Samakal:
2025-09-18@00:54:01 GMT

হাওরে হাওরে ধান কাটার ধুম

Published: 21st, April 2025 GMT

হাওরে হাওরে ধান কাটার ধুম

আবহাওয়া নিয়ে প্রশাসনের বার্তায় উৎকণ্ঠা দেখা দিলেও কয়েক দিন ধরে মেঘমুক্ত দিন মেলায় আপাতত স্বস্তিতে কৃষক। বোরো ধান কাটার ধুম পড়েছে জগন্নাথপুর উপজেলার হাওরে হাওরে। ইতোমধ্যে আবাদ করা এক-তৃতীয়াংশ জমির ধান কৃষকদের গোলায় উঠেছে; জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা। 
১৪ এপ্রিল জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক জরুরি বার্তায় বলা হয়, ১৫ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এতে জেলার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি এবং ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্য হাওরের জমিতে ৮০ ভাগ ধান পাকলেই দ্রুত কাটতে কৃষকদের অনুরোধ জানায় উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ। গত কয়েক দিনের রোদের ঝিলিকে কৃষকের মুখে হাসি দেখা গেছে। 
জগন্নাথপুরের সর্ববৃহৎ নলুয়াসহ কয়েকটি হাওর ঘুরে দেখা যায়, মাঠে মাঠে সোনার ধানের শীষ বাতাসে দুলছে। আধা পাকা বোরো ধানের ম-ম গন্ধে মাতোয়ারা কিষান-কিষানি। চৈত্রের শেষদিকে কিছু জমির আগাম জাতের ধান কাটা শুরু হলেও পহেলা বৈশাখ আনুষ্ঠানিকভাবে ধান কাটা শুরু হয়। এরই মধ্যে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ফসল ঘরে তোলা নিয়ে উৎকণ্ঠা দেখা দেয় হাওরবাসীর মধ্যে। তবে গত কয়েক দিনের রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়ায় কৃষকরা ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। হাওরের অধিকাংশ এলাকা এখনও শুকনো। হাওরের নদ-নদী ও খাল-বিলে এখনও পানি আসেনি। এতে খানিকটা কৃষকদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি লক্ষ্য করা গেছে। 
নলুয়া হাওরের ভুরাখালি গ্রামের কৃষক সুলতান মিয়া বলেন, প্রথমে ফসল ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিলেও এখন আর সেই শঙ্কা নেই। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভয় কেটে গেছে।
আরেক কৃষক ওবায়দুর রহমান বলেন, হাওরজুড়ে ধান কাটার ধুম পড়েছে। বৈশাখে ঝড়-বৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। উপজেলার হাওর, নদ-নদী, খাল এখনও অনেকটা শুকনো। এতে ফসল হারানোর শঙ্কা অনেকটাই কেটে গেছে। 
মইয়ার হাওরের ইকড়ছই গ্রামের কৃষক আশিক মিয়া বলেন, ৮ কেদার জমিতে বোরো আবাদ করেছি। এরই মধ্যে চার কেদার জমির ফসল কাটা শেষ। অবশিষ্ট জমির ফসল এখনও পুরাপুরি পাকেনি। আগামী ৭/৮ দিনে ফসল কাটা কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদী। 
নলুয়া হাওর-বেষ্টিত চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বলেন, উৎকণ্ঠা কাটিয়ে প্রতিটি কৃষক পরিবার এখন বোরো ফসল ঘরে তোলার কাজে ব্যস্ত। 
স্থানীয় কৃষি অধিদপ্তরের সূত্রমতে, এবার জগন্নাথপুরের ছোট-বড় ১৫টি হাওরে ২০ হাজার ৪শ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ বলেন, উপজেলার প্রতিটি হাওরে পুরোদমে চলছে ধান কাটা। যেসব জমির ধান ৮০ ভাগ পেকেছে, সেই জমির ধান দ্রুত কাটার জন্য কৃষকদের বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৩০ ভাগ জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। ধান কাটার জন্য বর্তমানে ৭৪টি মেশিন (কম্বাইন হারভেস্টার) এবং প্রায় ১৮ হাজার শ্রমিক মাঠে কাজ করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ১৫ দিনের মধ্যে হাওরের শতভাগ ধান কাটা শেষ হবে। 
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরকত উল্লাহ বলেন, বর্তমানে উপজেলার হাওরগুলোতে পুরোদমে ধান কাটার উৎসব চলছে। প্রশাসন সার্বক্ষণিক এই বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ধ ন স গ রহ উপজ ল র ক ষকদ র র হ ওর হ ওর র নদ নদ

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের প্রস্তাব মাওবাদীদের
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত