কোটিপতি প্রযুক্তি উদ্যোক্তার বিরুদ্ধে ছেলেকে অপহরণসহ স্ত্রীর যত অভিযোগ
Published: 8th, April 2025 GMT
ভারতীয় বিলিয়নিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোক্তা প্রসন্ন শঙ্কর ও তাঁর স্ত্রী দিব্যা শশীধরের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ এবং ছেলের হেফাজত পাওয়া নিয়ে আইনি লড়াই চলছে।
তিক্ত এই লড়াইয়ের মধ্যে কয়েক সপ্তাহ আগে প্রসন্ন শঙ্কর স্ত্রীর বিরুদ্ধে তাঁকে হেনস্তা করার অভিযোগ এনেছেন। এবার তাঁর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেছেন স্ত্রী দিব্যা। দিব্যার অভিযোগ, তাঁর স্বামী প্রসন্ন যৌনকর্মীদের ভাড়া করতেন এবং তাঁকে ‘ওপেন ম্যারেজ’ মেনে নিতে বাধ্য করেছিলেন।
প্রযুক্তিখাতের কোম্পানি রিপলিংয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা প্রসন্ন শঙ্কর। ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার।
সম্প্রতি প্রসন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে বলেন, তাঁর স্ত্রী দিব্যা শশীধর তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে তাঁদের ছেলেকে অপহরণের অভিযোগ এনেছেন। এর পর থেকে তিনি চেন্নাই পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
এই কোটিপতি প্রযুক্তি ব্যবসায়ী আরও অভিযোগ করেন, কোনো এফআইআর ছাড়াই পুলিশ অবৈধভাবে তাঁর মুঠোফোন, গাড়ি, ইউপিআই ও আইপি অ্যাড্রেস অনুসরণ করে যাচ্ছে। যখন তিনি ছেলের হেফাজত পেতে আইনি লড়াইয়ের চেষ্টা করছেন, সে সময় তাঁর স্ত্রী দিব্যা বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন প্রসন্ন।
প্রসন্নের বিরুদ্ধেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা অভিযোগ তুলেছেন দিব্যা। তিনি বলেন, প্রসন্ন জোর করে তাঁর সঙ্গে সহবাস করতেন, যৌনকর্মীদের ভাড়া করতেন, দিব্যাকে ‘ওপেন ম্যারেজ’ গ্রহণ করতে বাধ্য করেন এবং তাঁর ওপর নজর রাখতে প্রসন্ন বাড়িতে গোপন ক্যামেরা লাগিয়েছিলেন।
নিজের ওই পোস্টে প্রমাণ হিসেবে দিব্যা কয়েক শ পাতার নথির ছবি আদালতে জমা দেন। ওই নথিতে সন্তানের হেফাজত পেতে একাধিক দেশে তাঁদের আইনি লড়াইয়ের চিত্র উঠে আসে। পাশাপাশি তিনি ই–মেইল, ছবি ও অন্যান্য রেকর্ডও দেখিয়েছেন বলে জানিয়েছে দ্য সান ফ্রান্সিসকো স্ট্যান্ডার্ড।
দ্য সান ফ্রান্সিসকো স্ট্যান্ডার্ডকে দিব্যা একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, যাতে তিনি দাবি করেন, নিজের কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থের কর ফাঁকি দিতে প্রসন্ন তাঁকে এবং তাঁদের ৯ বছর বয়সী ছেলেকে এক দেশ থেকে অন্য দেশে চলে যেতে বাধ্য করতেন।
দিব্যা দাবি করেন, প্রসন্ন তাঁর জীবনকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ওটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ দুঃস্বপ্ন।’ ২০১৬ সালে সন্তান জন্মের পর তাঁর স্বামী তাঁর সঙ্গে জোর করে সহবাস করতেন। তিনি রাজি না হলে তাঁকে পরিণতির ভয় দেখানো হতো।
একপর্যায়ে শঙ্কর তাঁকে ‘ওপেন ম্যারেজের’ প্রস্তাব দেন বলেও দাবি করেন দিব্যা। প্রমাণ হিসেবে তিনি তাঁকে প্রসন্নের পাঠানো কিছু ই–মেইল দেখান।
