ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে দেশটির সঙ্গে তৃতীয় দফায় বৈঠক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার ওমানের রাজধানী মাসকাটে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে আলোচনায় অগ্রগতির কথা জানিয়েছে দুই দেশই। একই সঙ্গে আগামী সপ্তাহে আবারও আলোচনায় বসার বিষয়ে একমত হয়েছে তারা।

শনিবার এ বৈঠকের নেতৃত্ব দেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এবং যুক্তরাষ্ট্রের দূত স্টিভ উইটকফ। বৈঠকের পর পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আলোচনা ‘ইতিবাচক ও ফলপ্রসূ’ হয়েছে। আর আব্বাস আরাগচি বলেছেন, আগামী বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন মতপার্থক্য কীভাবে আরও কমানো যায়, তা যাচাই–বাছাই করে দেখবেন তাঁরা।

এর আগে গত দুই সপ্তাহে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় মাসকাট ও ইতালির রাজধানী রোমে। আগামী সপ্তাহের বৈঠক ইউরোপে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান যুক্তরাষ্ট্রের ওই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে এখনো অনেক কাজ বাকি রয়েছে। তবে শনিবারের আলোচনায় আরও অগ্রগতি হয়েছে।

২০১৫ সালে ইরানের পরমাণু প্রকল্পসংক্রান্ত একটি চুক্তিতে অংশ নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। ওই চুক্তিতে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সীমিত করার বিনিময়ে দেশটির ওপর থেকে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। নিজের প্রথম মেয়াদে ওই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানুয়ারিতে আবার ক্ষমতায় বসার পর এ নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছেন তিনি।

আরও পড়ুনইরানকে পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ সম্পূর্ণভাবে বাতিল করতে হবে: স্টিভ উইটকফ১৫ এপ্রিল ২০২৫

আলোচনায় যে অগ্রগতি হচ্ছে, তার ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প নিজেও। প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে যাওয়ার পথে উড়োজাহাজে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের (ইরান) সঙ্গে অনেক আলোচনা করেছি। আর আমি মনে করি, আমরা একটি চুক্তিতে একমত হতে যাচ্ছি। অন্য যেকোনো বিকল্পের চেয়ে আমি চুক্তি করতে বেশি পছন্দ করব।’

বন্দরে বিস্ফোরণে নিহত ৫

ইরানের দক্ষিণাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন সাত শতাধিক। জরুরি সেবা বিভাগের বরাত দিয়ে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার দেশটির দক্ষিণ উপকূলে হরমুজগান প্রদেশের শহীদ রাজাই বন্দরে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

কীভাবে এ বিস্ফোরণের সূত্রপাত হয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে বন্দরের কাস্টমস কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, রাসায়নিক ও বিপজ্জনক বিভিন্ন পদার্থ রাখার গুদামে আগুন লাগার পর এ বিস্ফোরণ হয়।

আরও পড়ুনপারমাণবিক কর্মসূচি: যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে পিছু হটবে না ইরান১৭ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত হয় ছ

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন দেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘এই সনদ নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জারি করা হোক এবং প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করা হোক। তবে এই গণভোট অবশ্যই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই হতে হবে, নির্বাচনের পরে নয়।’

আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে তৃতীয় ধাপে তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রফিকুল ইসলাম খান। এ সময় উপস্থিত ছিলে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।

জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ স্বাভাবিকভাবেই আবারও রাস্তায় নেমে আসবে বলে মন্তব্য করেন রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর সে সময়কার দলগুলোর ঐকমত্য থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতায় থাকা দলগুলো সেটি (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) যথাসময়ে বাস্তবায়ন করেনি। পরে আন্দোলনের মাধ্যমেই তা সংবিধানে যুক্ত হয়।

জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হয়েছিল বিচারপতি খায়রুল হকের রায়ের মাধ্যমে। আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করে এ রায় দেওয়ানো হয়েছিল। তাই বিচার বিভাগকে আবার বিতর্কের মুখে না ফেলে সংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে জামায়াত।

জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ঐকমত্য কমিশন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে চারটি বিকল্প নিয়ে কাজ করেছে, যার মধ্যে কমিশন সংবিধানিক আদেশের প্রস্তাবটি সমর্থন করেছে। এই আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের ২২টি আর্টিকেল বাস্তবায়িত হতে পারে। এটি আইনিভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী ভিত্তি।

এক প্রশ্নের জবাবে হামিদুর রহমান বলেন, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করার এখতিয়ার সংসদের নেই, এবং এ ধরনের পরিবর্তন করতে হলে অবশ্যই গণভোটের প্রয়োজন হয়।

জামায়াতে ইসলামী জনগণের অভিপ্রায়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে জামায়াতের এ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষাই হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আইন।

জুলাই সনদের যে আদর্শ ও চেতনা, তা বাস্তবায়ন হওয়া উচিত এবং যারা এই আদর্শের পথে হাঁটবে না, জনগণ তাদের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে করেন হামিদুর রহমান আযাদ। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ এটি প্রমাণ করে যে এ দেশের তরুণসমাজ ও জনগণ নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা চায় এবং জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধাদের পক্ষেই রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাংবিধানিক আদেশ ও গণভোটের সুপারিশ, একমত নয় দলগুলো
  • ‘সংবিধান আদেশ’ জারির সুপারিশ করতে পারে কমিশন: আলী রীয়াজ
  • জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
  • কমিটি গঠন, প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত 
  • বর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ
  • বিএনপি নির্বাচনমুখী কর্মসূচিতে যাবে
  • দলগুলোর সঙ্গে বুধবার আবার আলোচনায় বসছে ঐকমত্য কমিশন
  • ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন হতে হবে
  • জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ ফের এক মাস বাড়ল
  • সব দলের সম্মতিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে এবি পার্টি