনকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় অভয়নগর থানায় নিরাপদ খাদ্য আইনসহ কয়েকটি ধারায় মামলা করেন তানজিম হোসাইন নামের এক ভুক্তভোগী। এতে মনিরকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।

আরও পড়ুনযশোরে ঈদমেলায় ফুচকা খেয়ে ১০০ নারী-পুরুষ ও শিশু হাসপাতালে০১ এপ্রিল ২০২৫

বিষয়টি নিশ্চিত অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আলিম জানান, ফুচকা খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া তানজিম হোসাইন গতকাল দোকানি মনিরের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। এরপর গতকাল রাতেই গ্রামের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে নেওয়ার কথা আছে।

গত সোমবার ঈদের দিন বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত উপজেলার দেয়াপাড়া গ্রামের দক্ষিণ দেয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ফুচকা খেয়ে প্রায় আড়াই শ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। অধিকাংশের পেটে ব্যথা, বমি, পাতলা পায়খানা, খিঁচুনি ও জ্বর দেখা দেয়। তাঁদের মধ্যে অন্তত ২৩৫ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। গুরুতর অসুস্থতার জন্য ১৪ জনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আর বাকিদের অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এসব রোগীর সবাই বর্তমানে সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।

আরও পড়ুনযশোরে মেলায় ফুচকা খেয়ে অসুস্থ আরও ১১৮ জন, সব মিলিয়ে হাসপাতালে ২১৩২২ ঘণ্টা আগে

অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলীমুর রাজিব আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বলেন, অবস্থার উন্নতি হওয়ায় ওই ঘটনায় অসুস্থ ১৪৮ জনকে চিকিৎসাপত্র দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। আর ৭৩ জন রোগী ভর্তি আছেন। তাঁদের অবস্থাও উন্নতির দিকে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

ভারী বর্ষণে ভবদহের গ্রামে গ্রামে জলাবদ্ধতা

যশোরের মনিরামপুর, অভয়নগর, কেশবপুর এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে ভবদহ অঞ্চল গঠিত। এ অঞ্চলের অনেক গ্রাম বছরে চার মাস জলাবদ্ধ থাকে। সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণে যশোরের মনিরামপুর ও অভয়নগর উপজেলার ৩০টির বেশি গ্রামে পানি ঢুকেছে। এসব গ্রামের বেশিরভাগ ঘরবাড়ি, ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। নদী দিয়ে ঠিকমতো পানি নিষ্কাশিত না হওয়ায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।

ভবদহ এলাকার পানি নিষ্কাশন হয় মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদ-নদী দিয়ে। পলি পড়ে নদীগুলো নাব্য হারিয়েছে। ফলে, ভারী বৃষ্টির পানি সহজে ও দ্রুত নিষ্কাশন হচ্ছে না। 

যশোরের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটির আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, যশোরে জুন মাসে স্বাভাবিক গড় বৃষ্টিপাত ধরা হয় ২৯৮ দশমিক ৭ মিলিমিটার এবং জুলাই মাসে ৩০৪ দশমিক ১০ মিলিমিটার। গত জুন মাসে যশোরে ২৯৯ মিলিমিটার এবং চলতি জুলাই মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত ৫১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে, ভবদহ অঞ্চলের ৫২টি বিল প্লাবিত হয়েছে। বিল উপচে পানি ঢুকতে শুরু করেছে আশপাশের গ্রামগুলোতে।

সুন্দলী গ্রামের তন্ময় বিশ্বাস বলেছেন, “উঠোনে প্রায় হাঁটুজল। আরেকটু বাড়লে ঘরে জল উঠে যাবে। ঘরে জল উঠলে রাস্তায় ওঠা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।”

ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক রণজিত বাওয়ালী বলেছেন, “ভবদহের ২১ ভেন্ট স্লুইসগেটের মধ্যে মাত্র ছয়টি গেট খোলা হয়েছে। সবগুলো গেট খুলে দিলে আরো বেশি জল নামত। কিন্তু, পানি উন্নয়ন বোর্ড সব গেট খুলছে না। এলাকার বিলে টাইডল রিভার ম্যানেজমেন্ট (জোয়ারাধার) চালু না করলে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি নেই।”  

পানি উন্নয়ন বোর্ডের যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জি বলেছেন, “নদীতে জোয়ারের সময় ভবদহ স্লুইসগেটের ২১ ভেন্টের ওপর চারটি বড় ও ১৫টি ছোট বৈদ্যুতিক যন্ত্র দিয়ে পানি সেচে বের করে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া, ভাটির সময় ছয়টি গেট খুলে দেওয়া হচ্ছে। গেটগুলো দিয়ে প্রচুর পানি বের হচ্ছে। এতে এলাকার পানি দ্রুত সরে যাবে।” 

তিনি বলেন, “ভবদহ এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য সেনাবাহিনী আগামী মাসে ছয়টি নদীর ৮১ দশমিক ৫ কিলোমিটার খননে কাজ শুরু করবে। এছাড়া, আমডাঙ্গা খাল সংস্কারের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। দুই-এক মাসের মধ্যে আমডাঙ্গা খাল সংস্কারে কাজ শুরু হবে।”

ঢাকা/প্রিয়ব্রত/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্যবসায়ীকে বুকসমান বালুতে পুঁতে নির্যাতন, টাকা আদায়, অভিযোগ বিএনপি নেতা ও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে
  • ভারী বর্ষণে ভবদহের গ্রামে গ্রামে জলাবদ্ধতা