সিদ্ধিরগঞ্জে নাসিক ৪ নং ওয়ার্ড আটি হাউজিং এলাকায় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ অভিযান চালিয়েছে। অভিযানে ৩০ থেকে ৩৫টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে তিতাস কর্তৃপক্ষ। এনিয়ে এলাকাবাসীর কাছে এ অভিযানটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দাড়িয়েছে। 

তারা বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ হাস্যকর একটি অভিযান পরিচালিত করেছেন। হাউজিং এলাকায় তিন শতাধিকের উপরে বহুতল ভবন রয়েছে। তারা ৩০ থেকে ৩৫টি অবৈধ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দায়সারা ও প্রশ্নবিদ্ধ অভিযান করেছে। 

এছাড়াও অভিযান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে অনেককেই বলতে দেখা গেছে যারা বছরের পর বছর অবৈধভাবে তাদের বহুতল ভবনে অগনিত চুলা ব্যবহার করলেও রহস্যজনকভাবে ওইসব ভবনগুলো অভিযান চালায় না তিতাসের কর্মকর্তারা। 

কেউ কেউ বলছেন এসব বাড়ির মালিকরা তিতাসের অসাধু লোকদের ম্যানেজ করে এসব অবৈধ সংযোগ নিয়ে বছরের পর বছর গ্যাস ব্যবহার করছে। এছাড়া যেেেকানো অভিযানের পূর্বে অবৈধ সংযোগ ব্যবহারকারীদের কাছে সংবাদ পৌছে দেয় অসাধু কর্মকর্তারা। এরফলে অভিযানের আগেই তারা অবৈধ সংযোগ ব্যবহারকারীরা সতর্ক হয়ে যায়। 

তবে আভিযানিক কর্মকর্তারা বলেন, সময় স্বল্পতার কারণে আমরা তেমন একটা অভিযান করতে পারিনি। ৩০ থেকে ৩৫টি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। অবৈধ ভাবে যেসব গ্রাহকেরা অতিরিক্ত চুলা ব্যবহার করেছে তাদেরকেও আমরা জরিমানার আওতায় নিয়ে আসব। 

রবিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ তিতাস গ্যাসের ম্যানেজার মোস্তাক মাসুদ ইমরান, ফতুল্লার ম্যানেজার মশিউর রহমান ও নুরুল আফসার উদ্দিনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। 

অভিযানে হাউজিং ৫ নং রোডের বাড়ী নং-৬৪ শহিদুল ইসলামের জমাদ্দার ৬ তলা ভবন,  একই এলাকায় কফিল উদ্দিনের ১ তলা ভবন, আব্দুল মান্নানের ৬ তলা মান্নান ভিলা, ৪ নং রোডের আব্দুল হাই মেম্বারের ৬ তলা ভবন, ২ নং রোডের পুলিশ কর্মকর্তা শাহীন মিয়ার ৬ তলা ভবন ও ৩ নং রোডের আজিজের ৬ তলা ভবন, ৮ নং রোডের মাথায় আমান উল্লাহ আমানের ৬ তলা ভবনসহ ২৫ থেকে ৩০ টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। 

কয়েকজন বাড়ির মালিক বলেন, আমরা কয়েকটি অতিরিক্ত চুলা ব্যবহার করার অপরাধে আমার সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। অথচ আমার পাশের বহুতল ভবন গুলোতে ১৫ থেকে ১৬ টি অতিরিক্ত চুলা ব্যবহারকারীর গ্যাস সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করেনি তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। 

তারা আরো বলেন, ৭নং রোডে শফিক স্বর্ণকারের ৬ তালা ভবন, উকিলের ২ তলা ভবন, ২ নং রোডে সেলিমের সাড়ে পাঁচ তালা ভবন, ৯ নং রোডের সোহেল, আরব আলী, ২ নং রোডে রিয়াজের ৬ তলা ভবন, ২ নং রোডে কাজী সোলেয়মানের সাড়ে ছয় তালা ভবন,৩ নং রোডের অবসরপ্রাপ্ত  ভূমি কর্মকর্তা আয়াত আলির ৬ তলা ভবন, ফরিদ মাস্টারের ৬ তালা ভবন, ৬ নং রোডের মজিবুরের ৬ তলা ভবন ও ৭ এবং ৮ নং রোডের ভবনগুলোর অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেনি তিতাস কর্তৃপক্ষ। 

উক্ত ব্যক্তিদের ভবন গুলোর অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করায় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকাবাসী। আইন যদি সবার জন্য সমান হয় তাহলে রহস্যজনক কারণে উক্ত ভবনগুলোর অবৈধ সংযোগ কেন ছিন্ন করলো না তিতাস কর্তৃপক্ষ। উক্ত বাড়ি গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিতাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করেন বৈধ গ্যাস সংযোগকারীরা। 

