দরপত্র অনুযায়ী উপযুক্ত গরু সরবরাহ না করায় জনগণের তোপের মুখে বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল আয়োজিত আদিবাসীদের মধ্যে গরু বিতরণ অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে। 
সমতল ভূমিতে বসবাসরত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের লক্ষ্যে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৭০ জন সুফলভোগীর জন্য ৭০টি গরু বরাদ্দ করা হয়। গরু সরবরাহের দায়িত্ব পায় জেনটেক ইন্টারন্যাশনাল। দরপত্র অনুযায়ী উপকারভোগীদের মধ্যে ১০০ কেজি ওজনের হেলান, সুস্থ ও ন্যূনতম দেড় বছর বয়সি গরু সরবরাহ করার কথা। সেখানে ৬৫ থেকে ৭০ কেজি ওজনের গরু সরবরাহ করা হয়েছে। 
গতকাল প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় হাসপাতাল চত্বরে গরু বিতরণের উদ্দেশ্যে শামিয়ানা টানানো হয়। সরবরাহ করা গরুর আকৃতি দেখে সুফলভোগীদের সন্দেহ হয়। তারা দরপত্র অনুযায়ী গরু সরবরাহ করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্ন করেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে। একপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে গুঞ্জন শুরু হলে জনসমক্ষে গরুগুলো স্কেলে ওজন করা হয়। তাতে করে গড়ে প্রতিটি গরুর ওজন ৬৫-৭০ কেজি পর্যন্ত পাওয়া যায়। পড়ে তোপের মুখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসাহাক আলী বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেন।
সুফলভোগীদের অভিযোগ, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.

সারোয়ার হোসেনের দায়িত্বে অবহেলার কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি দরপত্র দেখে ঠিকাদারের কাছ থেকে গরু বুঝে নেননি। 
ঠিকাদারের প্রতিনিধি ওমর ফারুক বলেন, ‘কোম্পানি এসব গরু কিনেছে। আমরা সেগুলো প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে বুঝিয়ে দিতে এসেছি। এর বেশি কিছু জানি না।’
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুর রহিম বলেন, ঠিকাদারের সরবরাহ করা গরু যাচাই করা হয়েছে। দরপত্র অনুযায়ী গরু সরবরাহ না করায় বিরতণ সম্ভব হয়নি। ঠিকাদারের কাছ থেকে বুঝে নেওয়ার সময় কেন যাচাই করা হয়নি জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, এক দিন আগে গরু আনলে খাবারের ব্যবস্থা করতে হয়। সে আয়োজন না থাকায় আগে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গর উপজ ল ব তরণ

এছাড়াও পড়ুন:

শিল্প খাতের উৎপাদন যেন ব্যাহত না হয়

গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করার পরও চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারেনি। তারা মাটির নিচে থাকা গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন না করে জ্বালানি খাতকে আমদানিনির্ভর করার পাশাপাশি গোষ্ঠীবিশেষকে মোটা অঙ্কের কমিশন–বাণিজ্য করার সুযোগ দিয়েছিল।

অন্তর্বর্তী সরকার এখন পর্যন্ত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে টেকসই কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানা নেই। বরং তাদের নেওয়া কর্মসূচিতেও জন–অসন্তোষ প্রশমনের রাজনৈতিক প্রয়াস লক্ষ করা যাচ্ছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবারের গ্রীষ্মে লোডশেডিং সীমিত রাখার কথা বলেছেন। সেটা যদি গ্যাসের উৎপাদন বাড়িয়ে করা হয়, দেশবাসী স্বাগতই জানাবে। সরকার শিল্প খাতে গ্যাসের সরবরাহ কমিয়ে বাসাবাড়ি বা অন্য খাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানোর যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে সমস্যা আরও বাড়বে। শিল্প খাতে গ্যাসের সরবরাহ কমানো মানে সেখানে উৎপাদন কমবে।

