চীনে পর্যটকবাহী নৌকা ডুবে ৯ জনের মৃত্যু, একজন নিখোঁজ
Published: 5th, May 2025 GMT
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় গুইঝৌ প্রদেশের একটি নদীতে প্রবল বাতাসের কারণে পর্যটকবাহী চারটি নৌকা ডুবে কমপক্ষে নয়জন নিহত এবং ৭০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে সোমবার (৫ মে) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রবিবার গুইঝৌয়ের কিয়ানজি শহরে হঠাৎ প্রবল বাতাসের কারণে নৌকাগুলো নদীতে ডুবে যায়, যার ফলে ৮৪ জন পানিতে পড়ে যায়। তবে একজন ছাড়া সকলকে উদ্ধার করা হয়েছে।
চীন যখন সপ্তাহব্যাপী মে দিবসের ছুটির শেষ প্রান্ত উদযাপন করছে, যা ভ্রমণের জন্য একটি শীর্ষ মৌসুম, তখন এই ঘটনাটি ঘটলো।
আরো পড়ুন:
কাশ্মীর সংকট: চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে ফোনালাপ
চাঁদের মাটির নমুনা ছয় দেশের হাতে তুলে দেবে চীন
ঘটনার পর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষকে ‘সম্ভাব্য সবকিছু’ করার নির্দেশ দেন। তল্লাশি ও উদ্ধারকাজে প্রায় ৫০০ উদ্ধারকর্মী নিয়োগ করা হয়।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট শি উল্লেখ করেছেন যে, সম্প্রতি আরো কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং তিনি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন।।
চীনের কর্তৃপক্ষকে পর্যটন মৌসুমে জননিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্যও বলা হয়েছে।
রবিবারের ঘটনাটি চীনের হুনান প্রদেশে একটি যাত্রীবাহী নৌকা একটি বাণিজ্যিক জাহাজের সাথে ধাক্কা খেয়ে ১১ জন নিহত হওয়ার মাত্র দুই মাস পর ঘটলো।
পূর্বাঞ্চলীয় শহর সুঝোতে সপ্তাহান্তে আরেকটি দুর্ঘটনা ঘটে, যেখানে একটি দর্শনীয় স্থান পরিদর্শনকারী হেলিকপ্টার একটি নতুন খোলা পার্কে বিধ্বস্ত হয়, যার ফলে একজন নিহত এবং চারজন আহত হয়।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান। শনিবার (১ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন ঘোষিত চূড়ান্ত ফলে দেখা যায়, বুধবারের নির্বাচনে তিনি ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। খবর বিবিসির।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনে স্বচ্ছতার অভাব এবং ব্যাপক অস্থিরতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচন ঘিরে দেশটিতে গত কয়েক দিনে সহিংসতায় কয়েক শ’ মানুষ নিহত ও বহু আহত হয়েছে। দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে নিহতের সঠিক সংখ্যা যাচাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরকার সহিংসতার মাত্রা কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অস্থিরতা দমনে দেশজুড়ে কারফিউও বাড়ানো হয়েছে।
ক্ষমতাসীন চামা চা মাপিন্দুজি (সিসিএম) দলের প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসানের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভোটের আগে ভিন্নমত পোষণকারী ও বিরোধীদের ওপর কঠোর দমনপীড়ন চালানোর অভিযোগ রয়েছে। প্রধান দুই বিরোধী দলকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হয়নি।
ফলে নির্বাচনের পরই বৃহত্তম নগরী দার-এস-সালাম ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবারও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। অস্থিরতা বন্ধ করার জন্য সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা সামিয়ার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং অসংখ্য গাড়ি, পেট্রোল স্টেশন এবং থানায় আগুন দেয়।
বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেশিরভাগ তরুণ বিক্ষোভকারীরা, যারা নির্বাচনকে অন্যায্য বলে সমালোচনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, সরকার প্রধান বিরোধী নেতাদের দমন করে গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ন করছে। প্রধান দুই বিরোধী নেতার মধ্যে একজন কারাগারে রয়েছেন এবং অন্যজনকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বিরোধী চাদেমা দলের একজন মুখপাত্র শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে তানজানিয়ার একটি কূটনৈতিক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, কমপক্ষে ৫০০ জন মারা যাওয়ার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কম্বো থাবিত এই সহিংসতাকে ‘এখানে-সেখানে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা বাহিনী খুব দ্রুত ও দৃঢ়তার সাথে কাজ করেছে।”
প্রধান দুই বিরোধী দলীয় নেতার মধ্যে চাদেমা দলের টুন্ডু লিসুকে নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ আটক করা হয়, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং এসিটি-ওয়াজালেনডো দলের নেতা লুহাগা এমপিনাকে আইনি কৌশল খাটিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
১৬টি প্রান্তিক দল, যাদের কারোরই ঐতিহাসিকভাবে উল্লেখযোগ্য জনসমর্থন ছিল না, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
সামিয়ার ক্ষমতাসীন দল সিসিএম, দেশটির রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে কখনও কোনো নির্বাচনে সিসিএম হারেনি।
নির্বাচনের আগে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিরোধী ব্যক্তিত্বদের জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের নিন্দা জানিয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যুর পর ২০২১ সালে তানজানিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সামিয়া ক্ষমতায় আসেন।
ঢাকা/ফিরোজ