এবিষয়ে তিতাস গ্যাসের ফতুল্লার ম্যানেজার মশিউর রহমান বলেন, সময় স্বল্পতার কারণে আমরা তেমন একটা অভিযান করতে পারিনি। ৩০ থেকে ৩৫টি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।  অবৈধ ভাবে যেসব গ্রাহকেরা অতিরিক্ত চুলা ব্যবহার করেছে তাদেরকে আমরা জরিমানার আওতায় নিয়ে আসব। 

তারা যদি ছয় মাসের মধ্যে জরিমানার টাকা পরিশোধ না করে, তাহলে গ্রাহকের বিরুদ্ধে অর্থ ঋণ আদালতে মামলা করা হবে এবং হাউজিং এলাকায় কয়েকদিনের মধ্যে আবারও জোরালো অভিযান পরিচালনা করা হবে ও অবৈধ সংযোগকারী এবং অতিরিক্ত চুলা ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় জিডি করা হবে। 

এ বিষয়ে তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কে মুঠোফোনে বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীরা জানালে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ অব ধ গ য স স য গ ব চ ছ ন ন স য গ ব চ ছ ন ন কর অব ধ স য গ ব ব যবহ র কর কর মকর ত র ৩০ থ ক এল ক য় পর চ ল র অব ধ

এছাড়াও পড়ুন:

পাল্টাপাল্টি হামলার তীব্রতা বাড়ল

ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হামলার তীব্রতা বাড়াচ্ছে দুই দেশ। ইসরায়েলে গত শনিবার রাতভর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। একই রাতে ইরানের গ্যাসক্ষেত্র ও তেল শোধনাগারে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ হামলায় ইরানের কতজন নিহত হয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি।

গতকাল রোববার ছিল দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলার তৃতীয় দিন। শনিবার রাতের পর রোববার দিনের বেলায়ও পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল ও ইরান। এদিন ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানিয়েছে ইয়েমেনের সশস্ত্র

গোষ্ঠী হুতি। চলমান সংঘাতে এই প্রথম ইরানপন্থী কোনো গোষ্ঠী যোগ দিল। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশকে শান্ত করার জন্য প্রচেষ্টা শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ।

গতকাল রাত একটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিল। এ রাতেও তেহরানের নিয়াভারান, ভালিয়াসর ও হাফতে তির স্কয়ার এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ইরানের পূর্বাঞ্চলে মাশহাদ বিমানবন্দরে একটি ‘রিফুয়েলিং’ উড়োজাহাজে আঘাত হানার কথা জানায় ইসরায়েলি বাহিনী। এই উড়োজাহাজগুলো আকাশে থাকা অবস্থায় অন্য উড়োজাহাজে জ্বালানি সরবরাহ করতে সক্ষম। ইরান থেকেও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার খবর পাওয়া গেছে।

ইসরায়েলে ব্যাপক হামলা ইরানের

ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ঠেকানোর কথা বলে গত বৃহস্পতিবার রাতে দেশটিতে প্রথমে হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই রাতে ইসরায়েলের দুই শতাধিক যুদ্ধবিমান ইরানের ‘পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র’ স্থাপনায় আঘাত হানে। শুক্র ও শনিবারও ইরানে হামলা চলে। পাল্টা জবাব দিচ্ছে তেহরানও। তবে ইসরায়েলে শনিবার রাতভর ইরান যে হামলা চালিয়েছে, তা ছিল সবচেয়ে ব্যাপক।

ইসরায়েলে শনিবার প্রথম দফায় ইরানের হামলা শুরু হয় রাত ১১টার পরপর। এ সময় ইসরায়েলের জেরুজালেম ও হাইফা শহরে বেজে ওঠে সাইরেন। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাইফায় অবস্থিত তেল শোধনাগার। পরে রাত আড়াইটার দিকে দ্বিতীয় দফায় হামলা শুরু করে ইরান। তখন তেল আবিব ও জেরুজালেমে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শনিবার রাতে দুই দফায় ৭৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। প্রথম দফায় ছোড়া হয় ৪০টি। এতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের তামরা শহরে চারজন নিহত হন। দ্বিতীয় দফায় ছোড়া হয় ৩৫টি ক্ষেপণাস্ত্র। এর একটি আঘাত হানে তেল আবিবের কাছে বাত ইয়াম এলাকায়। এতে অন্তত ছয়জন নিহত ও প্রায় ২০০ জন আহত হন। এ ছাড়া রেহভোত শহরে আহত হয়েছেন ৪০ জন।

ইসরায়েলি হামলায় জ্বলছে ইরানের শাহরান তেলের ডিপো। গতকাল দেশটির রাজধানী তেহরানের কাছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