এসএসসি পরামর্শ ২০২৫: গণিতে ভালো নম্বর পাওয়ার সহজ উপায়
Published: 18th, April 2025 GMT
প্রিয়, এসএসসি পরীক্ষার্থী, এরপরই গণিত পরীক্ষা (২১ এপ্রিল)। গণিত সিলেবাসের নির্ধারিত বিষয়বস্তু অনুশীলন করা শুরু করে দাও। তুমি একজন দায়িত্ববান শিক্ষার্থী। তুমি তোমার দায়িত্বের প্রতি অনেক যত্নশীল। সারা বছর ঠিকমতো গণিত অনুশীলন করেছ। তাই তোমার মনোবল অনেক, আত্মবিশ্বাসও অনেক। তাই গণিতকে ভয় পাওয়া কিছু নাই। পরীক্ষার হলে প্রশ্নপত্রটি হাতে পেয়ে প্রথমেই তুমি মনোযোগ দিয়ে পড়বে। এতেই তোমার সবকিছু মনে পড়ে যাবে আর পরীক্ষা দেওয়া তোমার জন্য সহজ হয়ে যাবে।
অনুশীলন করঅনুশীলনের করে আরেক বার প্রস্তুতি ঝালাই করে নাও। একসঙ্গে কয়েকটি অধ্যায় অনুশীলন না করে যে অধ্যায়টি বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা অনুশীলন কর। প্রথমবারেই সব সমস্যার সমাধান নির্ভুলভাবে পারবে—সে জন্য তোমার ধৈর্য থাকতে হবে। কোনো রকম দুশ্চিন্তা করবে না।
আরও পড়ুনএসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য জরুরি ৯টি নির্দেশনা০৮ এপ্রিল ২০২৫বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তরগণিত বিষয়টি তোমরা সারা বছর শ্রেণি কার্যক্রমসহ বাসায় অনুশীলন করেছ। বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর শিখতে গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ, বোর্ড পরীক্ষায় বহুনির্বাচনি ও সৃজনশীল অংশে আলাদা আলাদা নম্বর পেয়ে পাস করতে হবে। তা ছাড়া বিষয়ভিত্তিক গ্রেড পয়েন্ট বাড়ানোর জন্য বহুনির্বাচনি অংশে পূর্ণ নম্বর পাওয়া অনেক জরুরি। কম সময়ে সঠিকভাবে উত্তরগুলো পারার জন্য অধ্যায়ভিত্তিক মৌলিক ধারণাগুলো অনুশীলন করবে।
বহুনির্বাচনি অংশের ৩০ নম্বরের বিভাজন যেমন হবে
‘ক’ বিভাগ (বীজগণিত) থেকে ৯/১০টি প্রশ্ন থাকবে।
‘খ’ বিভাগ (জ্যামিতি) থেকে ৯/১০টি প্রশ্ন থাকবে।
‘গ’ বিভাগ (ত্রিকোণমিতি ও পরিমিতি) থেকে ৮/৯টি প্রশ্ন থাকবে।
‘ঘ’ বিভাগ (পরিসংখ্যান) থেকে ২/৩টি প্রশ্ন থাকবে।
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের কাঠামো
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের কাঠামো কেমন হবে তা নিয়ে চিন্তা করবে না। বহুনির্বাচনি প্রশ্নের সব ধরনের পরীক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখেই করা হয়। যেমন—
—সহজ মান-৩০%(৯টি),
—মধ্যম মান-৫০% (১৫টি) এবং
—কঠিন মান-২০% (৬টি)।
আরও পড়ুনজাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেবে সরকার, আবেদন শুরু১৫ এপ্রিল ২০২৫বহুনির্বাচনির উত্তরে বৃত্ত ভরাট—
১.
