পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সভাপতিকে শোকজ
Published: 23rd, April 2025 GMT
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সভাপতি আবদুল মান্নানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে জেলা বিএনপি। বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসরদের থেকে অভিনন্দন গ্রহণের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগ তাঁকে এ শোকজ করা হয়।
আজ বুধবার দুপুরে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম ও সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন স্বাক্ষরিত শোকজের চিঠি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। চিঠি পাওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বিএনপি নেতা আবদুল মান্নানকে এ ব্যাপারে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
শোকজের চিঠিতে বলা হয়, ‘আপনি বোদা উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের দ্বারা আপনাকে অভিনন্দিত করার সম্মিলিত ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় দলের ভাবমূর্তি ভীষণভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে, যা দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থী। এহেন শৃঙ্খলাপরিপন্থী কার্যকলাপের জন্য কেন আপনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা পত্র প্রাপ্তির ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জবাব প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।’
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৬ বছর পর গত শনিবার বোদা উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে আবদুল মান্নান সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি বোদার ময়দানদীঘি ডিগ্রি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। গত সোমবার সন্ধ্যায় বোদা উপজেলা শহরের ফ্রেন্ডস ক্লাবে বসেন আবদুল মান্নান। তিনি ওই ক্লাবের বর্তমান সভাপতি। এ সময় উপজেলা বিএনপির সভাপতি হওয়ায় ক্লাবের সদস্যরা তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এ সময় ওই ক্লাবের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলমও তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এসব ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। বিষয়টি জানতে পেরে তাঁকে শোকজ করে জেলা বিএনপি।
জানতে চাইলে বিএনপি নেতা আবদুল মান্নান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ১৯৮৩ সালে নবম শ্রেণির বন্ধুরা মিলে ফ্রেন্ডস ক্লাব করেছিলাম। সেখানে বন্ধুদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন দলের অনেকে আছেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় আমি ক্লাবে বসলে অনেকেই আমার সঙ্গে কোলাকুলিসহ হাত মেলান। এ সময় সদস্যরা আমাকে ফুলও দেন। এখানে হয়তো অন্য দলেরও লোক ছিলেন। ওই ছবি কে নাকি ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছেন। কেউ এডিট করেও ছাড়তে পারেন।’ তিনি বলেন, ইতিমধ্যে শোকজের চিঠিটি তিনি হাতে পেয়েছেন। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন বলেন, তাঁর এমন কর্মকাণ্ডে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়েছে। এ জন্য এই নোটিশ করা হয়েছে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সশরীর লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল ম ন ন ন র সদস য ব এনপ র ফ সব ক উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
শিশু শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত, থানায় অভিযোগ করায় নানাকে কুপিয়ে হত্যা
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনায় কয়েক বখাটের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন তার স্বজন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ছাত্রীর নানা আজগর আলীকে (৬০) কুপিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়ভাবে বখাটে হিসেবে পরিচিত আল-আমিন নামে এক যুবক ও তার সহযোগীরা। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নের রায়দক্ষিণ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আজগর আলী রায়দক্ষিণ গ্রামে একটি চায়ের দোকান চালাতেন। অভিযুক্ত আল-আমিন একই গ্রামের মৃত কালু প্রামাণিকের ছেলে।
পুলিশ, নিহতের পরিবার এবং স্থানীয় সূত্র জানায়, যে শিশুটিকে উত্ত্যক্ত করত বখাটেরা, তার মা পাঁচ বছর আগে মারা যান। মেয়েটি নানা আজগর আলীর বাড়িতে থেকে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে পড়ত। বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে শিশুটিকে প্রায় উত্ত্যক্ত এবং অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করত আল-আমিন। এ নিয়ে আজগর আলীসহ মেয়েটির স্বজন বেশ কয়েকবার প্রতিবাদ করলেও কোনো কাজ হয়নি। গত সোমবার মেয়েটির নানা আজগর আলী সিংগাইর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। মঙ্গলবার অভিযোগটি তদন্ত করার পর তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়।
এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয় আল-আমিন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আল-আমিন চার থেকে পাঁচটি মোটরসাইকেলে করে সহযোগীদের নিয়ে আজগর আলীর চায়ের দোকানে যায়। তারা বৃদ্ধ আজগর আলীকে দোকান থেকে বের করে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও লাটিসোঠা দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। হামলাকারীরা চলে গেলে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আজগর আলীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে রাতেই তাঁকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা আজগর আলীকে মৃত ঘোষণা করেন।
আজগর আলীর শ্যালক নজরুল ইসলাম জানান, মাদক সেবন, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধে জড়িত বখাটে আল-আমিন।
সিংগাইর থানার ওসি তৌফিক আজম বলেন, নিহতের বড় ছেলে আইয়ুব খান বুধবার আল-আমিনকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। ঘটনার পর থেকে আল-আমিন ও তার সহযোগীরা পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।