৪৩তম বিসিএসের ৮ হাজার ৫০১টি নন–ক্যাডার পদ সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ রোববার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. হামিদুর রহমানের সমন্বিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

গত বছরের ২৯ জানুয়ারি ৪৩তম বিসিএসে ৬৪২ জনকে নন–ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া মো.

মারুফ হোসেনসহ ৫০০ প্রার্থী হাইকোর্টে রিট করেন।

ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি আদালত রুলসহ আদেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় তাঁরা ৪৩তম বিসিএসের নন–ক্যাডার পদগুলো সংরক্ষণের জন্য নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করেন।

আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী নাঈম সরদার ও আশরাফুল করিম। সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুনিরুজ্জামান।

আদেশের পর আবেদনকারীদের পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব প্রথম আলোকে বলেন, ৪৩তম বিসিএসের নন–ক্যাডার ৮ হাজার ৫০১টি পদ সংরক্ষণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তিনি আরও বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও পিএসসিসহ বিবাদীদের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পিএসসির আইনজীবী মুনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে কি না, সে বিষয়ে পিএসসির সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আবেদনকারী পক্ষ জানায়, চলতি বছরের মে মাসে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পাঠানো নন–ক্যাডার পদগুলো সমন্বয় করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৮ হাজার ৫০১টি পদে ৪৩তম বিসিএসের নন–ক্যাডার প্রার্থীদের মধ্য থেকে সুপারিশ করার জন্য পিএসসিকে নির্দেশ দেয়। তবে সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও পিএসসি ওই ৮ হাজার ৫০১টি পদের মধ্য থেকে অনেকগুলো পদ প্রত্যাহার করে ৪৪তম বিসিএসের নন–ক্যাডার প্রার্থীদের মধ্য থেকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত জানায়। এমন প্রেক্ষাপটে রিট আবেদনকারী ৭৭৩ জন (প্রথমে ৫০০ জন ও পরে ২৭৩ জন যুক্ত হন) প্রার্থী তাঁদের জন্য ৮ হাজার ৫০১টি নন–ক্যাডার পদ রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে গত সপ্তাহে আবেদনটি করেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নন ক য ড র পদ নন ক য ড র প আইনজ ব প এসস

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজকে আরও এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজকে মারধর, অপহরণচেষ্টা ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

আজ রোববার বাদীপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান গ্রেপ্তার আবেদন মঞ্জুর করেন। পরে এ মামলায় তুরিনের পক্ষে জামিন শুনানি করেন আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন।

শুনানিতে আইনজীবী বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়িত্ব পালনের কারণে তাঁর (তুরিন আফরোজ) বিরুদ্ধে বারবার মামলা দেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনের হত্যা ও হত্যাচেষ্টা এবং সর্বশেষ আজ অপহরণ ও মারধরের অভিযোগে মোট ছয়টি মামলা হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে তুরিন আফরোজকে আদালতে এনে হাজতখানায় রাখা হয়। হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আদালতের উদ্দেশে হাজতখানা থেকে বের করা হয়। এ সময় তাঁর দুই পাশে দুই হাত ধরে রাখেন পুলিশের নারী সদস্যরা। সামনে ও পেছনে ছিলেন ১৫ থেকে ২০ জন পুলিশ সদস্য। নবম তলার ৩২ নম্বর আদালতে তোলার সময় তাঁকে হাস্যোজ্জ্বল দেখা যায়। আদালতের কাঠগড়ায় তোলার সময় তাঁর মাথার হেলমেট খুলে রাখা হয়। বিচারের জন্য অপেক্ষাধীন থাকা অবস্থায় আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

পরে জানানো হয়, ৩৩ নম্বর আদালতে শুনানি হবে। আবারও হেলমেট ও জ্যাকেট পরিয়ে ৩৩ নম্বর আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের একজন আইনজীবী হাসিখুশির কারণ জানতে চেয়ে দূর থেকে প্রশ্ন করলে তিনি কোনো জবাব দেননি। পরে আদালতে তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়।

