দাদা বাহার আলী শাহ চালাতেন কাঠের ঘানি। গরু দিয়ে ঘানি টেনে বিন্দু বিন্দু করে শর্ষের তেল বের করতেন। সেই তেল বিক্রি করে সংসার চালাতেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর পর এই পেশায় যান ছেলে মীরজান আলী শাহ। আর এখন সেই পেশাকে আঁকড়ে ধরে আছেন মীরজানের ছেলে নমির উদ্দিন শাহ (৬৪)। রাজশাহীর বাগমারার গোপালপুর গ্রামে তাঁর বাড়ি।

যুগ পাল্টেছে, বদলেছে পদ্ধতি; কিন্তু পেশার প্রতি নমির উদ্দিনের ভালোবাসা বদলায়নি। প্রযুক্তির যুগে এসে কাঠের ঘানির জায়গা নিয়েছে মেশিন, তবে পেশাটা তিনি ছাড়েননি। তাঁর মৃত্যুর পর আর কেউ নেই এই পেশায়। তাই শেষ হতে পারে তিন প্রজন্মের এই ঐতিহ্য।

নমির উদ্দিনের জন্ম গোপালপুর গ্রামে। লেখাপড়া করেননি। ছোটবেলা থেকেই ঘানিতে শর্ষে ভাঙানোর কাজ করতেন পরিবারের বড়দের সঙ্গে। ২১ বছর বয়স থেকে পুরোদমে জড়িয়ে পড়েন কাঠের ঘানির সঙ্গে। সেই থেকে এখন পর্যন্ত আছেন একই পেশায়।

সম্প্রতি গোপালপুর মোড়ে টিনের বেড়ায় ঘেরা ছোট্ট এক মিলঘরে একা কাজ করতে দেখা গেল নমিরকে। নিজ হাতে শর্ষে থেকে তেল ও খইল তৈরি করে প্রক্রিয়াজাত করছেন। তিনি বলেন, একসময় তাঁদের বাড়িতে চারটি গরু দিয়ে দুটি কাঠের ঘানি চলত। ওই সময়ে তাঁর মা–বাবা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এই কাজ করতেন। তাঁর বাবার তিন স্ত্রীর মোট ১৫ জন সন্তান ছিল। সবাই বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করতেন ঘানি থেকে তেল তৈরিতে।

নমির উদ্দিন বলেন, ‘হাটবাজার ঘুইর‍্যা শর্ষে কিনা আনি, তারপর দিন-রাইত মিইল্যা ৯-১০ সের তেল বানাইতাম। সেই তেল মাথায় কইর‍্যা নিয়া গেছি হাটে বিক্রি করতে। শুধু আমি না, ভাইয়েরা-বোনেরাও ভাগ ভাগ হইয়া তেল বিক্রি করত।’

বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের হাল ধরেন নমির উদ্দিন। ২০০১ সাল পর্যন্ত গরু দিয়ে কাঠের ঘানি চালিয়ে তেল বের করেছেন। পরে ঘানি বন্ধ হলেও পেশা ছাড়েননি। বিভিন্ন এলাকা থেকে তেল সংগ্রহ করে বিক্রি করতেন। একসময় কাজ করেন নওগাঁর আত্রাইয়ের বান্দাইখাঁড়া এলাকার একটি তেল মিলে। সেখানে মেশিনে তেল তৈরির কৌশল শেখেন। ২০১১ সালে গ্রামে ফিরে নিজের তেল ভাঙানোর মিল স্থাপন করেন। কিছু ধারদেনা করে মিল চালু করেন। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। এখন প্রতিদিন প্রায় ১০০ কেজি তেল তৈরি করেন মিল থেকে।

নিজ হাতে শর্ষে থেকে তেল ও খইল তৈরি করে প্রক্রিয়াজাত করেন নমির উদ্দিন.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক জ কর করত ন

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত–পাকিস্তান লড়াই: একসময় আগুন জ্বলত, এখন শুধু ধোঁয়া

ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক সব সময়ই দুই দেশের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক কৌশল অনুযায়ী এগিয়েছে।

অতীতেও দ্বিপক্ষীয় সিরিজে লম্বা বিরতি দেখা গেছে। ১৯৫৪ থেকে ১৯৭৮—টানা ২৪ বছর পাকিস্তান সফরে যায়নি ভারত। আবার ১৯৬০ সালের পর পাকিস্তানও প্রথমবারের মতো ভারতে খেলতে যায় ১৯৭৯ সালে।

এরপর ১৯৮২ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত ভারত-পাকিস্তান নিয়মিত মুখোমুখি হয়েছে। এই সময়ে ভারত তিনবার পাকিস্তান সফরে গিয়ে খেলে ১২ টেস্ট, পাকিস্তানও ভারতে গিয়ে খেলে ৮ টেস্ট।

দীর্ঘ বিরতির পর ১৯৯৯ সালে পাকিস্তান তিন টেস্ট খেলতে ভারতে যায়। এর মধ্যে একটি ছিল কলকাতার ইডেন গার্ডেনে প্রথম এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। ভারত ফিরতি টেস্ট সিরিজ খেলতে পাকিস্তানে যায় ২০০৪ সালে, যা ছিল ১৯৮৯ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শচীন টেন্ডুলকারের অভিষেকের পর প্রথমবার।

২০০৪ সালের পাকিস্তান সফরে কড়া নিরাপত্তায় ব্যাটিংয়ে নামেন শচীন টেন্ডুলকার

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাঁশির সুরে বিরহের কষ্ট ভুলতে চান রিকশাচালক শফিকুল
  • ইতিহাসের দ্রুততম মানবের এখন সিঁড়ি ভাঙতে দম ফুরিয়ে আসে
  • ভারত–পাকিস্তান লড়াই: একসময় আগুন জ্বলত, এখন শুধু ধোঁয়া