কক্সবাজারের আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদিসহ সেন্টমার্টিনের ১৯ হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার পরিবেশ অধিদপ্তরের দেওয়া মামলার প্রতিবেদন (চার্জশিট) আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক ও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসাদ উদ্দিন মো. আসিফ এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আশেক ইলাহী শাহজাহান নুরী বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিবেদন গত ১৩ মার্চ আদালতে জমা হওয়ার পর শুনানির জন্য ২৪ এপ্রিল দিন ধার্য করা হয়েছিল। এ দিন শুনানি শেষে আদালত ১৯ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

যাদের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে তারা হলেন– আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও সানরাইজ রিসোর্টের মালিক আব্দুর রহমান বদি, বাংলা রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী মো.

ইসহাক, ফ্যান্টাসি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী আবু জাফর প্রিন্স, সি প্রবাল বিচ রিসোর্টের মালিক আব্দুর রহমান, তাঁর ভাই আব্দুল মালেক ও আব্দুর রহিম, লাবিবা আটলান্টিক রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী নজরুল ইসলাম চৌধুরী, ইনচার্জ আমজাদ হোসেন ও ব্যবস্থাপক সুলাইমান চৌধুরী, সানরাইজ রিসোর্টের ব্যবস্থাপক মো. ইসহাক, রয়েল বিচ রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী জাহিদ হোসেন, রূপসী বাংলা রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী আবুবকর ছিদ্দিক ও পরিচালক নিজাম উদ্দিন সুমন, নিঝুমবাড়ি রিসোর্টের মালিক হেলাল উদ্দিন ও তার ভাই সরোয়ার উদ্দিন ভুট্টো, ব্লু রেইন রিসোর্টের মালিক ফেরদৌস আহমেদ তুষার, মোস্তাক আহম্মদ ও আবু সাদাত লাভলু এবং ড্রিমারস প্যারাডাইস রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী অধ্যাপক আব্দুর রশিদ।

জানা যায়, সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকায় প্রাণী ও উদ্ভিদের আবাসস্থল ধ্বংস করে আবাসিক হোটেল নির্মাণ করে পরিচালনার অভিযোগে ২০২১ সালের ২৭ এপ্রিল ১০ হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। টেকনাফ থানায় দায়েরকৃত এ মামলার এজাহারে বলা হয়, সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকায় প্রাণী ও উদ্ভিদের আবাসস্থল ধ্বংস ছাড়াও বিচ থেকে বালু উত্তোলন করে নিচ জমি ভরাট করা, সরকারি জমি দখল এবং অবৈধভাবে আবাসিক হোটেল-রিসোর্ট নির্মাণ ও পরিচালনা করে পরিবেশ এবং প্রতিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করা হয়েছে। পরে মামলাটির দীর্ঘ তদন্ত শেষে এজাহারভুক্ত আসামি ছাড়াও আরও ৯ জনকে অন্তর্ভুক্ত করে ১৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ র প ত র পর য় ন স ন টম র ট ন পর য় ন

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