নিরীহ কাউকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা যাবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। তিনি বলেন, ‘পুলিশের সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া আছে ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে করা মামলাগুলো যথাযথভাবে তদন্ত করতে হবে। কোনো নিরীহ মানুষকে হয়রানি করা যাবে না।’

দুপুরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

আইজিপি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর একটি মহল হয়রানির উদ্দেশ্যে মূল আসামির সঙ্গে অসংখ্য নিরীহ মানুষকে মামলায় আসামি করছে। এ বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে।’

এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, কেবল তদন্তে যার বিরুদ্ধে দায়ভার পাওয়া যাবে তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট অব অ্যারেস্ট চাওয়া হবে। তাকেই গ্রেপ্তারের কার্যক্রম নেওয়া হবে।

মিথ্যা মামলা রোধে আইনি সীমাবদ্ধতা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই যে মিথ্যা মামলা বলছেন, মামলাটা মিথ্যা, মামলাটা সত্যই। কিন্তু এই যে আসামির সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া, এটা আমরা বন্ধ করতে পারছি না। আইনে আমাদের এই সীমাবদ্ধতা রয়েছে।"

তিনি জানান, কেউ অভিযোগ করলে তা পুলিশকে মামলা হিসেবে রুজু করতে হয়। মামলা সত্য না মিথ্যা এটা যাচাই করার কোন সুযোগ নেই।

‘উনি অভিযোগ যেটা আমাকে দেন ওটাই মামলা হিসেবে আমাকে নিয়ে নিতে হয়। এরপর তদন্তে গিয়ে আমি দেখি আসলে কতটুকু সত্য কতটুকু মিথ্যা। সত্য অংশটুকুই তদন্তে উঠিয়ে নিয়ে আমি আদালতের কাছে পাঠাই।’ বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘পাঁচই আগস্টের পরে যেটা দেখা গেছে অনেকে অসৎ উদ্দেশ্য মানুষের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের জন্য, হ্যারাস করার জন্য, ভয় দেখানোর জন্য অপরাধটা হয়তো করেছেন পাঁচজন কি দশজন, কিন্তু ওখানে আরো তিনশো লোকের নাম দিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকালও একটা হয়েছে।’

জুলাইয়ের গণ অভ্যুত্থানে কতজন পুলিশ কর্মকর্তা গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি জানান তদন্তের পুরো প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিষয়টি বলা যাবে না।

যারা মিথ্যা মামলা করছেন, তাদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, শুধুমাত্র তদন্ত শেষ হলেই বাদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার অভিযোগ করা যাবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইজ প তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্বকাপে জায়গা করতে বিশ্বকাপজয়ীকে কোচের দায়িত্ব দিল ইতালি

দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলা যে কতটা গৌরবের আর আনন্দের, সেটা একজন বিশ্বকাপ জয়ের-অভিজ্ঞতাসম্পন্ন খেলোয়াড়ের চেয়ে আর কে ভালো বোঝাতে পারবেন?

আর এমন ভাবনা থেকেই এবার গানারো গাত্তুসোকে জাতীয় ফুটবল দলের কোচ নিয়োগ দিয়েছে ইতালি। চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা করা নিয়ে শঙ্কায় আছে। এর আগে খেলতে পারেনি ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপে। টানা তৃতীয় আসর যাতে দর্শক হয়ে না থাকতে হয়, সেই চেষ্টার অংশ হিসেবে ২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী গাত্তুসোকে দায়িত্ব দিয়েছে ইতালিয়ান ফুটবল ফেডারেশন এফআইজিসি।

২০২৬ বিশ্বকাপের ইউরোপিয়ান বাছাইয়ে ইতালি খেলছে ‘আই’ গ্রুপে। পাঁচ দলের গ্রুপ থেকে শুধু শীর্ষ স্থানধারী দলই বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করতে পারবে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা দল প্লে-অফে খেলার সুযোগ পাবে। এই মুহূর্তে ‘আই’ গ্রুপে ৪ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে নরওয়ে। ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ইসরায়েল। ইতালির অবস্থান তিনে, ২ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট।

গত সপ্তাহে নরওয়ের কাছে ৩-০ ব্যবধানে হারার পরই এফআইজিসি কোচ লুসিয়া স্পালেত্তিকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বিদায় নিশ্চিতের পরও সোমবার মল দোবার বিপক্ষে ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়ান স্পালেত্তি, ম্যাচটি ইতালি ২-০ ব্যবধানে জেতে।

নরওয়ে নিজেদের প্রথম চার ম্যাচের চারটিতেই জেতায় ইতালি এখন চাপে আছে। হাতে এখনো ৬টি ম্যাচ বাকি। তবে শীর্ষস্থানে থাকতে হলে নিজেদের বাকি সব ম্যাচ তো জিততেই হবে, নরওয়েকেও পয়েন্ট হারাতে হবে। আর এমন জটিল পরিস্থিতির মধ্যেই ইতালি দলের দায়িত্ব নিচ্ছেন গাত্তুসো।

৪৭ বছর বয়সী গাত্তুসো ২০০০ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ইতালির জাতীয় দলে খেলেছেন। এর মধ্যে ২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী দলের সেরা পারফরমারদের একজন ছিলেন। সব ম্যাচেই শুরুর একাদশে ছিলেন, পরে জায়গা করে নিয়েছিলেন বিশ্বকাপের অলস্টার একাদশেও। ২০১৩ সালে সুইজারল্যান্ডের ক্লাব সিওনে খেলোয়াড় কাম কোচ হিসেবে কাজ শুরু করেন। তখন থেকে গত ১২ বছরে মোট ৯টি ক্লাবের ডাগআউটে দাঁড়িয়েছেন গাত্তুসো। যার মধ্যে আছে নিজের সাবেক ক্লাব এসি মিলান এবং ভ্যালেন্সিয়া ও মার্শেই। সর্বশেষ ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব হাইদুক স্প্লিটের দায়িত্বে ছিলেন, যা গত মাসে পারস্পরিক সমঝোতায় ছেড়ে দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোচ হিসেবে মোট ৩৭৬টি ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়িয়ে গাত্তুসোর জয়ের হার ৪২.৮২ শতাংশ। জিতেছেন ১৬১টিতে, ড্র ১০৮ আর হার ১০৭-এ।
এখন দেখার বিষয়, ইতালি দলে তার সাফল্যের হার কতটা হয়, বিশেষ করে যখন দলের দরকার শতভাগ জয়। ইতালি জাতীয় দল তাদের পরবর্তী ম্যাচ খেলবে ৫ সেপ্টেম্বর এস্তোনিয়ার বিপক্ষে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