আমরা কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে নই: জি এম কাদের
Published: 10th, May 2025 GMT
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করছে বা করতে চায় এমন কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে আমরা নই। আওয়ামী লীগ সরকার যখন জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেছে, আমরা তার প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু যদি গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়, তাহলে প্রশ্ন আসে একাত্তর সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ব্যাপক গণহত্যার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ দায়ী সংগঠনগুলোর বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে? কারণ, বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গণহত্যা হয়েছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়।’
শনিবার দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় ছাত্র সমাজ কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাতীয় পার্টি সক্রিয়ভাবে রাজপথে ছিল। রংপুরে জাতীয় পার্টির ২ জন নেতা শহীদ হয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের মামলায় আমাদের অন্তত ৪ জন জেল খেটেছেন। মিথ্যা মামলায় আমাদের শতশত নেতা-কর্মী পালিয়ে বেড়িয়েছে। সংসদে ও সংসদের বাইরে আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে কথা বলেছি। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, আন্দোলনে আমাদের অবদান শুধু অস্বীকার করাই হচ্ছে না, ছাত্র হত্যার মামলায় অন্যায়ভাবে আমাদের আসামিও করা হচ্ছে। যারা বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলেছে তারাই বৈষম্য সৃষ্টি করছে- এমন অভিযোগ জনগণের মাঝে ব্যাপকভাবে আলোচিত।’
তিনি বলেন, ‘আমরা নাকি নির্বাচনে গিয়ে আওয়ামী লীগকে বৈধতা দিয়েছি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে আমার নেতৃত্বে প্রায় ২৭০ জন জাতীয় পার্টির প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছিলাম। আমি তখন মন্ত্রী ছিলাম, বিভিন্নভাবে আমাকে নির্বাচনে থাকতে বলা হয়েছিল। পরবর্তীতে আমাকে মন্ত্রী করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, আমি রাজি হইনি। বিএনপি ২০১৪ সালের নির্বাচনে না গেলেও ওই বছর স্থানীয় সরকারের সকল নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। আবার, ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দল নির্বাচনে গিয়েছিল। তাহলে ২০১৪ সালের স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপিসহ অন্যান্য দলগুলো কি আওয়ামী লীগ সরকারকে বৈধতা দেয়নি? ২০২৪ সালের নির্বাচনে আমাদের দলকে ভাঙনের মুখে ফেলে, বিশেষ চাপ সৃষ্টি করে আমাদের নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। আলোচিত বিষয়টি সম্পর্কে অনেকেই অবগত আছেন। তবে, সে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আমরা কোনো বেআইনি কাজ করেছি, মনে হয় না। যদি আমাদের নির্বাচনে যাওয়াকে জনগণের প্রত্যাশার বিপক্ষে মনে করে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়, তবে পরবর্তীতে নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণের রায় গ্রহণ, শ্রেষ্ঠ বিচার বলে গণ্য হতে পারে, বলে বিশ্বাস করি।’
জাতীয় ছাত্র সমাজ কেন্দ্রীয় কমিটির মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের, মহাসচিব মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ এম ক দ র ন ষ দ ধ কর ল ইসল ম আম দ র হয় ছ ল সরক র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
আ.লীগ-জাপাসহ ১৪ দলীয় জোটভুক্ত দলগুলোর নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে ইসিতে গণ অধিকার পরিষদ
আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলীয় জোটভুক্ত দলগুলোর নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানিয়েছে গণ অধিকার পরিষদ।
আজ সোমবার দুপুরে এই দাবিতে একটি আবেদন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের কাছে তুলে দেয় গণ অধিকার পরিষদের একটি প্রতিনিধিদল।
লিখিত আবেদনে বলা হয়, ১০ মে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচার কার্যসম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। জুলাই গণহত্যায় জড়িত থাকার কারণে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের বিষয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। একইভাবে তাদের জোটসঙ্গী জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দল বাংলাদেশের নাগরিকদের ওপর চালানো গণহত্যাকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে গণহত্যাকারীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। এ ছাড়া দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করে গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগ যে একদলীয় ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেছিল, তার অন্যতম সহযোগী ও বৈধতাদানকারী হিসেবে সক্রিয় ছিল জাতীয় পার্টিসহ জোটবদ্ধ বাকি দলগুলো। বিগত তিনটি একতরফা নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করেছে ১৪ দল এবং জাতীয় পার্টি।
আবেদনে বলা হয়, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরপর তিনটি নির্বাচনে জনগণকে ভোট দিতে না দেওয়া, গুম, ক্রসফায়ার, আয়নাঘরে নির্যাতন, দুর্নীতি, ব্যাংক লুট, দেশের সার্বভৌমত্বকে প্রতিবেশী দেশের হাতে তুলে দেওয়া, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ ধ্বংস করাসহ বিগত ১৬ বছরে বাংলাদেশের ওপর চালানো বর্বর আওয়ামী দুঃশাসনের ভিত্তিকে শক্তিশালী করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জনগণের মৌলিক মানবাধিকার হরণের মাধ্যমে তারা নিজেদের রাষ্ট্রদ্রোহী দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাই বাংলাদেশের ওপর নির্মম বর্বরতা চালানো ও ধারাবাহিক দুঃশাসনের প্রধান হোতা আওয়ামী লীগ ও তার জোটসঙ্গী প্রতিটি দলকে গণহত্যা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে দলগুলোর নিবন্ধন বাতিল ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে যথাযথ শাস্তির মুখোমুখি করার আহ্বান জানাচ্ছে গণ অধিকার পরিষদ। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ তাদের দোসরদের নিবন্ধন বাতিল করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে আশা করে গণ অধিকার পরিষদ।
প্রতিনিধিদলে ছিলেন গণ অধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, মাহফুজুর রহমান খান, হাবিবুর রহমান রিজু, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন।