সিদ্ধিরগঞ্জে রেলওয়ের সরকারি জমি দখলকে কেন্দ্র করে নীট কনসার্ন গ্রুপ অব ইন্ডস্ট্রিজ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে পাঠানটুলী এলাকায় ছাত্র-জনতার ব্যানারে নীট কনসার্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগে মানববন্ধন ও টিনের বেড়া ভেঙে ফেলায় ঘটনার সূত্রপাত হয়।

এনিয়ে দিনব্যপী চলে উত্তেজনা। বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে দুপক্ষ মুখমোখী অবস্থান নিলে সেনাবাহনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করেন।

এসময় নারায়ণগঞ্জ জেলা সহকারী পুলিশ সুপার হাসিনুজ্জামান ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলমের সঙ্গে বাক বিতণ্ডা হয়  ছাত্রজনতার।

জানা গেছে, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের ঘটনায় করা হত্যা মামলার আসামি পাঠানটুলী এলাকার সাব্বির ভূঁইয়া নীট কনসার্ন গ্রুপের ভেতরে ৪ শতাংশ জমির মালিক দাবি করে আসছেন।

তিনি এ জমি দখলমুক্ত করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আনিককে পাওয়ার নামা দলিল করে দেন। শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে অনিক ১৫-১৫ জন লোক নিয়ে ছাত্রজনতার ব্যানারে জমিদখলকারী নীট কনসার্ন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে। পরে তারা শিল্পপ্রতিষ্ঠানটির দেওয়া টিনের বেড়া ভাঙচুর করে।

তখন প্রতিষ্ঠানের ক্যাডার বাহিনী ও শ্রমিকরা তাদের ধাওয়া দেয়। এতে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে অর্ধশতাধিক স্থানীয় লোকজন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা নীট কনসার্ন গ্রুপের সামনে জড়ো হয়।

তখন নীট কনসার্ন গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত  শ্রমিকের একাংশ ও ক্যাডাররা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হয়ে ভেঙে ফেলা টিনের বেড়াটি আবার লাগিয়ে ফেলে। 

এসময় ছাত্রনেতা লোকজন নিয়ে ক্যাডার ও শ্রমিকদের প্রতিহত করার জন্য পুলিশের দ্বারস্থ হয়। পুলিশ তাদের কথামত কাজ না করায় জেলা সহকারী পুলিশ সুপার হাসিনুজ্জামান ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলমের সঙ্গে অসদাচরণ শুরু করেন। 

পরে বিপুল সংখ্যক সেনাবাহনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পর বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে দুপক্ষ সরে যায়। এতে পরিস্থিত শান্ত হয়। 

জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী নেতা অনিক বলেন, আমি সাব্বির ভূঁইয়ার কাছ থেকে এ জমি পাওয়ার নামা দলিল করে নিয়েছি। জমির দখল ছেড়ে দিতে বলায় ভূমিদস্যু নীট কনসার্ন কর্তৃপক্ষের ক্যাডার বাহিনী আমাদের উপর হামলা করে।

অনিকের অভিযোগ অস্বীকার করে নীট কনসার্স গ্রুপের ডিরেক্টর  মো.

জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা বলেন, মূলত এটা  রেলওয়ের সরকারি জমি। এ জমি আমরা সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়েছি। বছরে সরকারকে ৩৭ লাখ  ১৩ হাজার ৮০৮ টাকা কর দেই।

ছাত্র-জনতার ব্যানারে কিছু লোক এসে জমি দখল করে নিতে আমাদের দেওয়া বেড়া ভেঙ্গে ফেলে। আমাদের এখানে প্রায় ২৬ হাজার শ্রমিক রয়েছে। যদি আমরা হামলা করতাম তাদের অস্তিত্ব থাকতো না।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহিনূর আলম বলেন, সরকারি জমি নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। দুপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে। 

জেলা সহকারী পুলিশ সুপার হাসিনুজ্জামান বলেন, আমরা দুপক্ষকে শান্ত করেছি। বিষয়টি দেখার দায়ীত্ব নিয়েছেন সেনাবাহিনী। 

 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ন ট কনস র ন গ র প স দ ধ রগঞ জ পর স থ ত সরক র র আলম

এছাড়াও পড়ুন:

