রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভায় এলেন মহিলা লীগ নেত্রী, দিলেন বক্তব্যও
Published: 19th, April 2025 GMT
শনিবার রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের মতবিনিময় সভায় কিশোরগঞ্জ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভানেত্রী ফাতেমা জহুরা আক্তারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তিনি উপস্থিত হয়ে বক্তৃতাও দেন। তবে পরিচয় দিয়েছেন জেলা উইমেন চেম্বারের সভাপতি হিসেবে। উপস্থিত কয়েকজন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূমকে প্রশ্ন করেছিলেন, কেন এ সভায় মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হলো। হাসনাত কাইয়ূম এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করে জানান, তিনি ফাতেমা জহুরার এ পরিচয়টি জানতেন না। এর ব্যাখ্যা ফাতেমা জহুরাকে দেওয়ার জন্য তিনি অনুরোধ জানান।
ফাতেমা জহুরা মাইক নিয়ে ব্যাখ্যায় বলেন, ‘আমাকে একজন আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রী হিসেবে মহিলা আওয়ামী লীগের পদে রাখা হয়েছিল। কিন্তু আমি কখনই সংগঠনের কোনো কর্মসূচিতে বা আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে যাইনি। আমাকে সংগঠন থেকে অনেকবার বাদ দেওয়ার জন্য অনুরোধও জানিয়েছিলাম। আমি মূলত জেলা উইমেন চেম্বারের সভাপতির পরিচয়টিই সর্বত্র দিয়ে থাকি। এক সময় বাম রাজনীতি করতাম। এখনও সেই মানসিকতা পোষণ করি।’
ফাতেমা জহুরা একবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন। এই বিষয়ে প্রশ্ন করলে তখনও তিনি এফবিসিসিআই কর্মকর্তা হিসেবে গিয়েছেন বলে জবাব দেন।
শনিবার বিকেলে কিশোরগঞ্জ জেলা পাবলিক লাইব্রেরিতে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের পক্ষ থেকে ছাত্র, সাংবাদিক ও সুধীজনদের সঙ্গে ‘দেশ বাঁচাতে প্রয়োজন সংস্কার, সমঝোতা ও নির্বাচন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে প্রধান আলোচক সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম ছাড়াও বক্তব্য দেন বাজিতপুর সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিমল চন্দ্র সরকার, ফতেমা জহুরা আক্তার, মঠখলা কলেজের শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেন, সংগঠনের বাজিতপুর শাখার সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন জেলা কমিটির আহ্বায়ক একেএম মেজবাহ উদ্দিন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ আওয় ম ল গ স গঠন আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
অ্যাপে পরিচয়-প্রেম, বিয়ে করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এলেন চীনের যুবক
ভাষা, সংস্কৃতি ও হাজার মাইলের দূরত্বকে হার মানিয়েছে ভালোবাসা। ভালোবাসার টানে এক তরুণীকে বিয়ে করতে বাংলাদেশে এসেছেন চীনের এক যুবক। গত শুক্রবার রাতে চীন থেকে ঢাকায় পৌঁছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে এক তরুণীর বাসায় আসেন তিনি। আজ রোববার আদালতের মাধ্যমে তাঁরা বিয়ে সম্পন্ন করবেন।
চীনের যুবকের নাম ওয়াং তাও (৩৬)। চীনের হোয়ানান প্রদেশের ওয়াং ইচাং চাওয়ের ছেলে তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের তাহের মিয়ার মেয়ে সুরমা আক্তারের (২২) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক আছে তাঁর। সুরমা একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন এবং ঢাকার লালবাগে থাকেন। আজ রোববার তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন বলে তরুণীর পরিবার জানিয়েছে।
জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছান চীনের যুবক ওয়াং তাও। বিমানবন্দর থেকে চীনের যুবককে আতিথেয়তা দিয়ে নিজ বাড়ি নাসিরনগরের কুন্ডার কোনাপাড়ায় নিয়ে আসেন তরুণী সুরমাসহ তাঁর পরিবারের লোকজন।
স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও তরুণীর পরিবারের দাবি, দেড় থেকে দুই মাস আগে ডেটিং এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে সুরমার পরিচয় হয়। তাঁরা নিয়মিত চ্যাটে যোগাযোগ রাখতে শুরু করেন। তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। বিষয়টি চীনের যুবক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তরুণী নিজ নিজ পরিবারকে জানান। উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাঁরা একে অপরকে বিয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। পরে চীনের যুবক বাংলাদেশ ও চীনের দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসেন। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে দুপুরের পর থেকে চীনের যুবককে দেখার জন্য সুরমার বাড়িতে ভিড় করেন স্থানীয় লোকজন।
সুরমা স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ‘ওয়ার্ল্ড টক’ অ্যাপের মাধ্যমে চীনের যুবক ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক প্রেমে গড়ায়। ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে চ্যাট করতেন। একপর্যায়ে তাঁরা পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের সিদ্ধান্তে পৌঁছান।
সুরমার মা নুরেনা বলেন, ‘আমার মেয়ের ভালোবাসা পেতে চীন থেকে যুবক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে চলে এসেছে। ওই যুবক কোনো ধর্মই বিশ্বাস করে না। মেয়েকে বিয়ে করতে প্রয়োজনে সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে। আগামীকাল (আজ) রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে মুসলিম রীতি মেনে সুরমাকে বিয়ে করবে চীনের যুবক। এতে দুই পরিবারের সম্মতি আছে। আমরা এই বিয়েতে আনন্দিত। মেয়ের খুশিই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
নাসিরনগর থানার কুন্ডা বিট উপপরিদর্শক (এসআই) জাহান-ই-আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে কুন্ডা গ্রামে যাই। পাসপোর্ট দেখে নিশ্চিত হলাম যে যুবক চীনের নাগরিক। ওই তরুণী ঢাকার লালবাগে থাকেন। ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপসের মাধ্যমে তাঁদের পরিচয়। একপর্যায়ে তাঁরা প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। চীনের যুবক ইংরেজি বোঝেন না। তাই কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাঁরা একে অপরের সঙ্গে ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে কথা বলতেন। তরুণী ও তাঁর পরিবার জানিয়েছে, রোববার হলফনামার মাধ্যমে চীনের যুবক মুসলিম হবেন। তারপর তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন।’ তরুণীর বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, চীনের যুবক এক থেকে দেড় মাস থাকবেন। যাওয়ার সময় হয় ওই তরুণীকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন বা পরে নিয়ে যাবেন।