২. বহুনির্বাচনি অংশে OMR সিটে প্রতিটি প্রশ্নের বিপরীতে একটি করে মোট ৩০টি বৃত্ত কালো কালির বলপয়েন্ট কলম দিয়ে ভরাট করতে হবে।
৩. মনে রেখো, একটি প্রশ্নের বিপরীতে একাধিক বৃত্ত ভরাট করা যাবে না। সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
৪. বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর OMR সিটে বৃত্ত ভরাট করার সময় ভুল করা যাবে না। বৃত্ত ভুল ভরাট করলে কিন্তু কেটে ঠিক করার সুযোগ নাই।
৫. মনে রেখো, কোনো বহুনির্বাচনি কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে ৪০-৫০ সেকেন্ড পাবে। কোনোটি আবার ৬০-৭০ সেকেন্ড পাবে। তাই তোমাকে অবশ্যই সময়ের প্রতি নজর রাখতে হবে।
৬. কোনো কোনো বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর করতে রাফ করার প্রয়োজন হবে। তখন মূল খাতার পেছনের কোনো একটি পৃষ্ঠা ব্যবহার করতে পারবে।
সৃজনশীল অংশ
সৃজনশীল অংশে প্রতিটি উদ্দীপক পাঠ্যবইয়ের থাকা সমস্যাগুলোর আলোকেই তৈরি হয়। তবে পাঠ্যবই থেকে হুবহু থাকে না। মৌলিক ধারণা ঠিক রেখে বা গুণগত পরিবর্তন না করে শুধু কাঠামোগত বা অক্ষর বা সংখ্যাভিত্তিক পরিবর্তন করে উদ্দীপক বানানো হয়। অনেক সময় একাধিক অধ্যায় থেকে সমন্বয় করে উদ্দীপক তৈরি করা হয়। পাঠ্যবইয়ের প্রদত্ত তত্ত্ব, তথ্য, সূত্র ও গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলো অনুশীলন করলে প্রশ্নের উদ্দীপক বুঝতে কোনো সমস্যা হবে না। সৃজনশীল অংশের মোট নম্বর ৭০। সময় থাকবে ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। ৪টি বিভাগ থেকে মোট ৭টি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে।
আরও পড়ুনএসএসসি–২০২৫ পরীক্ষা, শিক্ষার্থীদের শেষ মুহূর্তের করণীয়০৬ এপ্রিল ২০২৫সৃজনশীল অংশে কোন বিভাগ থেকে কয়টা প্রশ্ন
‘ক’ বিভাগ (বীজগণিত): প্রশ্ন থাকবে ৩টি। উত্তর দিতে হবে ২টির। প্রশ্নের নম্বর থাকবে (২ + ৪ + ৪) ´ ২ = ২০।
‘খ’ বিভাগ (জ্যামিতি): প্রশ্ন থাকবে ৩টি। উত্তর দিতে হবে ২টির। প্রশ্নের নম্বর থাকবে (২ + ৪ + ৪) ´ ২ = ২০।
‘গ’ বিভাগ (ত্রিকোণমিতি ও পরিমিতি): প্রশ্ন থাকবে ৩টি। উত্তর দিতে হবে ২টির। প্রশ্নের নম্বর থাকবে (২ + ৪ + ৪) ´ ২ = ২০।
‘ঘ’ বিভাগ (পরিসংখ্যান): প্রশ্ন থাকবে ২টি। উত্তর দিতে হবে ১টির। প্রশ্নের নম্বর থাকবে (২ + ৪ + ৪) ´ ১ = ১০।
পরীক্ষার সময় মনে রাখা জরুরি—
১. গণিত পরীক্ষার প্রথমে ‘বহুনির্বাচনি অংশ’ হবে। পরে হবে ‘সৃজনশীল বা রচনামূলক অংশ’।
২. সৃজনশীল বা রচনামূলক অংশের সময় কোনোভাবেই বহুনির্বাচনি অংশের পরীক্ষার কথা মনে করে দুশ্চিন্তা করবে না।
৩. সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লেখার সময় পরীক্ষার খাতার ওপরে ও বাঁ পাশে কালো কালির কলম বা পেনসিল দিয়ে মার্জিন করবে।
৪. প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর লেখার পর একটু জায়গা ফাঁকা রাখবে। কোনো রকম ঘিচিঘিচি করে লিখবে না।
৫. প্রতিটি সৃজনশীল প্রশ্ন তিনটি অংশ থাকে। ‘ক’ নম্বর প্রশ্নটি উদ্দীপকের বাইরেও হতে পারে। তবে যে অধ্যায় থেকে উদ্দীপক তৈরি করা
হবে, প্রশ্নটি ওই অধ্যায় থেকেই সাধারণত হয়ে থাকে।
৬. সৃজনশীল প্রশ্নের ‘খ’ ও ‘গ’ নম্বর প্রশ্ন দুটি উদ্দীপকের আলোকে তৈরি করা হয়। সে জন্য ‘খ’ ও ‘গ’ নম্বর প্রশ্নে সমাধান উদ্দীপক ছাড়া করা যাবে না।
৭. সৃজনশীল প্রশ্নের ‘ক’, ‘খ’ ও ‘গ’ নম্বর প্রশ্ন তিনটি কোনো অবস্থাতেই ‘নির্ভরশীল’ হবে না। ‘নির্ভরশীল’শব্দটির অর্থ হল অর্থ একটি প্রশ্নের উত্তর অন্যটি সমাধানের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে না।
৮. জ্যামিতিক চিত্র অবশ্যই শার্প করা পেনসিল দিয়ে পরিষ্কার করে আঁকবে।
৯. পরিসংখ্যানে গ্রাফ করার সময় গ্রাফ পেপারে পেনসিল দিয়ে লেবেল করে গ্রাফ করবে।
১০. অঙ্কের দরকারি স্থানে একক লিখবে। উত্তর আসন্ন হলে মানের শেষে (প্রায়) লিখবে।
