১৩ মাসের শিশু সঙ্গীতার চিকিৎসার খরচ জোগাতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন মা–বাবা
Published: 18th, November 2025 GMT
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলায় শুভঙ্কর ঠাকুর ও বিজলী ঠাকুর দম্পতির শিশুকন্যা সঙ্গীতা ঠাকুর শারীরিক জটিলতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। টাকার অভাবে জন্মের পর চিকিৎসা ছাড়াই এই দরিদ্র দম্পতিকে নবজাতক নিয়ে হাসপাতাল ছাড়তে হয়। এরপর শিশুটির যকৃৎসহ নাভির আকৃতি অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে। চিকিৎসক জানিয়েছেন, শিশুটির চিকিৎসায় অনেক টাকার প্রয়োজন। সন্তানকে নিয়ে চিকিৎসার খরচ জোগাতে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন এই দম্পতি।
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা সদর ইউনিয়নের ভীমনগর গ্রামের জেলেপাড়ার বাসিন্দা শুভঙ্কর ঠাকুর ও স্ত্রী বিজলী ঠাকুর। সম্প্রতি রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে তাঁদের অসুস্থ সন্তান নিয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। ঘরে ১২ বছরের আরেক সন্তান সমৃদ্ধি ঠাকুরকে নিয়ে জেলেপাড়ার মাত্র ৬ শতাংশ জমির ছোট্ট ঘরে তাঁদের বসবাস।
এই দম্পতি জানান, প্রায় ১৩ মাস আগে ফরিদপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম নেয় সঙ্গীতা। কিন্তু জন্মের পর নাভি, পেটসহ শরীরের ভেতরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ শরীর থেকে আলাদা দেখা যায়। চিকিৎসকেরা তাঁদের জানান, শিশুটি বিরল ও জটিল রোগে আক্রান্ত। দ্রুত অস্ত্রোপচার করার পরামর্শ দেওয়া হয়। দেশেও করা সম্ভব। এ জন্য প্রয়োজন সাত–আট লাখ টাকা। জেলে শুভঙ্করের দিন আনা দিন খাওয়া অবস্থা। নিজের সামর্থ্যের মধ্যে মানুষের কাছ থেকে ধারদেনা করে মেয়ের চিকিৎসা করাতে গত ১৩ মাসে প্রায় চার–পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। অস্ত্রোপচার করার মতো এখন তাঁদের বসবাসের সামান্য ভিটেমাটি ছাড়া আর কিছুই নেই।
মা বিজলী ঠাকুর বলেন, ‘জন্মের পর দেখি, সঙ্গীতার লিভারসহ সবকিছু সামনে বের হয়ে আছে। এটা নাকি অনেক জটিল রোগের কারণে হয়। অনেকে আমার সন্তানকে দেখে মুখ ঘুরিয়ে নেন। আমি তো মা, আমাকে মানুষ করতেই হবে। ভগবান আমারে এমন সন্তান দিলে কী আর করার আছে। এভাবে কয়েক মাস পর ডাক্তাররা অপারেশন করে চামড়া লাগিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু বেরিয়ে থাকা ভেতরের অঙ্গগুলো পেটের ভেতরে ঢোকানো যায়নি। এ জন্য অনেক টাকা লাগবে। তাই মানুষের কাছে সাহায্য চাচ্ছি। সবার দয়ায় যদি আমার সঙ্গীতা ভালো হতে পারে।’
বাবা শুভঙ্কর ঠাকুর বলেন, ফরিদপুরের জাহিদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক এসি পালের তত্ত্বাবধানে সঙ্গীতার চিকিৎসা চলছে। জন্মের পর থেকে ১৩ মাস ধরে প্রতি মাসে দু-তিনবার চিকিৎসকের কাছে যেতে হয়। প্রাথমিকভাবে কিছু চামড়া লাগিয়ে লিভার ঢেকে রাখা হয়েছে। কিছুদিন পর লিভারের ওপর আলাদা চামড়া লাগিয়ে পেটে ঢোকানোর ব্যবস্থা করা হবে। এই অপারেশন করতে সাত-আট লাখ টাকা লাগবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘এত টাকা আমি কোথায় পাব? সরকার যদি সঙ্গীতার চিকিৎসার দায়িত্ব নিত, তাহলে সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকতাম।’
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চৌধুরী মুস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ওই দম্পতির মেয়ে জটিল রোগে আক্রান্ত। বিষয়টি জানার পর উপজেলা প্রশাসন থেকে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে। এ ছাড়া সমাজসেবা অধিদপ্তরেও সাহায্যের আবেদন করা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁদের সরকারি অন্যান্য সুবিধাও প্রদান করা হবে। শিশুটির চিকিৎসায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জন ম র পর চ ক ৎসক সন ত ন ১৩ ম স উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ডিবিএল ও ব্রাইট সিরামিকসের বার্ষিক বিজনেস কনফারেন্স
