নোবিপ্রবিতে ছাত্রলীগ নেতার জন্য বিশেষ পরীক্ষার আয়োজন
Published: 3rd, May 2025 GMT
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) উপস্থিতির শর্ত পূরণ না হওয়ায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের এক নেতার স্নাতক সম্পন্ন করতে বিশেষ পরীক্ষার আয়োজন করার অভিযোগ উঠেছে।
তিনি হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা (আইএসএলএম) বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাহ আবজাল খান তপু।
অভিযোগ উঠেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে ক্লাসে ৬০ শতাংশ উপস্থিতির বাধ্যবাধকতা রয়েছে। শাহ আবজাল খান তপুর অষ্টম সেমিস্টারে উপস্থিতির হার ৬০ শতাংশের নিচে ছিল। ফলে তিনি নিয়মিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে ব্যর্থ হন। পরে তার জন্য বিশেষ পরীক্ষার আয়োজন করা হয়।
আরো পড়ুন:
সোনাপুর-নোবিপ্রবি সড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণে অংশীজন সভা
নোবিপ্রবির পুকুরে ছাত্র-ছাত্রীদের গোসলের ছবি ভাইরাল, ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন
উপস্থিতির হার পূরণ করতে বিভাগের শিক্ষকরা ব্যক্তিগতভাবে অনলাইনে ক্লাস নিয়ে এ শর্ত পূরণ করেন। তার জন্য নতুন প্রশ্ন তৈরি থেকে শুরু করে পরীক্ষা সম্পর্কিত সবকিছু আলাদাভাবে তৈরি করা হয়। এছাড়া তার জন্য বিভাগ থেকে পরীক্ষার মডারেশন ফি’ও মওকুফ করা হয়েছে।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ মার্চ থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত শাহ আবজাল খান তপু স্নাতক চতুর্থ বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের সব বিষয়ে অংশগ্রহণ করেন। যেখানে মোট পাঁচটি বিষয়ের পরীক্ষায় তিনি একাই অংশগ্রহণ করেন।
এর আগে, গত ১২ মার্চ এই বিশেষ পরীক্ষার ব্যয় বাবদ প্রশ্ন মডারেশন ফি ব্যতীত ২৩ হাজার ১০ টাকা অগ্রণী ব্যাংকের নোবিপ্রবির হিসাবে জমার দেওয়ার নির্দেশ দেয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর। পরবর্তীতে পরীক্ষার ফি জমা দিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের কথা জানান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের সংশ্লিষ্টরা।
বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইটের তথ্য মতে, রিজেন্ট বোর্ডের ষষ্ঠ সভায় অনুমোদিত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা অধ্যাদেশের ১০(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ক্লাসে ৬০ শতাংশ উপস্থিতি না হলে কোনো শিক্ষার্থী সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবে না। এ ছাড়া কেউ যদি ৬০-৬৯ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিত থাকলে তাকে ১ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।
এছাড়া শিক্ষা অধ্যাদেশের ৯(৪)(গ) অনুচ্ছেদে বিশেষ পরীক্ষার কথা উল্লেখ রয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, কোনো শিক্ষার্থী যদি স্নাতক শেষ করার পর কোনো ব্যাকলগ থাকে, তাহলে তা চতুর্থ বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষা পরে দিতে পারবে। তবে সর্বোচ্চ তিনটি কোর্স বা ১৫ ক্রেডিটের বেশি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
পাশাপাশি তাকে অবশ্যই নিয়মিত পরীক্ষার বসার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় কোনো আইন অথবা অধ্যাদেশে বিশেষ অনুমতি নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিষয়ে উল্লেখ নেই।
নোবিপ্রবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাহ আবজাল খান তপু বলেন, “আমি অসুস্থতা ও নিরাপত্তাজনিত কারণে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারিনি। পরে বিভাগীয় ডিরেক্টরের অনুমতিতে ২৩ হাজার ১০ টাকা জরিমানা দিয়ে পরীক্ষার সুযোগ পাই। তবে দুইটি কোর্সে উপস্থিতি কম থাকায় সেগুলোতে বসতে দেওয়া হয়নি। তখন ৪৫ শতাংশ উপস্থিতি ছিল। পরে অনলাইনে ক্লাস করে ৬০ শতাংশ উপস্থিতি পূরণ করি। এরপর নিয়ম অনুযায়ী ১ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি।”
এ বিষয়ে শিক্ষা বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড.
“এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিশেষ অনুমতি নিয়ে তপুর পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের তার বিরুদ্ধে অভিযোগ না থাকায় মানবিক দিক বিবেচনায় তাকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে,” যুক্ত করেন অধ্যাপক শফিকুল ।
অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার ব্যাপারে ইনস্টিটিউট পরিচালক বলেন, “যেহেতু তার এটেন্ডেন্স কম ছিল, তাই শর্ত পূরণের জন্য ফ্যাকাল্টি মেম্বাররা অনলাইনে ক্লাস নিয়ে তার এটেন্ডেন্স শর্ত পূরণ করেন।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা উপ-নিয়ন্ত্রক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে আইএসএলএম বিভাগের এ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কেউ আবেদন করলে আমাদের দায়িত্ব যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট তা পেশ করা। কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিলে আমাদের কিছু করার নেই।”
বিশেষ নিয়মে পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “শিক্ষা অধ্যাদেশে বিশেষ অনুমতি নিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার আইন নেই। তবে পরীক্ষার খরচ বহন করে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছিল, এজন্য তার পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।”
নোবিপ্রবি উপাচার্য ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, “প্রথমে ৬০ শতাংশ উপস্থিতি না থাকায় পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি ওই শিক্ষার্থীকে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ ভালো বলতে পারবে, কেন তারা তার জন্য পরবর্তীতে আলাদা পরীক্ষা নিয়েছে। আমার কাছে পারমিশনের জন্য এখনো আসেনি। আমি এ বিষয়টি জেনে খতিয়ে দেখব।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ ষ পর ক ষ র পর ক ষ য় অ শ উপস থ ত র শ উপস থ ত ন ব প রব র পর ক ষ ত র জন য র অন ম
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় নির্বাচন তদন্ত কমিশনে ইসির তিন কর্মকর্তা অন্তর্ভুক্ত
গত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের উত্থাপিত অভিযোগ পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে গঠিত তদন্ত কমিশনকে সহায়তা করতে তদন্ত কমিশনে তিন কর্মকর্তাকে সংযুক্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সহকারী সচিব নাজমুল কবীরের সই করা এই সংক্রান্ত চিঠি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
আরো পড়ুন:
সংসদ নির্বাচনে ১৫০ পর্যবেক্ষক পাঠাতে চায় ইইউ
রবিবার সুশীল সমাজ ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে ইসি
চিঠি থেকে জানা যায়, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ১৩ আগস্টের স্মারক অনুযায়ী ৪ জন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৩ জন কর্মকর্তাকে স্থায়ীভাবে তদন্ত কমিশনে সংযুক্তির অনুরোধ করা হলেও পরবর্তীতে নতুনভাবে তিন কর্মকর্তাকে সংযুক্ত করা হলো।
প্রথমে প্রস্তাবিত কর্মকর্তারা ছিলেন নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান, ইসি সচিবালয়ের উপসচিব মো. রফিকুল ইসলাম ও উপসচিব মোহাম্মদ এনামুল হক। তবে পরবর্তীতে তাদের পরিবর্তে নতুন যাদের সংযুক্ত করা হয়েছে তারা হলেন উপসচিব মো. আব্দুল মমিন সরকার, মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ও মো. হেলাল উদ্দিন খান।
ঢাকা/এএএম/এসবি