নীলফামারীর ডিমলায় সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির নেতা শাহরিন ইসলাম চৌধুরীকে গণসংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার বিকেলে উপজেলা শহরের ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহরিন ইসলাম চৌধুরী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাগনে। তিনি জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন।

১৮ বছর পর নিজ নির্বাচনী এলাকায় আগমন উপলক্ষে গণসংবর্ধনার আয়োজন করেন উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা। অনুষ্ঠানে শাহরিন ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘এই গণসংবর্ধনা আমার জন্য এক বিরাট সম্মানের বিষয়। আপনারা আমাকে যে ভালোবাসা ও সম্মান দিয়েছেন, তা আমি চিরদিন মনে রাখব।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দেশের মানুষের মুক্তির একমাত্র পথ হচ্ছে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা। আমরা সবাই মিলে সেই লক্ষ্যে কাজ করব।’

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিমলা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো.

মনোয়ার হোসেন। প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি আ খ ম আলমগীর সরকার। বিশেষ বক্তা ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি মো. মাহবুব উর রহমান, ডিমলা উপজেলা বিএনপির জেষ্ঠ সহসভাপতি মো. আরিফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. বদিউজ্জামান রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানী প্রধান।

আয়কর ফাঁকির অভিযোগে করা মামলায় ১৭ বছর আগে শাহরিন ইসলাম চৌধুরীকে আট বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। গত ২২ এপ্রিল তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরেন। এরপর তিনি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এ আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ৮ মে তিনি জামিনে মুক্তি পান। ১৭ মে তিনি নিজ জেলা নীলফামারীতে আসেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র স উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

জকসু প্রার্থীর চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ ৪২, আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পেলেন ৩ জন

নানা অভিযোগ ও ডোপ টেস্টের কারণে প্রাথমিক তালিকা থেকে ৪২ জনকে বাদ দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের (জকসু) নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রীয় সংসদের ২১টি পদে ১৫৬ জন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী হলের সংসদের ১৩টি পদে ৩৩ জনসহ মোট ৩৪টি পদের বিপরীতে ১৮৯ জনকে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়।

ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, জকসুর কেন্দ্রীয় সংসদে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ১৩ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৯ জন এবং সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

তালিকায় আরও দেখা যায়, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র পদে ৪ জন, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদে ৯ জন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ৫ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ৫ জন, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক পদে ৪ জন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে ৮ জন, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদে ৭ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ৭ জন, পরিবহন সম্পাদক পদে ৪ জন, সমাজসেবা ও শিক্ষার্থী কল্যাণ সম্পাদক পদে ১০ জন, পাঠাগার ও সেমিনার সম্পাদক পদে ৭ জন এবং সদস্য পদে ৫৭ জন প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হল সংসদে ১৩টি পদের বিপরীতে মোট ৩৩ জন প্রার্থীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

ওই তালিকায় দেখা যায়, সভাপতি (ভিপি) পদে ৩ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৩ জন, সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২ জন, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ২ জন, সংস্কৃতি সম্পাদক পদে ৪ জন, পাঠাগার সম্পাদক পদে ২ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ২ জন, সমাজসেবা ও শিক্ষার্থীকল্যাণ সম্পাদক পদে ৩ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ৪ জন এবং চারটি সদস্য পদের বিপরীতে ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

এর আগে গত ১৭ ও ১৮ নভেম্বর কেন্দ্রীয় ও হল শিক্ষার্থী সংসদে ৩৪ পদের বিপরীতে ৩১২ জন মনোনয়নপ্রত্যাশীর মধ্যে ২৪৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। গত ২৪ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন তাঁদের মধ্য থেকে ২৩১ জনের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদে ১৯৪ জন এবং হল সংসদে ৩৭ জনের নাম ছিল।

সবশেষ চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা থেকে আরও ৩৮ জন বাদ পড়ায় বর্তমানে কেন্দ্রীয় সংসদে ১৫৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একইভাবে ৮ জন বাদ পড়ায় হল সংসদে ৩৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসান বলেন, ‘আমরা সবার সবকিছু যাচাই-বাছাই করে জকসুর কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদে চূড়ান্ত প্রার্থিতা প্রকাশ করেছি। প্রাথমিকভাবে আমাদের কাছে থাকা প্রার্থীদের সব অভিযোগের ভিত্তিতে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু এতে ডোপ টেস্ট ও বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে অনেক প্রার্থী বাদ পড়েছেন।’

তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট সম্পন্ন করা হয় ৯ ও ১০ ডিসেম্বর। অধ্যাপক মোস্তফা হাসান আরও বলেন, ‘বাদ যাওয়া প্রার্থীরা চাইলে আগামী রোরবার পর্যন্ত আপিল করার সুযোগ রয়েছে।’

তবে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে জকসুর নির্বাচনের কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানান মোস্তফা হাসান।

প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন তিন প্রার্থী

এদিকে জকসু নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাতিলের পর আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন তিন শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাঁদের প্রার্থিতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (রুটিন দায়িত্বে) মো. শেখ রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রার্থিতা ফিরে পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন স্বতন্ত্র প্যানেল থেকে সহসভাপতি (ভিপি) পদের প্রার্থী আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের রাসেল, ক্রীড়া সম্পাদক পদে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের আব্দুল্লাহ সালেহ চৌধুরী এবং বাম জোট সমর্থিত ‘মওলানা ভাসানী ব্রিগেড’ প্যানেলের কার্যনির্বাহী সদস্য প্রার্থী শাহরিয়ার আদিব।

এর আগে জকসু ও হল সংসদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে ১৭ জনের প্রার্থিতা বাতিল করেছিল নির্বাচন কমিশন। তাঁদের মধ্যে ১৫ জন প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কয়েক ধাপে আবেদনগুলো পর্যালোচনা করে। প্রথম ধাপে ছয়জনের পর এবার দ্বিতীয় ধাপে আরও তিনজনের আপিল মঞ্জুর করা হলো।

এ বিষয়ে জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোস্তফা হাসান বলেন, ‘বাদ পড়ে যাওয়া প্রার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদন করেন। সেখান থেকে যাচাই-বাছাই করে প্রার্থিতার অনুমোদন দেওয়া হয়।’

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। ১৪ ডিসেম্বর থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থীরা প্রচারণা চালাতে পারবেন। ৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ ও গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জকসু প্রার্থীর চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ ৪২, আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পেলেন ৩ জন
  • বিএনপির প্রার্থী বদল চেয়ে নারীদের ঝাড়ু মিছিল