পরে বিচারকের অনুমতি নিয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়িত্ব পালনের কারণে তাঁর বিরুদ্ধে বারবার মামলা দেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে মোট ছয়টি মামলা হয়েছে। এ মামলার অভিযোগ ২০২২ সালের। অভিযোগ আনা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রভাব খাটিয়েছেন তিনি। কিন্তু তিনি ২০১৯ সালে ট্রাইব্যুনাল থেকে পদত্যাগ করেছেন। তিন বছর পর কীভাবে তিনি প্রভাব খাটাবেন? তখন তো তাঁর হাতে কোনো ক্ষমতাই নেই।

আইনজীবী বলেন, ‘তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা। হয়রানি করার জন্য মিথ্যা অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। তিনি অসুস্থ, জামিন পেলে পলাতক হবেন না। যেকোনো শর্তে তাঁর জামিন আবেদন করছি।’

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. কাইয়ুম হোসেন নয়ন বলেন, তুরিন আফরোজ বাদীর কাছ থেকে ৭৮ লাখ টাকায় দুটি বাস কিনেছেন। কিন্তু সব টাকা পরিশোধ না করে বাস নিয়ে যান। বাকি টাকা চাইতে গেলে তুরিন আফরোজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রভাব খাটিয়ে বাদীকে হুমকি দেন এবং বাদীর বাসায় গিয়ে ভাঙচুরের পর তাঁর মেয়েকে অপহরণের চেষ্টা করেন। ২০২২ সালে মামলা করতে গেলে থানা মামলা নেয়নি। পরে তিনি আদালতে মামলা করেন।

শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১ জুলাই দুটি বাস কেনার জন্য বাদীর সঙ্গে ৭৮ লাখ টাকার চুক্তি করেন আসামি তুরিন আফরোজ। এরপর আসামি ৪৮ লাখ টাকা পরিশোধ করে অবশিষ্ট টাকা ২৪ মাসের মধ্যে পরিশোধ করবেন বলে বাস দুটি নিয়ে যান। পরে আসামি কোনো কিস্তির টাকা পরিশোধ না করে বাদীকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেন এবং মারধর করে পেশার প্রভাব দেখান।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল বাদী আসামির কাছে আবার টাকা চাইলে আসামির নির্দেশে ২৫ থেকে ৩০ জন অজ্ঞাতানামা সন্ত্রাসী বাদীর বাসায় গিয়ে বাদীকে অস্ত্রের মুখে মারধর করেন এবং বাদীর সাত বছরের কন্যাসন্তানকে অপহরণের চেষ্টা করেন। ওই সময় বাদী ৯৯৯–এ কল দিলে পুলিশের উপস্থিতিতে বাদীর কন্যাসন্তানকে বাসার বাইরে রেখে যান।

ওই ঘটনায় ২০২২ সালের ১৩ এপ্রিল নাবিশা এন্টারপ্রাইজের প্রতিষ্ঠাতা মনজুর আলম নাহিদ বাদী হয়ে অপহরণচেষ্টা, মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে আদালতে মামলাটি করেন।

গত ৭ এপ্রিল রাতে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর রোডের বাসা থেকে তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরের দিন একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় তাঁর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার সিএমএম আদালত। এর পর থেকে তিনি কারাগারে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চলাকালে ২০১৩ থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত প্রসিকিউটরের দায়িত্বে ছিলেন তুরিন আফরোজ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিরাপত্তার জন্য সুপ্রিম কোর্টের এজলাসে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত থাকবে
  • গুমের মামলায় শুধু সেনা কর্মকর্তাদের আসামি করা নিয়ে প্রশ্ন তাঁদের আইনজীবীর
  • হাদিকে জড়িয়ে মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে অপপ্রচারেরর অভিযোগে মামলার আবেদন
  • ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজকে আরও এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো
  • টিএফআই সেলে গুমের মামলায় অভিযোগ গঠন বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের আদেশ ২১ ডিসেম্বর
  • ইরানে নোবেলজয়ী মানবাধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদি গ্রেপ্তার