পাহাড়ে ‘বৈসাবি’ উৎসবের একাল-সেকাল
Published: 14th, April 2025 GMT
ক্ষণে ক্ষণে ডেকে চলছে বিজু পেক্কো (বিজু পাখি)। বন-পাহাড়ে ফুটেছে বিজু ফুল। পাখির কলতান আর রঙিন ফুলের সৌরভ—এতেই উৎসবের আনন্দধ্বনি ছড়িয়ে পড়েছে পাহাড়ে পাহাড়ে। এই জনপদে এখন চলছে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর বর্ষবরণ উদ্যাপন। ধর্মীয় রীতি ও প্রথা পালনের পাশাপাশি আনন্দ-উদ্যাপনেও আয়োজনের কোনো কমতি নেই। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর এই উৎসব এখন ‘বৈসাবি’ নামে পরিচিতি পেয়েছে।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়ের ‘বৈসাবি’ হয়েছে আগের চেয়ে আরও বর্ণিল ও বর্ণাঢ্য। উৎসবে যুক্ত হয়েছে নানা আয়োজন। সময়ের পাটাতনে দাঁড়িয়ে তাই প্রশ্ন জাগে, তাহলে ৩৫ থেকে ৪০ বছর আগে কেমন ছিল ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর বর্ষবরণ ও বিদায় উদ্যাপন? তখন কীভাবে উদ্যাপন করা হতো মারমাদের সাংগ্রাইং, ম্রোদের সাংক্রান, ত্রিপুরাদের বৈসু, চাকমাদের বিজুসহ অন্য জাতিগোষ্ঠীগুলোর এই উৎসব। তখনকার বর্ষবরণের আয়োজন জানার আগ্রহ ও কৌতূহল রয়েছে অনেকের। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কী কী পরিবর্তন এসেছে? আগের সে স্বতঃস্ফূর্ততা আছে, নাকি অনুষ্ঠাননির্ভর হয়েছে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর এই উৎসব? এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হলো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বর্ষবরণ ও বিদায় আয়োজনের বিবর্তন।
রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি—দেশের এই তিন পার্বত্য জেলায় বসবাস ১১টি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর। তাদের মধ্যে আটটি জাতিগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক-সাংস্কৃতিক উৎসব হচ্ছে ‘বৈসাবি’। মূলত ত্রিপুরাদের বৈসু, মারমাদের সাংগ্রাইয়ের সঙ্গে প্রায় মিল থাকা ম্রোদের চাংক্রান, খেয়াংদের সাংলান, খুমিদের চাংক্রাই ও চাকদের সাংগ্রাই এবং চাকমাদের বিজু ও তঞ্চঙ্গ্যাদের বিষু উৎসবের আদ্যক্ষর থেকে ‘বৈসাবি’ নামের শব্দটি নেওয়া হয়। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে বম, পাংখোয়া ও লুসাইরা খ্রিষ্টীয় নববর্ষ উদ্যাপন করেন।
আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে উৎসব অর্থে বৈসাবি শব্দটি ধীরে ধীরে পরিচিতি লাভ করেছে। এর আগে বিজু, বিষু, বৈসু, সাংগ্রাইং, সাংক্রানসহ আরও বিভিন্ন নামে উৎসব হয়েছে। উৎসবটি সবার অভিন্ন, শুধু নাম ভিন্ন। তবে বেশ কিছু বছর ধরে পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ে বৈসাবি শব্দটি নিয়ে বিতর্ক চলছে। অনেকের মতে, বৈসাবি নামে পাহাড়ে কোনো উৎসব নেই। অন্যরা বলছেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ঐক্যের প্রয়োজনেই বৈসাবি শব্দটি এসেছে।
বৈসাবি নাম আসার সঙ্গে লোকজ উৎসবটির দৃশ্যমান নাগরিক ছোঁয়াও এসেছে। তখন থেকে শোভাযাত্রা, ফুল ভাসানো, মৈত্রী পানিবর্ষণ, ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়াসহ নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে। অবশ্য বান্দরবানে ১৯৭০–এর দশকের মাঝামাঝিতে পাশের দেশ মিয়ানমারের অনুকরণে মৈত্রী পানিবর্ষণ শুরু হয়েছিল। অভিন্ন নাম বৈসাবি করার আগে উৎসবের কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছিল না।
প্রবীণদের গোসল করানোর আয়োজন। গতকাল খাগড়াছড়ির আপার পেরাছড়া এলাকায়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ডাইনির সাজে শাবনূর!
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শাবনূর এখন অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। মাঝেমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টের মাধ্যমে নিজের খবর জানান দেন তিনি। এবার সেই পর্দার প্রিয় নায়িকা হাজির হয়েছেন এক ভিন্ন সাজে—ডাইনির রূপে!
প্রতি বছর ৩১ অক্টোবর বিশ্বের নানা প্রান্তে পালিত হয় ঐতিহ্যবাহী হ্যালোইন উৎসব। পশ্চিমা বিশ্বে এটি এক জনপ্রিয় দিন, যেখানে মানুষ নানা ভুতুড়ে সাজে নিজেদের উপস্থাপন করে। যদিও অনেকেই মনে করেন এটি কেবল ভূতের সাজের উৎসব, আসলে মৃত আত্মাদের স্মরণেই হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী এ দিনটি উদযাপিত হয়।
আরো পড়ুন:
পর্দায় ‘মহল্লা’র ভালো-মন্দ
বাবা হওয়ার কোনো বয়স আছে? সত্তরে কেলসির চমক
সেই উৎসবের আমেজে এবার শামিল হয়েছেন শাবনূরও। ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা এক ছবিতে দেখা গেছে, ছেলে আইজানকে সঙ্গে নিয়ে তিনি সেজেছেন ভয়ংকর এক ডাইনির সাজে—চোখের কোণ বেয়ে নেমে আসছে লাল রক্তের রেখা, সঙ্গে এক ‘ভূতুড়ে’ চেহারার চরিত্র।
ছবির ক্যাপশনে শাবনূর লিখেছেন, “আমি সাধারণ মা নই, আমি একজন দুর্দান্ত মা—যিনি একজন ডাইনিও! হ্যালোইনের শুভেচ্ছা, বাচ্চারা!”
পোস্টের শেষে তিনি যোগ করেছেন, “এটা শুধু মজা করার জন্য।”
ভক্তরা কমেন্টে ভরিয়ে দিয়েছেন শুভেচ্ছা ও প্রশংসায়। কেউ লিখেছেন, “শাবনূর মানেই চমক,’ কেউ আবার জানিয়েছেন, ‘হ্যালোইনেও আপনি আমাদের শাবনূরই—ভালোবাসা রইল।”
ঢাকা/রাহাত/লিপি