বটি কোপে স্ত্রীকে ও ছেলেকে শ্বাসরোধে হত্যা, আদালতে জবানবন্দি
Published: 17th, April 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজিতে স্ত্রী-সন্তানসহ তিনজনকে হত্যার পর বস্তাবন্দী করে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন গ্রেপ্তার ইয়াছিন আলী। বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শামসুর রহমানের আদালতে তিনি এ জবানবন্দি দেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত পুলিশ পরিদর্শক মো.
জানা গেছে, তিন হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বটি বাড়ির কাছে একটি পুকুর থেকে সোমবার দুপুরে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর আগে ওই একই পুকুর থেকে রক্তমাখা জামাকাপড়ভরা একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মাদ শাহীনুর আলম বলেন, স্ত্রী লামিয়া আক্তার, ৪ বছরের সন্তান আব্দুল্লাহ ও লামিয়ার বড়বোন স্বপ্না আক্তারকে ইয়াছিন একাই হত্যা করে লাশ বস্তায় ভরে বাড়ির পাশে ইট-সুরকির নিচে চাপা দেন। গত ১১ এপ্রিল দুপুরে লাশ তিনটি উদ্ধার করা হয় এবং ওই দিনই ইয়াছিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াছিন পুলিশের কাছে স্বীকার করে, সে একাই স্ত্রী সন্তানসহ তিনজনকে হত্যা করে। মাদকের টাকার জন্য মারধর ও ভাঙচুরের অভিযোগে সৎ মায়ের দায়ের করা মামলায় তাকে পুলিশ ২৭ রমজান গ্রেপ্তার করে। ঈদুল ফিতরের ২ দিন আগে সে জামিনে ছাড়া পায়।
পুলিশ আরও জানায়, ইয়াছিনের স্ত্রী লামিয়া ছেলে লাবীব ও বড়বোন স্বপ্না আক্তারকে নিয়ে মিজমিজি পুকুরপাড় এলাকার আক্তার হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকতো। ইয়াছিন জামিন পাওয়ার পর গত ৮ এপ্রিল স্ত্রী বাসায় যায়। এ সময় লামিয়া ও ইয়াছিন এর মধ্যে ঝগড়া হয়। এর একপর্যায়ে লামিয়ার বড়বোন স্বপ্না বটি নিয়ে তেড়ে আসেন। তার কাছ থেকে বটি কেড়ে নিয়ে ইয়াছিন স্ত্রীর গলায় কোপ দিলে দেহ থেকে গলা বিচ্ছিন্ন হয়। তখন স্বপ্না আক্তার চিৎকার শুরু করলে ইয়াছিন তাকেও কুপিয়ে গলা, হাত-পা বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এবং ছেলে লাবীবকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সে। পরে লামিয়া ও স্বপ্নার বিচ্ছিন্ন মাথা ও হাত-পা বস্তায় ভরে। আর দেহ দুটি আরেকটি বস্তায় ধরে। এছাড়া ছেলের মরদেহ কম্বলে পেঁচিয়ে ফেলে। সেই তিনটি মরদেহ নিয়ে রাস্তার পাশে ইট-সুরকির নিচে চাপা দেয় ইয়াছিন।
পুলিশকে ইয়াছিন আরও জানায়, ৮ এপ্রিল রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে সে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত
নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বন্দর প্রেসক্লাবের ২০২৫-২৭ মেয়াদের নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বন্দর প্রেসক্লাবের নবাগত সভাপতি আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল আলম জাহিদের সঞ্চালনায় নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন। প্রধান আলোচক ছিলেন বন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সিআইডি) হারুন অর রশিদ, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টি, বন্দর থানার ওসি লিয়াকত আলী, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আনিসুর রহমান, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন মিয়া সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন সিদ্দিকী প্রমুখ।
উদ্বোধকের বক্তব্যে সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম বলেন, বন্দর প্রেসক্লাবের নবাগত কমিটির সকলকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানায়। আজকে তিন বিষয়ে আজকে গুরুত্ব বহন করে। এক. পেশাগত নিয়ে তাদের সম্মান নিয়ে কথাটা, দুই. সাংবাদিকদের প্রশিক্ষিণের ব্যাপারটা, তিন. হলো আমাদের বিষয় নিয়ে।
সেটা হলো, বেগম খালেদা জিয়া সরকার মেয়াদকালে একটি সমানজ্জল্য পালন করতে পেরেছিলাম। আমাদের তখন স্বার্থক ছিলো বন্দর প্রেসক্লাবকে একটি জমি দিতে সক্ষম হয়েছিলাম। আজকের বন্দর প্রেসক্লাব সেটা স্বীকার করে নিলো সেটা কৃর্তত্ব আমার নয়, এটার কৃর্তত্ব বেগম খালেদা জিয়া। তিনি দিয়েছিলেন বলে আমাদের স্বার্থকতা পেলাম।
তিনি আরো বলেন, একটা কথা বিরাজমান, হলুদ সাংবাদিকতা। এই শব্দটা এখন ডেঙ্গু’র মত অবস্থা। এটা আমার কাছে দুঃখজনক অবস্থা যারা সৎ সাংবাদিকতা হিসেবে পেশাকে গ্রহণ করেছেন, করেন তাদের জন্য কষ্টকর বিষয়। আশা করবো, আপনাদের ঘর আপনাদের ঠিক রাখতে হবে। সংবাদ প্রকাশ করার আগে অবশ্যই যাচাই বাছাই করা উচিত।
সংবাদে বিশেষ বিশ্লেষণ করে প্রকাশ করা ভালো। একটি দুসময় আমরা পাড় হয়ে এসেছি। চার সংবাদপত্র ছাড়া বাকি বিলুপ্ত করা হয়েছিলো। এখন সাংবাদিক পেশা মহান হিসেবে ধরে রাখতে হবে। রাজনীতিবিদ সাথে সাংবাদিক সম্পর্ক পারিবারিকভাবে হয়ে যায়। আমাদের কর্মদক্ষতা সাংবাদিকরা লিখনী মাধ্যমে প্রকাশ করেন।
সাংবাদিকদের দক্ষতা কারণে আমাদের কাজের গতি বৃদ্ধি পায়। এই পেশা কারথে আমাদের উৎসাহ করে কাজ করার। বন্দর প্রেসক্লাব ও নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের এখানে সাধারণ সম্পাদক আছেন, দুই প্রেসক্লাবই আমার নির্বাচনী এলাকার ভিতরে। আমার ব্যক্তিভাবে কোন প্রয়োজন হয়, তাহলে সকল কিছুতে প্রস্তুত।
প্রধান অতিথি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও পিআইডি সদস্য আবু সালেহ আকন বলেছেন, মফস্বল সাংবাদিক আর কেন্দ্রীয় সাংবাদিক বলে কিছু নেই। আমরা সবাই গণমাধ্যম কর্মী সবাই সাংবাদিক। তবে স্থানীয়ভাবে যারা পত্রিকাগুলোতে কাজ করেন তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করেন।
কিন্তু ঠিকমতো তারা বেতন ভাতা পান না। ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী তাদের বেতন ভাতা পরিশোধ করা হয় না। স্থানীয় সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী বেতন ভাতা পরিশোধ করা উচিত। যে সমস্ত পত্রিকা ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের ব্যর্থ সেগুলোকে বন্ধ করে দেওয়া উচিত।