লাতিন আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরে মোরগ লড়াইয়ের আয়োজনে বন্দুকধারীদের গুলিতে ১২ জন নিহত হয়েছেন। সামরিক বাহিনীর ভুয়া সাজপোশাকে ছিলেন ওই বন্দুকধারীরা। গত বৃহস্পতিবার রাতে দেশটির উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলে মানাবি প্রদেশের লা ভ্যালেন্সিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গত শুক্রবার তারা মানাবি থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার অভিযানের সময় অস্ত্র এবং পুলিশ ও সেনাবাহিনীর নকল পোশাক উদ্ধার করা হয়েছে। গুলির ঘটনায় একটি ফৌজদারি তদন্ত শুরু করেছে প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, মোরগ লড়াইয়ের আয়োজনস্থলে ঢুকে বন্দুকধারীরা এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকেন। এ সময় উপস্থিত দর্শনার্থীরা প্রাণ বাঁচনোর চেষ্টা করেন। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হামলাকারীরা একটি অপরাধী চক্রের সদস্য। তাঁদের প্রতিপক্ষের সদস্যরা মোরগ লড়াইয়ের আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন।

ইকুয়েডরে প্রায় ২০টি অপরাধী চক্র সক্রিয় আছে বলে মনে করা হয়। দেশটির প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নোবোয়া বলেছেন, ইকুয়েডরের বিভিন্ন বন্দর ব্যবহার করে বিশ্বের প্রায় ৭০ শতাংশ কোকেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে পাঠানো হয়। এই কোকেন ইকুয়েডরে আসে প্রতিবেশী দেশ কলম্বিয়া ও পেরু থেকে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

এখনো ‘ট্রাভেল পাস’ চাননি তারেক রহমান, মায়ের বিষয়ে চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফেরার জন্য লন্ডনে বাংলাদেশ মিশনের কাছে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ‘ট্রাভেল পাস’ চাননি। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তবে বিএনপির উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া যাবে কি না, সে বিষয়ে বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা মতামত দেবেন। এই মতামতের ওপর অনেকটা নির্ভর করছে খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ সন্তান তারেক রহমান কবে দেশে ফিরবেন। খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার মতো অবস্থা আর নাই—চিকিৎসকেরা এমন সিদ্ধান্ত দিলে তারেক রহমান দ্রুত দেশে ফিরবেন।

দলীয় ওই সূত্র আরও জানায়, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হলে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা সে মতামত দিলে তা অনুসরণ করা হবে। এই ক্ষেত্রে লন্ডন প্রথম অগ্রাধিকার। সেটা হলে তারেক রহমান লন্ডনেই থাকবেন। আর খালেদা জিয়াকে দীর্ঘ সময়ের বিমানযাত্রার বিষয়ে চিকিৎসকেরা অনুমোদন না দিলে স্বল্প দূরত্বের মধ্যে সিঙ্গাপুরকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে তারেক রহমান ওই দেশে যাবেন মায়ের পাশে থাকতে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য রাতে প্রথম আলোকে বলেন, তারেক রহমান দেশে আসার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। মায়ের বিদেশি চিকিৎসক দল ও মেডিকেল বোর্ডের মতামতের অপেক্ষায় আছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় বা যে স্ট্যাটাসে (মর্যাদা) রয়েছেন, সেটাও ওই দেশের আইনি প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করে দেশে ফিরতে চান।

এর আগে গত রোববার তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌ‌হিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘তারেক রহমান দেশে আসতে চাইলে কোনো বিধিনিষেধ নেই। এক দিনে ট্রাভেল পাস দেওয়া সম্ভব।’ তিনি বলেন, ‘এটার নিয়ম হচ্ছে যে যখন পাসপোর্ট থাকে না বা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে, তখন কেউ যদি আসতে চান, তাহলে তাঁকে আমরা ওয়ান টাইম পাস একটা দিয়ে দিই, একবার দেশে আসার জন্য। তো এটাতে এক দিন লাগে। কাজেই এটা উনি যদি আজকে বলেন যে উনি আসবেন, আগামীকাল হয়তো আমরা এটা দিলে পরশু দিন প্লেনে উঠতে পারবেন। কোনো অসুবিধা নাই। এটা আমরা দিতে পারব।’

খালেদা জিয়ার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে গত ২৩ নভেম্বর রাতে তাঁকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। তখন থেকে ১১ দিন ধরে তিনি হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন। তাঁর শারীরিক অবস্থা এখনো উদ্বেগজনক। খালেদা জিয়াকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।  

উন্নত চিকিৎসার জন্য গত জানুয়ারিতে লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেখানে প্রথমে হাসপাতালে এবং পরে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেন তিনি। প্রায় চার মাস লন্ডনে অবস্থানের পর গত ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন।

আরও পড়ুনরাজনৈতিক আশ্রয়: নিজ দেশে ভ্রমণের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের আইন কী বলে১৪ ঘণ্টা আগে

তারেক রহমান ২০০৭ সালে এক-এগারোর পটপরিবর্তনের পর গ্রেপ্তার হন। ২০০৮ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য সপরিবার যুক্তরাজ্যে যান। এর পর থেকে তিনি সে দেশেই আছেন। অবশ্য তাঁর স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান গত মে মাসে খালেদা জিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশে এসেছিলেন। পরে আবার লন্ডনে ফিরে যান। অবশ্য তিনি কোন দেশের পাসপোর্টে তখন দেশে এসেছিলেন, সেটা নিশ্চিত করে জানা যায়নি।  

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। এরপর বিভিন্ন মামলায় তারেক রহমানের সাজার রায় বাতিল এবং কোনো কোনো মামলায় আইনি প্রক্রিয়ায় অব্যাহতি পান। এর পর থেকে তাঁর দেশে ফেরা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।

সর্বশেষ গত সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেছেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