‘শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিধ্বনি’ প্রতিপাদ্যে সারা দেশের ডিলার, ডিস্ট্রিবিউটর ও বিজনেস–পার্টনারদের নিয় বার্ষিক বিজনেস কনফারেন্স আয়োজন করেছে ডিবিএল ও ব্রাইট সিরামিকস।
গত ১৪ ও ১৫ নভেম্বর হবিগঞ্জের দ্যা প্যালেস লাক্সারি রিসোর্টে এ সম্মেলন হয় বলে সোমবার (১৭ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ডিবিএল।
এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল “শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিধ্বনি”, যেখানে দুই ব্র্যান্ডের সারা দেশের ডিলার, ডিস্ট্রিবিউটর ও বিজনেস–পার্টনাররা একত্রিত হয়ে উদযাপন করলেন অর্জন, অভিজ্ঞতা এবং আগামীর লক্ষ্য।
দুই দিনব্যাপী এই আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হয় হবিগঞ্জ, সিলেটের দ্যা প্যালেস লাক্সারি রিসোর্টে। কনফারেন্সজুড়ে ব্যবসায়িক আলোচনা, টিম অ্যাক্টিভিটি, অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং মনোমুগ্ধকর বিনোদনমূলক সেশন ছিল সমানভাবে সমৃদ্ধ।
আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন ডিবিএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহেদ, ভাইস চেয়ারম্যান এম এ রহিম, ডিরেক্টর মোহাম্মদ আমান আবরার, চিফ বিজনেস অফিসার বায়েজিদ বাশার, হেড অব সেলস মোহাম্মদ শহীদুজ্জামান রাজ, চিফ ফাইনান্সিয়াল অফিসার কাজী সিদ্দিকুল আজম ও হেড অফ মার্কেটিং দিদারুল আলম খান সহ ডিবিএলের সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিম।
বিজনেস কনফারেন্সে ডিবিএল গ্রুপের বোর্ড অব ডাইরেক্টর, ডিবিএল ও ব্রাইট সিরামিকসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা গত বছরের সাফল্য, বাজার সম্প্রসারণ, নতুন প্রোডাক্ট লাইন, মানোন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত অর্জনের ধারাবাহিকতা নিয়ে বক্তব্য রাখেন এবং বিজনেস পার্টনারদের সেরা পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। পাশাপাশি আগামী বছরের জন্য আরও বৃহৎ ভিশন, উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং ডিলার–ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করতে নতুন স্ট্র্যাটেজি ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৬ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে, ডিবিএল সিরামিকস দেশজুড়ে আস্থা অর্জন করেছে তাদের প্রিমিয়াম মান, আধুনিক ডিজাইন, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা এবং পরিবেশবান্ধব উৎপাদন প্রক্রিয়ায়। বিশ্বমানের প্রযুক্তি, উদ্ভাবনী পণ্যসম্ভার ও শক্তিশালী ডিলার নেটওয়ার্কের সম্মিলনে ডিবিএল ও ব্রাইট সিরামিকস আজ দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
ব্যবসায়িক সম্মেলনের শেষ সেশনে কোম্পানির নেতৃত্ব জানান “শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন নয়, শ্রেষ্ঠত্বকে প্রতিদিন পুনর্নির্মাণই ডিবিএলের লক্ষ্য।” ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউটরদের সহযোগিতা, আস্থা এবং পরিশ্রমই ব্র্যান্ডকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সবচেয়ে বড় শক্তি; বক্তারা এ কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন।
দুই দিনের এই মিলনমেলা ডিবিএল পরিবারের সকল সদস্যকে আরো এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দিয়েছে। সম্মেলনের সমাপ্তি ঘটে ভবিষ্যতের প্রতি আশাবাদ এবং একসাথে আরো দূর যাত্রার প্রতিশ্রুতি দিয়ে।
ঢাকা/ইভা