নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলসহ পাঁচ দফা দাবিতে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশ শুরু হয়েছে। এতে হাজার হাজার নেতকর্মী উপস্থিত হয়েছেন।  

শনিবার (৩ মে) সকাল ৯টায় মহাসমাবেশ শুরু হয়। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী এতে সভাপতিত্ব করছেন। 

এর আগে ভোর থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও তার আশপাশের এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেন সংগঠনটির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।

এ সমাবেশের মূল দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—২০১৩ সালের শাপলা চত্বরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত গণহত্যার বিচার, ফ্যাসিবাদের আমলে দায়েরকৃত সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের কুরআন বিরোধী প্রতিবেদন বাতিল এবং কমিশন বিলুপ্ত করা, সংবিধানে প্রস্তাবিত বহুত্ববাদ বাতিল, আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল এবং ফিলিস্তিন ও ভারতে মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর নিপীড়ন ও গণহত্যা বন্ধের জোর দাবি।

নারী উন্নয়ন নীতি ও শিক্ষা নীতির বিরোধিতা করে ২০১০ সালে গড়ে উঠেছিল কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। তবে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গণজাগরণ আন্দোলনের পাল্টায় রাজপথে নেমে সংগঠনটি বেশি পরিচিতি পায়।

শাহবাগের আন্দোলনের বিপরীতে ব্লগারদের শাস্তির দাবিতে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলে সমাবেশ ডাকে সংগঠনটি। সেই সমাবেশ ঘিরে পুরো মতিঝিল এলাকায় ব্যাপক সহিংসতা আর তাণ্ডব চলে। পরে সেই রাতে যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের মতিঝিল থেকে সরানো হয়।

শাপলা চত্বরের অভিযানে ৬১ জন নিহত হন বলে সে সময় এক প্রতিবেদনে দাবি করে মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’। যদিও পুলিশের দাবি, রাতের অভিযানে কেউ মারা যাননি, আর দিনভর সংঘাতে মারা যান ১১ জন। 

অধিকারের প্রতিবেদনে প্রকাশিত সংখ্যাটি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হলে ওই বছরের ১০ অগাস্ট গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে জিডিটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।

ওই মামলায় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্বে থাকা অধিকার সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানের দুই বছরের কারাদণ্ড হয় গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর। এক মাস জেলে ধাকার পর তারা জামিনে মুক্তি পান।

আদিলুর রহমান খান বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্বে আছেন।

২১ সদস্যের এ সরকারে ধর্ম উপদেষ্টা হয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নায়েবে আমির ও সুন্নি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত আ ফ ম খালিদ হাসান।

ঢাকা/রায়হান/ইভা   

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করতে ৫০ খেলোয়াড়ের চিঠি

খেলাধুলায় ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করার দাবি দিন দিন আরও জোরালো হচ্ছে।

চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে জাতিসংঘের একদল বিশেষজ্ঞ ও স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ এ দাবি তুলেছিলেন। তুরস্ক ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম হাজিওসমানোউলুও ফিফা, উয়েফা ও জাতীয় ফুটবল সংস্থাগুলোর প্রধানদের কাছে চিঠি লিখে ইসরায়েলকে ফুটবল প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এবার নতুন করে আওয়াজ তুলেছেন ৫০ জন সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়। তাঁরা সবাই মিলে সই করা একটি চিঠি পাঠিয়েছেন ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফায়। দাবি একটাই—উয়েফার প্রতিযোগিতা থেকে ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করা হোক।

এ তালিকায় আছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অলরাউন্ডার মঈন আলী, ব্রিটিশ বক্সার জ্যাক চেল্লি, মোনাকোর ফরাসি মিডফিল্ডার পল পগবা, ব্রিটিশ ঘোড়দৌড়ে প্রথম হিজাবধারী জকি খাদিজা মেল্লা, ক্রিস্টাল প্যালেসের মালিয়ান মিডফিল্ডার চিয়েক ডৌকুরে, চেলসির সাবেক মরোক্কান উইঙ্গার হাকিম জিয়েশ, অ্যাস্টন ভিলার ডাচ উইঙ্গার আনোয়ার এল ঘাজি এবং লেস্টার সিটির সাবেক কোচ নাইজেল পিয়ার্সন।