প্রসন্নের সঙ্গে দিব্যার পরিচয় হয় ২০০৭ সালে। দুই বছর পর তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুজনই প্রযুক্তি খাতে মেধাবী ব্যক্তি ছিলেন এবং নিজেদের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। প্রসন্ন যখন সিলিকন ভ্যালিতে কাজ করতেন, তখন বেশ কয়েক বছর তাঁরা ‘লং-ডিসটেন্স’ সম্পর্কে ছিলেন।
দিব্যা কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। ২০১৩ সালে দুজনের পুনর্মিলন হয়। সে সময় দিব্যা নেদারল্যান্ডসে বসবাস করতেন। পরিবারের আপত্তি উপেক্ষা করে দিব্যা প্রসন্নকে বিয়ে করেন।
২০১৫ সালে প্রসন্ন সান ফ্রান্সিসকোতে ফিরে আসেন। ২০১৭ সালের শুরুতে রিপলিংয়ের যাত্রা শুরু হয়। ২০২২ সাল থেকে ফোর্বস ‘বিলিয়নিয়ারদের’ তালিকায় প্রসন্নর নাম ওঠে।
প্রসন্নর সহকর্মীরা তাঁকে ‘কোডিং গড’ ও ‘খুবই ভালো একজন প্রকৌশলী’ হিসেবে বর্ণনা করেন। কিন্তু তাঁর স্ত্রী আদালতে প্রসন্নকে স্বামী ও বাবা হিসেবে একজন অযত্নশীল ব্যক্তি বলে বর্ণনা করেন।
প্রসন্নের দাবি, তাঁর স্ত্রী বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছেন। এ কারণেই তাঁদের বিচ্ছেদের পথে হাঁটতে হয়েছে। তাঁরা সমঝোতার ভিত্তিতে বিবাহবিচ্ছেদে যাওয়া নিয়েও আলোচনা করেছেন। কিন্তু তাঁর স্ত্রী এতে রাজি ছিলেন না।
পরে আদালত স্ত্রীকে প্রায় ৯ কোটি রুপি প্রদান এবং প্রতি মাসে ৪ লাখ ৩০ হাজার রুপি করে দিতে প্রসন্নকে নির্দেশ দেন। সন্তানের হেফাজত যৌথভাবে দুজনকেই দেওয়া হয়। এখন সন্তানের হেফাজত পাওয়া নিয়ে তাঁরা আবার নতুন করে বিবাদে জড়িয়েছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রসন ন র ন প রসন করত ন
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় গুলিতে ৩ পুলিশ নিহত
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে গুলিতে অন্তত তিনজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দুজন পুলিশ সদস্য।
অঙ্গরাজ্যটির পুলিশ কমিশনার ক্রিস্টোফার প্যারিস বুধবার সংবাদমাধ্যমকে হতাহতের এ তথ্য জানান।
ক্রিস্টোফার প্যারিসের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার দুপুরের এ ঘটনায় সন্দেহভাজন বন্দুকধারীও পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। আহত দুই পুলিশ সদস্যের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জশ শাপিরো ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১৮৫ কিলোমিটার বা প্রায় ১১৫ মাইল পশ্চিমে নর্থ কোডোরাস টাউনশিপে ঘটনাস্থলে গেছেন।
কে বা কারা এ গুলিবর্ষণের পেছনে জড়িত, সে সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে পুলিশ কোনো তথ্য দেয়নি।
অ্যাটর্নি জেনারেল পামেলা বন্ডি পুলিশের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে ‘আমাদের সমাজের জন্য একটি অভিশাপ’ বলে অভিহিত করেছেন।
পামেলা বন্ডি আরও বলেন, স্থানীয় কর্মকর্তাদের সহায়তার জন্য ফেডারেল এজেন্টরা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন।