মুর্শিদাবাদ দাঙ্গা: তৃণমূলের এক নেতা ও পুলিশকে দায়ী কলকাতা হাইকোর্টের গঠন করে দেওয়া কমিটির
Published: 22nd, May 2025 GMT
কলকাতা হাইকোর্টের গঠন করে দেওয়া তিন সদস্যের কমিটি মুর্শিদাবাদের দাঙ্গার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের এক স্থানীয় নেতা ও পুলিশকে দায়ী করেছে। কমিটির দেওয়া প্রতিবেদন থেকে এমনটি জানা গেছে।
প্রতিবেদনের এক নম্বর অনুচ্ছেদে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মেহবুব আলমের কথা উল্লেখ করে হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘আক্রমণগুলি স্থানীয় কাউন্সিলর মেহবুব আলম পরিচালনা করেছিলেন। স্থানীয় পুলিশ সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় এবং অনুপস্থিত ছিল।’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দুর্বৃত্তরা একটি পানির বোতলের দোকান ধ্বংস করেছে এবং ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকাসহ ক্যাশ বাক্স লুট করেছে। ধুলিয়ান পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত একটি শপিং মলও সম্পূর্ণভাবে লুটপাট করা হয়েছে এবং তা বন্ধ হয়ে গেছে। স্থানীয় ঘোষপাড়ায় ২৯টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রতিবেদনের ভাষ্য অনুযায়ী, উত্তম মুর্শিদাবাদের ‘সমসেরগঞ্জ, হিজলতলা, শিউলিতলা, (এবং) ডিগ্রির বাসিন্দারা তাদের মুখ ঢেকে এসেছিলেন। স্থানীয় কাউন্সিলর মেহবুব আলম দুর্বৃত্তদের সঙ্গে ১১ এপ্রিল ঘটনাস্থলে এসেছিলেন। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) স্থানীয় বিধায়কও [ঘটনাস্থলে] উপস্থিত ছিলেন। তিনি ভাঙচুর দেখে চলে যান। তবে ১২ এপ্রিলও (শনিবার) সহিংসতা অব্যাহত ছিল।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ওয়াক্ফ সংশোধনী বিলকে কেন্দ্র করে ৯ থেকে ১২ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হয়। গত ১১ এপ্রিল তিনজন নিহত ও অনেকে আহত হন। বেশ কিছু দোকান ও বাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং আগুন লাগানো হয়।
সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন তদারকি করার জন্য কলকাতা হাইকোর্ট গত মাসে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেন। কমিটিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রেজিস্ট্রার যোগিন্দর সিং, পশ্চিমবঙ্গ আইনি পরিষেবার সদস্যসচিব সত্য অর্ণব ঘোষাল এবং পশ্চিমবঙ্গ বিচার বিভাগীয় পরিষেবার রেজিস্ট্রার সৌগত চক্রবর্তীকে রাখা হয়েছে।
গত শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে এক নির্দেশে বলেছিলেন, মুর্শিদাবাদের সংঘর্ষে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁদের প্রত্যেককে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ওই অঞ্চলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) একটি চৌকি স্থায়ী ভাবে রাখার জন্য স্থানীয় মানুষ আবেদন করেছেন। রাজ্য সরকার এই আবেদনটি বিবেচনা করে দেখতে পারেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কলক ত
এছাড়াও পড়ুন:
আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।
আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।
ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