সিদ্ধিরগঞ্জে প্রবাসী স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর তালা

সিদ্ধিরগঞ্জে জোর পূর্বক সম্পত্তি লিখে নিতে সন্ত্রাসী দিয়ে নিজাম উদ্দিন নামে এক প্রবাসীর ৬ তলা বাড়িতে তালাবদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে তার স্ত্রী উম্মে হাবিবা বিন্দুর বিরুদ্ধে। গত বুধবার (১১ জুন) সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল তাঁতখানা এলাকার প্রবাসী নিজাম উদ্দিনের বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটে।

এ ঘটনায় বন্দর থানার গকুলদাসেরবাগ এলাকার আ: বাতেনের মেয়ে ও প্রবাসী নিজাম উদ্দিনের ভাগ্নী মাহমুদা (৪০) বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ বাজার এলাকার বাসিন্ধা তার মামী উম্মে হাবিবা বিন্দু (২৬), মামীর বাবা বাবুল (৫০) ও মামীর মা সখি (৪৫) সহ আরো অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে আসামী করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।

অভিযোগে মাহমুদা উল্লেখ করেন, গত ৯বছর পূর্বে আমার মামার সাথে উম্মে হাবিবা বিন্দুর বিবাহ হয়। আমার মামার পরিবারে ২টি পুত্র সন্তান আছে। আমার মামা একজন প্রবাসী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী হওয়ার সুবাদে বিবাদীরা আমার মামার টাকা বিভিন্ন ভাবে অপচয় করিত। গত ৫বছর পূর্বে বিবাদী বাবুল আমার মামার কাছ থেকে জমি ক্রয় ও ব্যবসায়ীক কারণে হাওলাত বাবদ ৩৫ লাখ টাকা নিয়ে যায়।

গত ৩ বছর পূর্বে আমার মামা দেশে এসে তার স্ত্রী বিন্দুর কাছে উক্ত টাকা দাবি করলে তিনি ক্ষীপ্ত হয়ে আমার মামাকে অকথ্য ভাষায় গাল মন্দ করিতে থাকে। এসময় আমার মামা উক্ত বিষয়টি তার শ্বশুর বাবুলকে জানাইলে তারা উক্ত টাকা দিব-দিচ্ছি বলে টালবাহানা করতে থাকে।

এরই উপর ভিত্তি করে গত ২ মাস পূর্বে পুনরায় আমার মামা তার শ্বশুরের কাছে টাকা দাবি করলে তিনি উক্ত টাকা দিবে না মর্মে জানায়। এমনকি আমার মামাকে জানায় আমার মামা যদি সিদ্ধিরগঞ্জের তাঁতখানা এলাকার গোদনাইল মৌজাস্থিত ৬তলা বিশিষ্ট বাড়িটি তার স্ত্রীর নামে লিখিয়া না দেয় তাহলে তাকে বড় ধরণের ক্ষতি সাধন করবে।


অভিযোগে মাহমুদা আরো উল্লেখ করেন, গত বুধবার আমার মামার শ্বশুর ও শ্বাশুড়ী সহ আরো ১০/১২ জন সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে গোদনাইল তাঁতখানা এলাকার আমার মামার বাড়ীতে প্রবেশ করে আমার মামার অজ্ঞাতসারে ভাংচুর চালায়।

এসময় উক্ত বাড়ীতে আমার খালা সালেহা (৫০) অবস্থানকালে তারা তাকে বাড়ী থেকে বের করে দেয়। একপর্যায়ে তারা উক্ত বাড়ী তালা বদ্ধ করে চলে যায়। এসময় তারা আমার খালাকে জানায় আমার মামা যদি উক্ত বাড়ী তার স্ত্রীর নামে লিখিয়া না দেয় তাহলে তারা আমার মামাকে জানে মারিয়া ফেলবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযোগের তদন্তকারী সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) হাসান আলী জানান, দুই পক্ষই থানায় অভিযোগ করেছে। তবে বাড়িতে তালা দেয়ার বিষয়ে নিজামের স্ত্রী বিন্দু ও তার শ্বশুর বাবুলকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তারা অস্বীকার করেছে। যেহেতু বিষয়টি পারিবারিক তাই উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিদ্ধিরগঞ্জে প্রবাসী স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর তালা