প্রতিশোধ নিতেই বড় শাহীনকে খুন, নারীকে দিয়ে পাতা হয় ফাঁদ
Published: 12th, April 2025 GMT
৫ আগস্টের পর বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর এবং বাবা-মাকে মারধরের প্রতিশোধ নিতেই শীর্ষ চরমপন্থি নেতা শেখ শাহিনুল হক শাহিন ওরফে বড় শাহিনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তার শিষ্য শাহনেওয়াজ পারভেজ রনি। হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী হীরা ঢালিকে ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করেন রনি। হীরার প্রেমের ফাঁদে পড়েই গত ১৫ মার্চ রাতে দৌলতপুর থেকে নগরীর বাগমারায় যান বড় শাহীন। সেখানেই মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয় বড় শাহীনকে।
গতকাল শুক্রবার আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য স্বীকার করেছেন শাহনেওয়াজ পারভেজ রনি ও হীরা ঢালী। গত ৭ এপ্রিল তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জবানবন্দি গ্রহণের পর আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ১৫ মার্চ রাতে খুলনা নগরীর বাগমারা খালপাড় রোডের ফাঁকা রাস্তার উপর দুর্বৃত্তরা গুলি করে বড় শাহিনকে হত্যা করে। শাহীনের বিরুদ্ধে খুলনা নগরীর দৌলতপুরের আলোচিত শহীদ ওরফে হুজি শহীদ হত্যাসহ একাধিক মামলা ছিল। হত্যার ঘটনার শাহীনের মা রহিমা বেগম বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে খুলনা সদর থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা সদর থানার এসআই মনির হোসেন বলেন, ১৫ বছর পূর্বে শাহনেওয়াজ পারভেজ রনি পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির নেতা শাহীন ওরফে বড় শাহীনকে পুলিশে ধরিয়ে দেন। দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার পর প্রতিশোধের সুযোগ খুঁজতে থাকেন শাহীন। গত বছর ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের পর এলাকায় ফিরে শাহীন লোকজন নিয়ে মহেশ্বরপাশায় রনির বাড়িতে হামলা চালায়। ওইদিন রনির বাবা-মাকে মারধর করে তারা। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন রনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী রনি তার দ্বিতীয় স্ত্রী হীরাকে ব্যবহার করেন।
তিনি জানান, গত ডিসেম্বর থেকে শাহীনের গতিবিধি লক্ষ্য করতে থাকে রনি। জানুয়ারি মাসে শাহীনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ শুরু করেন হীরা। এক সময়ে তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরি হয়। বাগমারা এলাকার একটি বাড়িতে বসবাস করতে থাকেন হীরা। সেখানেও যাতায়াত ছিল শাহীনের। শাহীনের যাবতীয় খবরাখবর রনির কাছে আদান প্রদান করতে থাকেন হীরা। বিষয়টি টের পাননি শাহীন। গত ১৫ মার্চ দৌলতপুর ছিলেন শাহীন। রাতে হীরা ঢালীর ভাড়া বাড়িতে ডেকে আনা হয় শাহীনকে। রাত সোয়া ১১টার দিকে সুযোগ বুঝে হীরা ঢালী এবং তার স্বামী রনির উপস্থিতিতে আরও কয়েকজন সন্ত্রাসী খুব কাছ থেকে শাহীনের মাথায় দুটি গুলি করেন। ঘটনাস্থলে শাহীনের মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে রনি মোবাইল ফোন বন্ধ করে খালিশপুর চলে যান এবং স্ত্রী হীরা ঢালী ঘরেই অবস্থান করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা জানান, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ঘটনাস্থলে হীরা ঢালী এবং রনির উপস্থিতি পাওয়া যায়। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য হীরাকে কেউ যাতে সন্দেহ না করে সেজন্য বাগমারার ভাড়া বাসাটি ছাড়েননি হীরা। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করার জন্য পুলিশ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
খুলনা সদর থানার ওসি হাওলাদার সানোয়ার হুসাইন মাসুম জানান, গত ৭ এপ্রিল নগরীর মহেশ্বরপাশা এলাকা থেকে রনিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আমিনুর এবং হীরা ঢালীকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আদালতে স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি প্রদান করতে চান রনি এবং হীরা ঢালী। শুক্রবার বিকেলে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের খাস কামরায় হত্যাকাণ্ডের বিবরণ তুলে ধরে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন তারা দু’জন। জবানবন্দি পরবর্তী আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দেন। বড় শাহীন হত্যাকাণ্ডে এ পর্যন্ত ছয়জন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হত য বড় শ হ ন ব গম র নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানে গবেষণা পুরস্কার এবং লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডের আবেদন করুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ ‘রাজ্জাক শামসুন নাহার গবেষণা পুরস্কার’ ও ‘রাজ্জাক শামসুন নাহার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ইন ফিজিক্স’ প্রদানের জন্য দেশের পদার্থবিজ্ঞানী ও গবেষকদের কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
কোন সালের জন্য পুরস্কার —ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে প্রতিষ্ঠিত ট্রাস্ট ফান্ড থেকে ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালের গবেষণা কাজের জন্য এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
পুরস্কার মল্যমান কত —১. পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে মৌলিক গবেষণার জন্য পুরস্কার পাওয়া গবেষককে রাজ্জাক শামসুন নাহার গবেষণা পুরস্কার হিসেবে নগদ ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হবে।
২. পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে আজীবন অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে একজন বিজ্ঞানী বা গবেষককে নগদ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের রাজ্জাক শামসুন নাহার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
আবেদনের শেষ তারিখ —আগ্রহী প্রার্থীদের আগামী ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ সালের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) বরাবর আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।
আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে—আবেদনকারীদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তিন কপি আবেদনপত্র, তিন প্রস্থ জীবনবৃত্তান্ত, তিন প্রস্থ গবেষণাকর্ম এবং তিন কপি ছবি আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
দরকারি তথ্য—১. জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে প্রকাশিত গবেষণাকর্ম পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে।
২. যৌথ গবেষণা কাজের ক্ষেত্রে গবেষণা পুরস্কারের অর্থ সমান হারে বণ্টন করা হবে। এ ক্ষেত্রে সহযোগী গবেষক বা গবেষকের অনুমতি নিয়ে আবেদন করতে হবে।
৩. আবেদনকারী যে বছরের জন্য আবেদন করবেন পাবলিকেশন ওই বছরের হতে হবে।
৪. একই পাবলিকেশন দিয়ে পরবর্তী বছরের জন্য আবেদন করা যাবে না।
৫. কোন কারণে একজন প্রার্থী পুরস্কারের জন্য আবেদন করলে প্রার্থিতার স্বল্পতা বিবেচনা করে তাঁর আবেদন বিবেচনা করা হবে।
৬. পরীক্ষক তাঁর গবেষণা কাজের পুরস্কারের জন্য সুপারিশ না করলে তাঁকে পুরস্কারের বিষয়ে বিবেচনা করা হবে না।
৭. পদার্থবিজ্ঞানে রাজ্জাক শামসুন নাহার গবেষণা পুরস্কার একবার প্রাপ্ত গবেষকও পরবর্তী সময়ে আবেদন করতে পারবেন।
৮. নতুন গবেষককে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
৯. যদি মানসম্মত গবেষণা কাজ না পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে পূর্বের পুরস্কার পাওয়া গবেষকের নতুন গবেষণা কাজের পুরস্কারের জন্য পরীক্ষকের সুপারিশের ভিত্তিতে বিবেচনা করা হবে।
# আবেদন জমা দেওয়ার ঠিকানা: প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।