স্ত্রীকে দায়ের কোপে ও সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যা, আদালতে আসামির স্বীকারোক্তি
Published: 17th, April 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে স্ত্রী-সন্তানসহ তিনজনকে হত্যা করে বস্তাবন্দী করে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন গ্রেপ্তার ইয়াছিন আলী। গতকাল বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শামসুর রহমানের আদালতে তিনি এই জবানবন্দি দেন।
ওই মামলার আসামি ইয়াছিন আলী নিহত লামিয়ার স্বামী ও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের দক্ষিণপাড়া এলাকার দুলাল মিয়ার ছেলে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ কাইউম খান প্রথম আলোকে বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জে তিন খুনের ঘটনায় আসামি ইয়াছিন মিয়াকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রিমান্ডের চতুর্থ দিনে গতকাল ইয়াছিন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
জবানবন্দির বরাত দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) মো.
মো. হাসিনুজ্জামান আরও জানান, হত্যার পর ইয়াছিন স্ত্রী লামিয়া ও তাঁর বোন স্বপ্নার মাথা ও হাত-পা একটি বস্তায় ভরেন। লামিয়া ও স্বপ্নার মরদেহ কম্বল ও কাঁথা দিয়ে পেঁচিয়ে আরেক বস্তায় ভরেন। পরে বাড়ির সামনে ময়লার ভাগাড়ে তাঁদের তিনজনের মরদেহ চাপা দেন ইয়াছিন। পরে লামিয়া ও স্বপ্নার রক্তমাখা কাপড় লাগেজে ভরে বাসা থেকে ১০০ গজ দূরে পুকুরে ফেলে দেন। ওই একই পুকুরে তিনি হত্যায় ব্যবহৃত বঁটিও ফেলে দেন।
১১ এপ্রিল দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া পুকুরপাড় এলাকা থেকে দুই নারীর খণ্ডিতসহ এক শিশুর অর্ধগলিত বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত লামিয়ার মেজ বোন মুনমুন আক্তার বাদী হয়ে নিহত লামিয়ার স্বামী ইয়াছিন আলী, তাঁর বাবা দুলাল মিয়া এবং বোন শিমু আক্তারকে আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
আরও পড়ুনদুর্গন্ধের সন্ধান খুঁজতে গিয়ে শিশুসহ তিনজনের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার১১ এপ্রিল ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিপণ না পেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশিকে হত্যা
দক্ষিণ আফ্রিকার কুইন্স টাউনে মুক্তিপণ না পেয়ে মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন ইকবাল নামে এক প্রবাসী বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) কুইন্সটাউনের একটি জঙ্গল থেকে আলমগীর হোসেন ইকবালের মরদেহ পাওয়া যায়।
নিহত আলমগীর হোসেন ইকবালের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ সদরের আলীরটেক এলাকায়।
আরো পড়ুন:
বগুড়ায় যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
মামাত বোনকে ধর্ষণ-হত্যা করে নিখোঁজের গল্প সাজায় নয়ন: পুলিশ
স্বজনেরা জানান, গত ২ জুন অপহরণকারীরা নিহতের পরিবারের কাছে প্রথমে ৫ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে এক কোটি টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, আলমগীর হোসেন ইকবাল দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাস করে আসছিল। সেখানে তার নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ইকবালের পরিবারে মা, স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে। তারা বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ শহরে বসবাস করে আসছিলেন।
নিহত আলমগীর হোসেন ইকবালের ভগ্নীপতি শরিফুর রহমান ঢালী বলেন, ‘‘গত ২ জুন রাত ১০টার দিকে নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে গাড়ি থেকে মালামাল আনলোড করার সময় ৪ জন অপহরণকারী ইকবালকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করে নিয়ে যায়। দুদিন পরে ইকবালের স্ত্রীর ফোন নাম্বারে কল করে সাউথ আফ্রিকান ৫০ লাখ (বাংলাদেশি টাকায় ৫ কোটি টাকা) দাবি করে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘একাধিকবার কথা বলার পরিবার এত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে অপহরণকারীরা সর্বশেষ এক কোটি টাকা দাবি করে। কিন্তু, পরিবার এই অর্থ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় অপহরণকারীরা তাকে হত্যা করে। ১২ জুন একটি জঙ্গল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আগামী ১৫ জুন রাতে কাতার এয়ারওয়েজে নিহত আলমগীর হোসেন ইকবালের মরদেহ দেশে আসবে।’’
ঢাকা/অনিক/রাজীব