কালিহাতীর কুকরাইলে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
Published: 5th, May 2025 GMT
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার রামপুরের কুকরাইলে রায়হান (৩৫) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
সোমবার (৫ মে) সকালে বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহতের বাবা বাদল মিয়া বলেন, “ভোর ৪ টার দিকে মুন্না নামে একজন আমাকে ডাকতে যায় এবং বলে আপনার ছেলেকে মেরে ফেললো। আমি খবর শুনে ছুটে আসি এবং আশপাশে খোঁজ করি। এক পর্যায়ে কুকরাইল গ্রামের একটি পুকুরে রায়হানের রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পাই।”
নিহতের স্ত্রী বলেন; “আমার স্বামী রাত দুইটার দিকে ফোন দিয়ে মুড়ি ভর্তা করার জন্য পেঁয়াজ মরিচ কেটে রাখতে বলে। তার কিছুক্ষণ পরে বাড়িতে এসে কেটে রাখা পেঁয়াজ মরিচ ও মুড়ি চানাচুর নিয়ে যায়। সে সময় তিনি প্রচুর পরিমাণ মদপান করা অবস্থায় ছিলেন। এ সময় তার সাথে আরও একজন লোক থাকলেও আমি চিনতে পারিনি।”
কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম ভূঁইয়া জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে রায়হানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে কি কারণে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে, সেটা তদন্তের পর জানা যাবে। নিহতের নামে একটি হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
নিহত রায়হান নিয়মিত মাদক সেবন এবং মাদক বিক্রির সাথে জড়িত ছিলেন। এ ছাড়াও তিনি বহুল আলোচিত রামপুরের সলিট হত্যা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন।
ঢাকা/কাওছার/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরকে বাঁচাতে সহায়তার ন্যারেটিভটি সম্পূর্ণ মিথ্যা: সাদিক কায়েম
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদেরের বিভিন্ন অভিযোগের জবাব দিয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা মো. আবু সাদিক কায়েম। তিনি দাবি করেছেন, ছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরকে বাঁচাতে সহায়তা করার ন্যারেটিভটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
গতকাল রোববার মধ্যরাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে এই দাবি করেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম।
এর আগে গতকাল রাতে এক ফেসবুক পোস্টে আবদুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে হলে থাকার কারণে ছাত্রশিবিরের যারা সক্রিয়ভাবে ছাত্রলীগ করত, তারা মূলত আইডেনটিটি ক্রাইসিস (আত্মপরিচয়ের সংকট) থেকে উতরানোর জন্য কিছু ক্ষেত্রে অতি উৎসাহী কর্মকাণ্ডে জড়াত। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর সাদিক কায়েম এমন কয়েকজনকে বাঁচাতে তদবির করেন বলে অভিযোগ তোলেন আবদুল কাদের।
আরও পড়ুনছাত্রলীগ পরিচয়ে নির্যাতনের অংশীদার হতেন ‘ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা’, দিলেন অনেকের পরিচয়১৪ ঘণ্টা আগেআবদুল কাদেরের বিভিন্ন অভিযোগের জবাবে ছাত্রশিবির নেতা সাদিক কায়েমের ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো—
১. বিপ্লবের পর দুইটি কনসার্ন ছিল। প্রথমটি ছিল অপরাধের বিচার। দ্বিতীয়টি ছিল বিচারের নামে নিরীহ কোনো ব্যক্তির হয়রানি না হওয়া।
সে সময় অনেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে জানান যে ‘তারা ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত থাকলেও কোনো ফৌজদারি অপরাধ করেননি এবং ব্যক্তিগত আক্রোশবশত মামলায় তাদের নাম যুক্ত করা হচ্ছে।’
স্বাভাবিকভাবেই গণহারে মামলার আশঙ্কা থাকলে কে অপরাধী আর কে নিরপরাধ, তা যাচাই করার জন্য আন্দোলনে সক্রিয় নানা স্টেকহোল্ডারের কাছে তথ্যগুলো ফরওয়ার্ড করে পারস্পরিক ফিডব্যাকের ভিত্তিতে ভেরিফাই করাটা জরুরি ছিল। তাই বেশ কয়েকটি কনসার্ন বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পেয়ে আমি এনসিপি নেতা ও সংস্কার কমিশনের এক সদস্য আরমান হোসেন এবং মাহিনকে ফরওয়ার্ড করি অধিকতর তদন্তের জন্য।
তাদের বলেছি, এমন একটি দাবি এসেছে যে তারা হামলায় যুক্ত ছিলেন না, এই দাবিটি খতিয়ে দেখতে, যাতে অসচেতনতা বশত নিরপরাধ কেউ ভিকটিম না হন।
২. এনসিপি থেকে শুরু করে সব দলের নেতারাই সে সময় এ রকম বিভিন্ন সুপারিশ পেয়েছেন এবং নিজেদের মধ্যে চালাচালি করেছেন ভেরিফাই করার জন্য।
আবদুল কাদের নিজেই উল্লেখ করেছেন, মামলার তালিকাগুলো আমরা পারস্পরিক আলোচনা করে প্রস্তুত করেছি। এখন, নিজেদের মধ্যে কথা না বললে কীভাবে জানব—আসলে কেউ অপরাধী, নাকি তাকে হয়রানি করা হচ্ছে?