১১. গণিত পরীক্ষায় শিক্ষা বোর্ডের নিয়মানুযায়ী তোমরা ‘সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর’ ব্যবহার করতে পারবে।
১২. পরীক্ষার খাতায় উত্তর লেখা শেষ হরে মনোযোগ সহকারে পুরো খাতাটি রিভিশন দিতে ভুলবে না।
লেখক: রতন কান্তি মণ্ডল, সিনিয়র সহকারী শিক্ষক, উদয়ন উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, ঢাকা
আরও পড়ুনএসএসসি-২০২৫ : বাংলা ১ম পত্রে ভালো নম্বর পাওয়ার কৌশল২৩ মার্চ ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স জনশ ল অ শ পর ক ষ র র জন য র করত সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
৮৭ কোটি টাকা মানিলন্ডারিং, গাজীসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা
সাবেক বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী এবং নারায়ণগঞ্জ (রূপগঞ্জ-১) এর সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী (৭৭) ও তার সাবেক পিএস এমদাদুল হক (৫২) সহ মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে সিআইডি।
মামলার অন্য অভিযুক্তরা হলেন- সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নীলা (৫৭), তোফায়েল আহমেদ আলমাছ (৫৫), মো. মাহাবুবুর রহমান জাকারিয়া মোল্লা (৪৮), মো. আনছার আলী (৫৫), আলফাজ উদ্দিন (৬৩) ও দিমন ভূঁইয়া (৫৫)।
প্রতারণাপূর্বক চাঁদাবাজীর মাধ্যমে ভুয়া দলিল তৈরি করে অবৈধভাবে মোট ২৪০১.৪৬ শতাংশ জমি (যার বর্তমান সরকারি বাজারমূল্য ৮৬ কোটি ৭৮ লাখ ৮৭ হাজার ৬৪৪ টাকা) জবর দখল, হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করায় তাদের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট রূপগঞ্জ থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ৪৩
মামলার এজাহার ও সিআইডি সূত্রে জানাগেছে, অভিযুক্তরা অজ্ঞাত ৭/৮ জন ব্যক্তির সহায়তায় একটি সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র গড়ে তোলে। অপরাধ চক্রটি পরস্পর যোগসাজশে গত ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি হতে ২০২৪ সালের ২০ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ভিকটিম মো. শাহ আলমের ১২৪ শতাংশ, আব্দুস সোবহান মিয়ার ১০ শতাংশ, নাঈম প্রধানের ১৮ শতাংশ, হাসিনা বেগমের ০৯ শতাংশ, আলেয়ার ৪৫ শতাংশ, ইয়াছিন প্রধানের ২৭.৫ শতাংশ, সানজুরা বেগমের ০৪ শতাংশ, মো. আশরাফ উদ্দিন ভুইয়ার ৭২ শতাংশমোস্তফা মনোয়ার ভুইয়ার ৩৪৬ শতাংশ, মো. হাবিব খানের ১৮৩.৫ শতাংশ, রাশিদা ভুইয়ার ১২৪ শতাংশ, আমজাদ আলী ভুইয়ার ৭৬০.৫ শতাংশ, মোবারক ভুইয়ার ৩১ শতাংশ, নূর-ই-তাছলীম তাপসের ৪৩০.৭ শতাংশ, মো. মাহবুবুল হক ভুইয়ার ৭১.৪৭ শতাংশ ও মোহাম্মদ মাহমুদুল হকের ৬৫ শতাংশসহ সর্বমোট ২৪০১.৪৬ শতাংশ জমি যার বর্তমান মূল্য (সরকারি দর অনুযায়ী) ৮৬ কোটি ৭৮ লাখ ৮৭ হাজার ৬৪৪ টাকা পরস্পর সংঘবদ্ধভাবে প্রতারণাপূর্বক চাঁদাবাজির মাধ্যমে ভুয়া দলিল সৃজন করে অবৈধভাবে স্থাবর সম্পত্তি জবর দখল করে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করেছে।
এ বিষয়ে সিনিয়র স্পেশাল জজ, মহানগর আদালত, ঢাকার পারমিশন পিটি. নং- ৬৮৪/২০২৫, তারিখ-৮ জুলাই ২০২৫ খ্রি. মুলে সম্পত্তি ক্রোক করা আছে, যার বর্তমান বাজার মূল্য ৪০০ (চারশত) কোটি টাকা।
ক্রোককৃত সম্পত্তির রিসিভার হিসেবে বিজ্ঞ সিনিয়র স্পেশাল জজ, মহানগর আদালত, ঢাকা সিআইডি প্রধান (এ্যাডিশনাল আইজিপি) কে নিয়োগ করেছেন। ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট এই মামলার তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অজ্ঞাত অপর সদস্যদের শনাক্তকরণ ও অন্যান্য আইনানুগ প্রক্রিয়ার স্বার্থে সিআইডির অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।
মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাবজাল বলেন, মামলাটি থানায় দায়ের হলেও তদন্ত করছে সিআইডি।