ত্রিপুরাদের বর্ষবরণ উৎসব ‘বৈসু’র মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে রবিবার (১৩ এপ্রিল) থেকে। চাকমাদের উৎসবের দ্বিতীয় দিন ‘মূল বিজু’ আজ। ঘরে ঘরে নানা প্রকার সবজি দিয়ে তৈরি বিশেষ খাবার পাজন দিয়ে অতিথি আপ্যায়ন করছেন তারা।
মারমাদের সাংগ্রাই উৎসেবর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে আগামীকাল সোমবার (১৪ এপ্রিল) থেকে।
ত্রিপুরাদের বর্ষবরণ উৎসব বৈসুর প্রথমদিনকে বলা হয় হারিবৈসু। এদিন ভোরে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর নারী-পুরুষ ও শিশুরা ঘুম থেকে উঠে ঘর পরিষ্কার করেন। গোসল করে নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক এবং গয়না পরিধান করে নদী, ছড়া ও খালে গিয়ে বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নেন তারা।
আরো পড়ুন:
বর্ষবরণে থাকছে ‘অন্ধকার কাল থেকে উত্তীর্ণ হবার বার্তা’
‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র নাম হলো ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’
বাহারি রঙের ফুল কলাপাতায় সাজিয়ে মোমবাতি, আগরবাতি জ্বালিয়ে গঙ্গাদেবীর উদ্দেশ্যে নিবেদন করেন ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী। পুরতন বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেন তারা।
তরুণীরা নিজেদের হাতে তৈরি করে আনা ছোট ছোট রিসা বা উড়না ফুলসহ পানিতে ভাসিয়ে দেন। পরে ছেলে-মেয়েরা ছড়ার পানিতে নেমে বড়দের সঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠেন।
খাগড়াপুরের সুমিতা ত্রিপুরা ও সমর ত্রিপুরা জানান, আজ হারি বৈসুর মধ্যদিয়ে আমাদের বৈসু উৎসব শুরু হয়েছে। এই উৎসবে প্রশাসনে কর্মরত নারী কর্মকতারাও অংশ নেন।
ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর অনেকে আজ নতুন বছরের মঙ্গল কামনায় মাতাই পুকুরি বা দেবতা পুকুর যান পূজা দিতে। এই স্থান ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর কাছে পবিত্র স্থান হিসেবে পরিচিত।
ঢাকা/রূপায়ন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উৎসব জনগ ষ ঠ
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাগে পুরস্কৃত ‘নট আ ফিকশন’,অনলাইনে মুক্তি ১ মে
প্রাগ চলচ্চিত্র উৎসব, ২০২৫ এ বেস্ট সুপার শর্ট ফিল্মের পুরষ্কার জিতেছে বাংলাদেশের ওয়ান শট ফিল্ম ‘নট আ ফিকশন’। এটি নির্মাণ করেছেন তরুণ নির্মাতা শাহনেওয়াজ খান সিজু। এর আগে তিনটি অস্কার এবং দুটি কানাডিয়ান স্ক্রিন এওয়ার্ডস কোয়ালিফাইং উৎসব ঘুরে আসা এই ছবিটি মূলত একটি ঐতিহাসিক দলীল যা গত দুই যুগে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ঘটে যাওয়া অসংখ্য বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে কথা বলে।
চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগের কিনো পাইলোটু থিয়েটারে গত ২৩ থেকে ২৬ এপ্রিল আসর বসেছিল ফিল্মফ্রিওয়ের র্যাং কিং এ পূর্ব ইউরোপের সেরা হিসেবে খ্যাত এই উৎসবের। উৎসবের এবারের আসরে জমা পরা ৯৫টি দেশের ৩২৬৬টি ছবির মধ্যে অফিসিয়াল সিলেকশন পেয়েছিলো ৭২টি ছবি যার মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রতিনিধি ছিলো এই ছবিটি। গত ২৬ এপ্রিল প্রাগ সময় রাত ৯টায় উৎসবের গালা নাইটে ঘোষণা করা হয় পুরষ্কার বিজয়ীদের নাম যেখানে বেস্ট সুপার শর্ট ফিল্মের এওয়ার্ড পায় ‘নট আ ফিকশন’।
এই উৎসবের বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন কান চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৩ এর পাম ডি অর স্পেশাল মেনশন ‘শর্ট ফিল্ম’ বিজয়ী নির্মাতা ও অভিনেত্রী গুন্নুর মার্টিনসডোত্তির স্লুটার এবং পোলিশ নির্মাতা এলজবিয়েতা বেঙ্কোভস্কা যার ছবি ‘ওলেনা’ ২০১৩ সালের কান উৎসবের অফিসিয়াল সিলেকশন ছিলো। এর মাধ্যমেই ইউরোপীয়ান প্রিমিয়ার হলো বাংলাদেশের আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে নির্মিত ছবি নট আ ফিকশনের।
পুরষ্কারটি গ্রহণ করার জন্য প্রাগে গিয়েছিলেন নির্মাতা শাহনেওয়াজ খান সিজু। বর্তমানে বার্লিনে অবস্থানরত এই নির্মাতা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ‘এটাই আমার প্রথম আওয়ার্ড যে কারনে এখনো ঘোর কাটছে না। কাফকার শহরে এসে দেশের নাম উজ্জ্বল করতে পারছি এটাই গর্বের বিষয়। তবে এই পুরো জার্নিতে সবচেয়ে ভালো লেগেছে একজন বিচারকের কথা শুনে, তিনি বলেন আমার এই ছবিটির সাথে তীব্র প্রতিযোগিতা করছিলো ইউরোপেরই আরেকটি আলোচিত ছবি যার বাজেট প্রায় ৫০ হাজার ইউরো অথচ এওয়ার্ড উইনার হিসেবে ১০০ ইউরোরও কম বাজেটে নির্মিত নট আ ফিকশন কে নির্বাচিত করার পেছনে গল্প এবং নির্মাণের জোরকেই প্রাধান্য দিয়েছিলেন তারা, কারন বড় বাজেটের ছবি তো অহরহই হতে থাকে কিন্তু নট আ ফিকশনের মতো কাজ হয় কালেভদ্রে এবং তারা এই ছবিটিকে যথাযথ সম্মান জানাতে চেয়েছিলেন এখন একটা ভাল সংবাদ দিতে চাই, আগামী ১ মাসের মধ্যেই অনলাইনে মুক্তি পাবে নট আ ফিকশন।’’
নির্মাতা সিজুর সঙ্গে নট আ ফিকশনের সহ-প্রযোজক হিসেবে কাজ করছেন চলচ্চিত্র সমালোচক ও সাংবাদিক সাদিয়া খালিদ রীতি এবং লাইলি বেগম। ছবিটির গল্প এবং চিত্রনাট্য লিখেছেন মোকাররম রানা। এছাড়া অভিনেতা হিসেবে কাজ করেছেন উদয়ন রাজীব, নাঈমুল আলম মিশু, ঐশিক সামি আহমেদ, রুদ্রনীল আহমেদ, জাওয়াদ সৌধ এবং মিথুন।