৩. স্ক্রিনশটে যাদের নাম যুক্ত আছে, তারা কেউই শিবিরের কেউ না। ৫ আগস্টের পর থেকেও তারা শিবিরের কোনো পদে বা কর্মসূচিতে ছিলেন না।
ফলে, ছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরকে বাঁচাতে সহায়তা করার ন্যারেটিভটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
৪. সাঈদী নামের এক ছেলেকে মামলা থেকে বাঁচাতে আমি নাকি বিভিন্ন জায়গায় কল করেছি—এটাও একটি মিথ্যা।
সাঈদী অপরাধী, এবং তাকে বাঁচানোর কোনো প্রশ্নই আসে না।
৫. মুহসিন হলের একজনের সাথে আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয়েছে। অথচ উক্ত শাহাদাতকে আমি চিনিই না।
তা ছাড়া, কাদের লিখেছে, ‘চব্বিশ সালের সেপ্টেম্বরে এই মামলা হওয়ার পরে শাহাদাতকে নিয়ে একজন পোস্ট করেন। পরবর্তীতে ওই পোস্টদাতার সাথে শিবিরের তৎকালীন সভাপতি সাদিক কায়েম যোগাযোগ করেন।’
আচ্ছা, আমি যদি ফোন দিতেই চাইতাম, তাহলে তো সেটা মামলা হওয়ার আগেই দেওয়ার কথা ছিল। মামলা হওয়ার পরে কেউ একজন ফেসবুকে পোস্ট দিলে সেই পোস্টদাতাকে ফোন দেওয়ার কী দরকার!
এলাকায় থাকতে কোনো সময় শিবির করেছে, তামিরুল মিল্লাতে অধ্যয়নরত অবস্থায় শিবিরের কোনো আয়োজনে অংশ নিয়েছে, শিবিরের নেতা হিসেবে বা শিবির কানেকশন ব্যবহার করে জুলাইয়ের বড় নেতাও হয়েছে—কিন্তু এখন উগ্র শিবিরবিদ্বেষী—এমন মানুষের সংখ্যাও কম না।
যদি জীবনের কোনো এক ধাপে সাময়িক সময়ের জন্য ব্যক্তিগত সুবিধা লাভের উদ্দেশ্যে কেউ শিবিরের সাথে যোগাযোগ রাখে, পরবর্তীতে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে শিবিরবিরোধী ভূমিকা নেয় অথবা ছাত্রলীগে যুক্ত হয়—এবং, এমন নরপশুদের কর্তৃক ছাত্রশিবিরের জনশক্তিরা নিয়মিত ভিক্টিম হওয়া সত্ত্বেও তাদের কর্মকাণ্ডের দায়ভার যদি শিবিরকে নিতে হয়, তাহলে শিবির ছেড়ে বাগছাস-এনসিপিতে চলে যাওয়া ব্যক্তিদের কৃতিত্ব, দুর্নীতিসহ অন্যান্য নেতিবাচক ও ইতিবাচক কর্মকাণ্ডের দায়ভারও তো শিবিরকে নিতে হবে!
সেটা কি যৌক্তিক হবে?