একাধিক এনআইডি থাকলে প্রথমটি রেখে বাকিগুলো বাতিল: নির্বাচন কমিশন
Published: 19th, May 2025 GMT
যেসব নাগরিকের একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) রয়েছে, তাঁদের প্রথমটি রেখে বাকিগুলো বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ সোমবার নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এ এস এম হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘দুটি এনআইডি থাকার যে বিষয়টি, তা ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। আমরা কমিশনের সিদ্ধান্তক্রমে ও সচিবালয়ের নির্দেশনায় প্রথমটি রেখে দ্বিতীয়টি বাতিল করেছি। এ মুহূর্তে আমাদের জানা মতে, দুটি এনআইডি কারও নেই।’
এখন পর্যন্ত কতজন দ্বৈত ভোটারের পরিচয়পত্র স্থগিত করা হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে এ এস এম হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘৫৮৬ জনকে শনাক্ত করা গিয়েছিল। উনাদের এনআইডি লক ছিল। উনারা কোনোভাবেই নাগরিক সেবা নিতে পারছিলেন না। যেহেতু এখন প্রথমটা রেখে দ্বিতীয়টা বাতিল করা হয়েছে, তাই এখন তাঁদের প্রথম এনআইডি ওপেন হয়ে গেছে। উনারা এখন সেবা পাবেন।’
আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত ভোটার রেজিস্ট্রেশনের কাজ চলমান রেখেছে ইসি। এর পাশাপাশি দেশের বাইরের ভোটারদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টিও চলমান রাখা হয়েছে, জানান এ এস এম হুমায়ুন কবীর।
ইসির ডেটা সেন্টারের নিরাপত্তা প্রসঙ্গ টেনে এ এস এম হুমায়ুন কবীর আরও বলেন, ‘এটা যেহেতু ২৪ ঘণ্টা চলে, তাই মাঝে মাঝে আমরা কিন্তু একটু বন্ধ করি। আবার চালু করি। গত পরশু দিন আমরা করেছিলাম। আপনারা নিশ্চয়ই খবর পেয়েছেন। তারপরে আমরা চার ঘণ্টা পরে ওটা আবার চালু করতে পেরেছি। রেগুলার (নিয়মিত) মেইনটেন্যান্স (রক্ষণাবেক্ষণ) হিসেবে আমরা কিন্তু কাজটা করি। এর ধারাবাহিকতায় আমাদের ডেটা সেন্টারটা আমাদেরই লোকদের দ্বারা আমরা একটু পরীক্ষা করিয়েছি যে এখানে কোনো সুবিধা-অসুবিধা আছে কি না। এটা আপডেটেড আছে কি না।’
ডেটা সেন্টার এখন পুরোপুরি নিরাপদ বলে জানান এ এস এম হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত বলা যায়, ডেটা সেন্টার পুরোপুরি নিরাপদ এবং এ নিয়ে এই মুহূর্তে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে না। কিন্তু যাতে কোনোভাবেই কোনো ডেটা লিক না হয় বা অন্য কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য দৈনন্দিন যে কার্যক্রম, এটা চলমান রয়েছে এবং থাকবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আরও পড়ুনসাড়ে ৮ ঘণ্টা পর সচল হলো এনআইডি কার্যক্রম, সেবা মিলবে বুধবার সকাল থেকে১৩ মে ২০২৫এর আগে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে ব্যাংকিং সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে বিদ্যমান জটিলতা নিরসনের বিষয়ে ইসির সঙ্গে আলোচনায় বসেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। বৈঠকের বিষয়ে এ এস এম হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘তাঁদের কী কী অসুবিধা হতে পারে অথবা আমাদের পক্ষ থেকে তাঁরা কী কী সেবা পেতে পারেন, এটা একটু ক্লিয়ার হতে এসেছিলেন তাঁরা।’
ইসির নতুন সিদ্ধান্তের ফলে গ্রাহকদের টাকা উত্তোলনে কোনো সমস্যা হবে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, ‘এখন পর্যন্ত হয়নি, হওয়ার কথাও নাই।’
