গাজায় আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (আইএসএফ) গঠনের প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। যুক্তরাষ্ট্র প্রণীত এ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে পরিষদের ১৩ সদস্য। কোনো দেশ বিরোধিতা না করলেও রাশিয়া ও চীন ভোটদানে বিরত থাকে।

প্রস্তাবের মাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত গাজার জন্য ২০ দফা পরিকল্পনা আনুষ্ঠানিকভাবে নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন পেল। 

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

পরিকল্পনায় গাজায় যুদ্ধবিরতি টেকসই করা, সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার এবং হামাসসহ সশস্ত্র গোষ্ঠীকে নিরস্ত্র করার প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, একাধিক দেশ আইএসএফে যোগ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাহিনীটি ইসরায়েল, মিসর এবং নবগঠিত ও যাচাইকৃত ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে।

তবে হামাস প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেছে। এক বিবৃতিতে তারা বলে, প্রস্তাবটি গাজায় ‘আন্তর্জাতিক অভিভাবকত্ব’ চাপিয়ে দেয়। এটা তাদের জনগণ ও বিভিন্ন গোষ্ঠী মানতে রাজি নয়।

প্রস্তাবে একটি অন্তর্বর্তী শাসন কাঠামো ‘বোর্ড অব পিস’ (বিওপি) গঠনের কথাও বলা হয়েছে, যা গাজা পুনর্গঠন, মানবিক সহায়তা তদারকি এবং একটি টেকনোক্র্যাট–নির্ভর ফিলিস্তিনি কমিটির কার্যক্রম দেখভাল করবে। গাজার পুনর্গঠনে অর্থায়ন বিশ্বব্যাংক–নিয়ন্ত্রিত একটি ট্রাস্ট ফান্ড থেকে আসবে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, প্রস্তাবটি মাঠপর্যায়ে দ্রুত বাস্তবায়িত হতে হবে এবং দীর্ঘমেয়াদি দুই রাষ্ট্র সমাধানের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে সহায়ক হতে হবে।

প্রস্তাবের পক্ষে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষসহ মিসর, সৌদি আরব, তুরস্কসহ আরো কয়েকটি আরব ও মুসলিম দেশ সমর্থন করে দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানায়।

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রস ত ব

এছাড়াও পড়ুন:

গাজা শান্তি প্রস্তাব জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে দ্রুত অনুমোদনের দাবি কিছু আরব দেশের

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে  ‘দ্রুত অনুমোদনে’র আহ্বান জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্য ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কিছু দেশ। গত শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এ আহ্বান জানায়।

ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আগামী সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে। ভোটাভুটি উপলক্ষে শান্তি পরিকল্পনার একটি নতুন খসড়া তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

সোমবারের ভোটাভুটিতে প্রস্তাবটি যাতে পাস হয়, এ জন্য ১৫ সদস্যের কাউন্সিল সদস্যের সঙ্গে গত সপ্তাহ থেকে আলোচনা শুরু করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। তবে একই দিন গাজা নিয়ে একটি ভিন্ন খসড়া প্রস্তাব প্রকাশ করেছে রাশিয়া, যেখানে ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাবের উল্লেখ করা হয়নি। ওয়াশিংটনের প্রস্তাবের সঙ্গে মস্কোর প্রস্তাবের কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে।

রাশিয়া নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের একটি। তাদের ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা আছে। তারা যেহেতু ওয়াশিংটনের বিকল্প প্রস্তাব প্রকাশ করেছে, তাই ওয়াশিংটনের প্রস্তাব পাস হবে কি না, তা নিয়ে কিছুটা আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই শঙ্কা থেকে মার্কিন কর্মকর্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, তাঁদের প্রস্তাব পাস না হলে ফিলিস্তিনিদের ‘ভয়াবহ পরিণত’ ভোগ করতে হতে পারে।

গত ১০ অক্টোবর ট্রাম্পের যে ২০ দফার ভিত্তিতে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছিল, সেগুলোকে কিছুটা সংস্কার করে নতুন খসড়া প্রস্তাবটি তৈরি করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। গত বৃহস্পতিবার খসড়াটির এক কপি বার্তা সংস্থা এএফপির হাতে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, প্রস্তাবে ‘শান্তি বোর্ডের প্রতিষ্ঠাকে স্বাগত জানানো হয়েছে।’ এই বোর্ড ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় বিধ্বস্ত গাজায় অস্থায়ী প্রশাসনিক সংস্থা হিসেবে কাজ করবে। এর চেয়ারম্যান হবেন ট্রাম্প। ২০২৭ সালের শেষ পর্যন্ত এই বোর্ড কাজ করবে।

ট্রাম্প প্রশাসনের খসড়া প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, গাজায় স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী (আইএসএফ) গঠন করা হবে। বিভিন্ন দেশের সেনাদের সমন্বয়ে গঠিত এই অস্থায়ী বাহিনী ইসরায়েল ও মিসরের সঙ্গে মিলে কাজ করবে। সীমান্ত এলাকা নিরাপদ রাখতে এবং গাজা উপত্যকাকে নিরস্ত্র করতে ফিলিস্তিনের নতুন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পুলিশকে সহায়তা করবে আইএসএফ। ট্রাম্পের আগের ২০ দফায় সম্ভাব্য ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের উল্লেখ না থাকলেও নতুন খসড়ায় সেটার উল্লেখ আছে।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ঘোষণার ৩৭ বছর

গতকাল শনিবার ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ঘোষণার ৩৭ বছর পূর্ণ হয়েছে। ১৯৮৮ সালের ১৫ নভেম্বর আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্সে ফিলিস্তিন জাতীয় কাউন্সিলের এক বৈঠক থেকে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) নিজেদের স্বাধীনতা ঘোষণা করে।

আল-জাজিরা জানিয়েছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এক বার্তায় শুভেচ্ছা জানিয়েছে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়েছে, ‘বন্ধু ও ভ্রাতৃপ্রতিম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা! তুরস্কের নাগরিক হিসেবে আমরা ফিলিস্তিনি জনগণের অচ্ছেদ্য অধিকার রক্ষা এবং তাঁদের ন্যায্য দাবির সমর্থনে অটল থাকব।’

এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের ১৯৩টির মধ্যে ১৫০টি সদস্যদেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ আরও কিছু শক্তিশালী দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দুই রাষ্ট্র সমাধানের আশা নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজা শান্তি প্রস্তাব জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে দ্রুত অনুমোদনের দাবি কিছু আরব দেশের