আনোয়ারের গল্পটা আলাদা করে বলার মতো। ২০২৩ সালে তিনি যোগ দিয়েছিলেন জার্মান ক্লাব মেইঞ্জে। কিন্তু ফিলিস্তিনের পক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করায় নভেম্বরে তাঁর সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে ক্লাবটি। পরে জার্মান আদালত রায় দেন, মেইঞ্জ অন্যায় করেছে আনোয়ারের সঙ্গে। বর্তমানে তিনি খেলছেন কাতারের আল সাইলিয়ায়।

উয়েফাকে পাঠানো চিঠিতে ফিলিস্তিনের প্রয়াত ফুটবলার সুলেইমান আল-ওবেইদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। ‘ফিলিস্তিনি পেলে’ নামে খ্যাত সুলেইমান গত আগস্টে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। চিঠিতে লেখা হয়, ‘বেঁচে থাকতে খেলাধুলার মাধ্যমে আশার সঞ্চার করেছেন তিনি। মৃত্যুর মাধ্যমে তিনি মনে করিয়ে দিলেন, কেন খেলাধুলার সংস্থাগুলোর এখনই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।’

আরও পড়ুনআলভারেজদের কাছে রিয়াল মাদ্রিদের বিধ্বস্ত হওয়ার ৪ কারণ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চিঠিতে জাতিসংঘের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনও যুক্ত করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ও নিরাপত্তা বাহিনীর উদ্দেশ্য হলো গাজার ফিলিস্তিনিদের আংশিক বা পুরোপুরি ধ্বংস করার গণহত্যামূলক অভিপ্রায় বাস্তবায়ন করা। ইসরায়েল অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

অ্যাথলেটদের বক্তব্য, খেলাধুলার সংস্থাগুলোর দায়িত্ব হলো এমন দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা দলগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, যাদের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ নিশ্চিত করেছে যে তারা গণহত্যা চালাচ্ছে।

চিঠি পৌঁছে দেওয়ার কাজটি করেছে ব্রিটেনভিত্তিক সংগঠন নুজুম স্পোর্টস। ‘অ্যাথলেটস ফর পিস’ ব্যানারে উয়েফায় জমা দেওয়া এ চিঠিতে বলা হয়েছে, মুসলিম, অমুসলিম কিংবা ধর্মবিশ্বাসহীন—ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়াতে আগ্রহী নানা খেলোয়াড় তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।

ইংল্যান্ডের সাবেক অলরাউন্ডার মঈন আলী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফ্লোটিলার কর্মীদের আটক করা ইসরায়েলি আগ্রাসনের নগ্ন রূপ: গণসংহতি আন্দোলন
  • ফ্লোটিলায় কেমন আছেন শহিদুল আলম?
  • গাজাবাসীর সঙ্গে ৮ মুসলিম দেশের কেন এই বড় বিশ্বাসঘাতকতা
  • সুমুদ ফ্লোটিলার ‌‘মাত্র চারটি নৌকা’ এখন গাজার পথে
  • ধাওয়া, গ্রেপ্তার সত্ত্বেও গাজা অভিমুখী যাত্রায় ‘অবিচল’ ফ্লোটিলা
  • গ্রেটা টুনবার্গসহ গাজা ফ্লোটিরার ২০০ জনকে আটক করেছে ইসরায়েল
  • ট্রাম্প যেভাবে রোহিঙ্গা গণহত্যায় হাওয়া দিচ্ছেন
  • জিয়া উদ্যানের লেকে মাছের পোনা ছাড়ল ‘আমরা বিএনপি পরিবার’
  • খাগড়াছড়িতে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার
  • ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করতে ৫০ খেলোয়াড়ের চিঠি