ইতিমধ্যে শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাসের সরবরাহ কমানোয় উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। জ্বালানি উপদেষ্টাকে পাঠানো চিঠিতে তারা বলেছে, কারখানাগুলোয় ন্যায্যতার ভিত্তিতে গ্যাসের সরবরাহ করা না হলেও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক কারখানা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ কারণে আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ও বোনাস পরিশোধে সংকট তৈরি করতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।

বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) সূত্র বলছে, দেশে দিনে গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট। এখন সরবরাহ করা হচ্ছে ২৭০ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে ১০৫ কোটি ঘনফুট যাচ্ছে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোয়। বিদ্যুৎ খাত এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাচ্ছে। তাই আবাসিক ও শিল্প গ্রাহকের গ্যাস-সংকট বেড়েছে। গ্যাসের জোগান না বাড়িয়ে রেশনিং করে বা এক খাতে কমিয়ে, আরেক খাতে বাড়িয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার উদ্যোগ কোনো কাজে আসবে না বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।

বিদ্যুৎ খাতে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো হয়েছে। এটা খুবই ভালো কথা। কিন্তু গ্যাসের উৎপাদন কিংবা আমদানি না বাড়াতে পারলে পরিস্থিতি আরও নাজুক হবে। অনেক জ্বালানিবিশেষজ্ঞ দেশে গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর কথা বলেছেন। সেটা তো রাতারাতি সম্ভব নয়। তথাকথিত সিস্টেম লস বা চুরি কমিয়ে কিছু গ্যাস বা বিদ্যুৎ হয়তো সাশ্রয় হবে। এ অবস্থায় এলএনজি ও জ্বালানি তেলের আমদানি বাড়াতে হবে; যাতে শিল্প খাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা যায়।

গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম নিয়েও সরকার চাপে আছে। আইএমএফ গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর জন্য চাপ দিচ্ছে। বর্তমানে পেট্রোবাংলা প্রতি ইউনিট গ্যাস বিক্রি করে পায় ২২ টাকা ৮৭ পয়সা। তাদের খরচ হচ্ছে গড়ে ২৭ টাকার বেশি—এটা সাধারণ গ্রাহকদের জন্য। এখানে সরকারকে ভর্তুকি দিতে হয়। কিন্তু শিল্পে প্রতি ইউনিট গ্যাস তারা বিক্রি করে ৩০ টাকায়; যেখানে ভর্তুকি দিতে হয় না।

জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে সজাগ থাকতে হবে যাতে দেশের শিল্প খাত, বিশেষ করে তৈরি পোশাকশিল্পের উৎপাদন যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। জ্বালানি উপদেষ্টা গ্রাম ও শহরে লোডশেডিং ভাগ করে নেওয়ার কথা বলেছেন। খুবই আশার কথা। একই সঙ্গে তিনি যদি বলতেন, জনজীবনে লোডশেডিং কমানোর পাশাপাশি শিল্প খাতে গ্যাস সরবরাহও স্বাভাবিক থাকবে, তাতে শিল্পোদ্যোক্তারা আশ্বস্ত হতেন, দেশবাসীও।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদানির সঙ্গে চুক্তি ক‌রে শুল্ক ফাঁকি
  • সর্বোচ্চ দরদাতা ইজারা পাননি, গাবতলী হাটে খাস আদায় করছেন ‘পছন্দের’ ব্যক্তিরা
  • এবার আগেভাগেই বই ছাপার কাজ শুরু হচ্ছে, ২০২৭ সাল থেকে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমের চিন্তা
  • শিল্প খাতের উৎপাদন যেন ব্যাহত না হয়
  • তিন প্রকল্প অনুমোদন, ব্যয় হবে ৩৯০ কোটি টাকা
  • বেজা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের দুই প্রস্তাব অন
  • অভিযোগের বিষয়ে এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি’র বক্তব্য 
  • এলএনজি আমদানি: ব্যয় হবে ১৬২০ কোটি ৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা
  • ‘নতুন শুরুর আশায়’ মাগুরা টেক্সটাইল মিলসের পুরোনা মেশিন বিক্রি
  • সোনাগাজীতে ইজারা চুক্তি না মেনে চলছে পশুর হাট