বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন-নবী খান সোহেল বলেছেন, ‘‘নির্বাচন নিয়ে সরকারের কথার স্টাইল ভালো না। আমাদের ধৈর্যের বাঁধ কেউ যেন না ভাঙে।’’

বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকালে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। 

এ সময় হাবিব উন-নবী খান সোহেল বলেন, ‘‘আমরা সরকারকে সময় দিয়ে নির্দিষ্ট সময় চেয়েছি। কিন্তু আমাদেরও ধৈর্যের সীমা আছে।’’

আরো পড়ুন:

যারা রাজনীতি করি, তারাই হিন্দু-মুসলমানে ভাগ করেছি: মির্জা ফখরুল

জনগণের সরকারের দায়িত্ব খুব কঠিন ও চ্যালেঞ্জের: এ্যানি 

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘‘আপনারা সীমা যদি ক্রস করেন, মনে রাখবেন, বিএনপি কিন্তু আন্দোলন স্থগিত রেখেছে, আন্দোলন বন্ধ করে দেয় নাই। বিএনপির বিরুদ্ধে কথা-বার্তা বললে চিন্তা ভাবনা করে বলবেন। বিএনপি সব শক্তিকে মোকাবেলা করে আজকে এ পর্যায়ে এসেছে।’’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের উদ্দেশ করে বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘‘১৫ দিনের মুক্তিযোদ্ধা যদি এসে বলে ১৫ বছরের মুক্তিযোদ্ধাদের, আপনাদের কোনো অবদান নাই। আমরাই সব, আপনারা যানগা, তা কি হয়?’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘আমাদের নেতা তারেক রহমান পুরো আন্দোলনটার নেতৃত্ব দিলেন। এখন শুনি অমুক মাস্টার মাইন্ড, তমুক মাস্টার মাইন্ড।’’ এ সময় তিনি সমাবেশে আসা নেতা-কর্মীদের জিজ্ঞেস করেন, ‘‘এরা কারা?’’ নেতাকর্মীরা তখন এরা ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ বলে স্লোগান তোলেন।

সারওয়ার হোসেন লিটনের সঞ্চালনায় ও সাইদুজ্জামান মোস্তফার সভাপতিত্বে তখন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ওয়ারেছ আলী মামুন, আবু ওয়াহাব আকন্দ, কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম, সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, জেলা ও উপজেলার নেতারা।

সম্মেলনে প্রথম অধিবেশন শেষে দুই জন প্রার্থী থাকায় তাদের নিয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতারা আলোচনার মাধ্যমে সভাপতি হিসাবে সারওয়ার হোসেন লিটনকে ঘোষণা করেন। সাধারণ সম্পাদক পদে পাঁচ জন প্রার্থীকে নিয়ে আলোচনায় সিদ্ধান্তে না পৌঁছাতে পেরে ভোট গ্রহণ করা হয়। রাতে ভোট গ্রহণ শেষে সাধারণ সম্পাদকের নাম জানা যায়নি। 
 

ঢাকা/রুমন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

অ্যাপে পরিচয়-প্রেম, বিয়ে করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এলেন চীনের যুবক

ভাষা, সংস্কৃতি ও হাজার মাইলের দূরত্বকে হার মানিয়েছে ভালোবাসা। ভালোবাসার টানে এক তরুণীকে বিয়ে করতে বাংলাদেশে এসেছেন চীনের এক যুবক। গত শুক্রবার রাতে চীন থেকে ঢাকায় পৌঁছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে এক তরুণীর বাসায় আসেন তিনি। আজ রোববার আদালতের মাধ্যমে তাঁরা বিয়ে সম্পন্ন করবেন।

চীনের যুবকের নাম ওয়াং তাও (৩৬)। চীনের হোয়ানান প্রদেশের ওয়াং ইচাং চাওয়ের ছেলে তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের তাহের মিয়ার মেয়ে সুরমা আক্তারের (২২) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক আছে তাঁর। সুরমা একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন এবং ঢাকার লালবাগে থাকেন। আজ রোববার তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন বলে তরুণীর পরিবার জানিয়েছে।

জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছান চীনের যুবক ওয়াং তাও। বিমানবন্দর থেকে চীনের যুবককে আতিথেয়তা দিয়ে নিজ বাড়ি নাসিরনগরের কুন্ডার কোনাপাড়ায় নিয়ে আসেন তরুণী সুরমাসহ তাঁর পরিবারের লোকজন।

স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও তরুণীর পরিবারের দাবি, দেড় থেকে দুই মাস আগে ডেটিং এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে সুরমার পরিচয় হয়। তাঁরা নিয়মিত চ্যাটে যোগাযোগ রাখতে শুরু করেন। তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। বিষয়টি চীনের যুবক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তরুণী নিজ নিজ পরিবারকে জানান। উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাঁরা একে অপরকে বিয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। পরে চীনের যুবক বাংলাদেশ ও চীনের দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসেন। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে দুপুরের পর থেকে চীনের যুবককে দেখার জন্য সুরমার বাড়িতে ভিড় করেন স্থানীয় লোকজন।

সুরমা স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ‘ওয়ার্ল্ড টক’ অ্যাপের মাধ্যমে চীনের যুবক ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক প্রেমে গড়ায়। ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে চ্যাট করতেন। একপর্যায়ে তাঁরা পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের সিদ্ধান্তে পৌঁছান।

সুরমার মা নুরেনা বলেন, ‘আমার মেয়ের ভালোবাসা পেতে চীন থেকে যুবক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে চলে এসেছে। ওই যুবক কোনো ধর্মই বিশ্বাস করে না। মেয়েকে বিয়ে করতে প্রয়োজনে সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে। আগামীকাল (আজ) রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে মুসলিম রীতি মেনে সুরমাকে বিয়ে করবে চীনের যুবক। এতে দুই পরিবারের সম্মতি আছে। আমরা এই বিয়েতে আনন্দিত। মেয়ের খুশিই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’

নাসিরনগর থানার কুন্ডা বিট উপপরিদর্শক (এসআই) জাহান-ই-আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে কুন্ডা গ্রামে যাই। পাসপোর্ট দেখে নিশ্চিত হলাম যে যুবক চীনের নাগরিক। ওই তরুণী ঢাকার লালবাগে থাকেন। ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপসের মাধ্যমে তাঁদের পরিচয়। একপর্যায়ে তাঁরা প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। চীনের যুবক ইংরেজি বোঝেন না। তাই কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাঁরা একে অপরের সঙ্গে ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে কথা বলতেন। তরুণী ও তাঁর পরিবার জানিয়েছে, রোববার হলফনামার মাধ্যমে চীনের যুবক মুসলিম হবেন। তারপর তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন।’ তরুণীর বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, চীনের যুবক এক থেকে দেড় মাস থাকবেন। যাওয়ার সময় হয় ওই তরুণীকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন বা পরে নিয়ে যাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