আরও পড়ুনওটিপি না আসায় এনআইডি সেবায় বিঘ্ন১৩ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সঞ্চয়পত্র নাকি এফডিআর—কোথায় বিনিয়োগ করবেন
আপনার হাতে ২-৩ লাখ টাকা জমেছে। এ টাকা কী করবেন, কোথায় জমা রাখবেন, এ নিয়ে চিন্তিত হন। এত টাকা হাতে এলে প্রথমেই সঞ্চয়পত্র কেনার কথা ভাবেন অনেকে। আবার অনেকে এফডিআর (স্থায়ী আমানত) করার কথাও চিন্তা করেন।
তবে সঞ্চয়পত্র কেনা নাকি এফডিআর করা—কোনটি ভালো হবে, তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন অনেক। সঞ্চয়পত্র ও এফডিআর নিয়ে একটি বিশ্লেষণ দেওয়া হলো। বিশ্লেষকেরা বলেন, বিনিয়োগের একটি অংশ সঞ্চয়পত্রে ও অপর অংশ এফডিআরে রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ। এতে ঝুঁকি কম থাকে।
সঞ্চয়পত্র
মধ্যবিত্তের জন্য সঞ্চয়পত্র বেশি জনপ্রিয়। কারণ, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে ঝামেলা নেই। এত ব্যাংক কেলেঙ্কারির মধ্যেও সঞ্চয়পত্র একটি আস্থার আর্থিক পণ্য হিসেবে সমাজে স্বীকৃত।
সুবিধা কী কী
১. সঞ্চয়পত্রে সরকারি গ্যারান্টি থাকে। তাই টাকা হারানোর ঝুঁকি নেই বললেই চলে।
২. এফডিআর থেকে তুলনামূলকভাবে সুদের হার বেশি। বর্তমানে সঞ্চয়পত্রে গড়ে সুদের হার ১২ শতাংশের আশপাশেই আছে।
৩. দীর্ঘ মেয়াদে নিশ্চিত রিটার্ন পাওয়া যায় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করলে।
৪. সাধারণত কর মওকুফ বা কর রেয়াত সুবিধা পাওয়া। যা আপনার বছর শেষে করের পরিমাণ কমিয়ে দেবে।
৫. বিপদে পড়লে সঞ্চয়পত্র ভেঙে কাজে লাগানো যায়। অনেকে ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেও সঞ্চয়পত্র কেনেন।
অসুবিধা কী কী
১. নির্দিষ্ট সীমার বেশি কেনা যায় না। যেমন—পরিবার সঞ্চয়পত্র ৪৫ লাখ টাকা পর্যন্ত কেনা যায়। আবার পেনশনার সঞ্চয়পত্র ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত কিনতে পারবেন।
২. মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে ভাঙালে মুনাফার পরিমাণ কমে যায়।
৩. মুনাফার টাকার উৎসে কর কেটে নেওয়া হয়।
৪. তাৎক্ষণিকভাবে নগদায়ন করার সুবিধা সীমিত।
এফডিআর
এটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রাখতে হয়। আপনার টাকা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রেখে মুনাফা নেওয়া যায়। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এফডিআর করা যায়।
সুবিধি কী কী
১. ব্যাংকভেদে এফডিআরের মেয়াদ বেছে নেওয়ার সুযোগ আছে। সাধারণত ৩ মাস থেকে ৫ বছর পর্যন্ত এফডিআর করা হয়।
২. এফডিআরের বিপরীতে ইচ্ছা করলে ঋণ নেওয়ার সুবিধা পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে যত টাকার এফডিআর করা হয়, সাধারণত এর ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যায়।
৩. কিছু ব্যাংক মাসিক বা তিন মাস ভিত্তিতে সুদ প্রদান করে। যা নিয়মিত আয়ের উৎস হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
৪. টাকা প্রয়োজন হলে তুলনামূলকভাবে সহজে এফডিআর ভাঙানো যায়।
অসুবিধা কী কী
১. সাধারণত সুদের হার সঞ্চয়পত্রের চেয়ে কম। সুদের হার ৬ থেকে ৯ শতাংশের মধ্যে থাকে। কিছু ব্যাংক এর বেশি হারের সুদ দেয়।
২. ব্যাংকের স্থিতিশীলতার ওপর নির্ভর করে এফডিআরের ভবিষ্যৎ।
৩. সময়ের আগে ভাঙালে সুদ কমে যায়।