কলকাতা হাইকোর্টের গঠন করে দেওয়া তিন সদস্যের কমিটি মুর্শিদাবাদের দাঙ্গার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের এক স্থানীয় নেতা ও পুলিশকে দায়ী করেছে। কমিটির দেওয়া প্রতিবেদন থেকে এমনটি জানা গেছে।

প্রতিবেদনের এক নম্বর অনুচ্ছেদে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মেহবুব আলমের কথা উল্লেখ করে হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘আক্রমণগুলি স্থানীয় কাউন্সিলর মেহবুব আলম পরিচালনা করেছিলেন। স্থানীয় পুলিশ সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় এবং অনুপস্থিত ছিল।’

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দুর্বৃত্তরা একটি পানির বোতলের দোকান ধ্বংস করেছে এবং ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকাসহ ক্যাশ বাক্স লুট করেছে। ধুলিয়ান পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত একটি শপিং মলও সম্পূর্ণভাবে লুটপাট করা হয়েছে এবং তা বন্ধ হয়ে গেছে। স্থানীয় ঘোষপাড়ায় ২৯টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

প্রতিবেদনের ভাষ্য অনুযায়ী, উত্তম মুর্শিদাবাদের ‘সমসেরগঞ্জ, হিজলতলা, শিউলিতলা, (এবং) ডিগ্রির বাসিন্দারা তাদের মুখ ঢেকে এসেছিলেন। স্থানীয় কাউন্সিলর মেহবুব আলম দুর্বৃত্তদের সঙ্গে ১১ এপ্রিল ঘটনাস্থলে এসেছিলেন। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) স্থানীয় বিধায়কও [ঘটনাস্থলে] উপস্থিত ছিলেন। তিনি ভাঙচুর দেখে চলে যান। তবে ১২ এপ্রিলও (শনিবার) সহিংসতা অব্যাহত ছিল।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ওয়াক্ফ সংশোধনী বিলকে কেন্দ্র করে ৯ থেকে ১২ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হয়। গত ১১ এপ্রিল তিনজন নিহত ও অনেকে আহত হন। বেশ কিছু দোকান ও বাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং আগুন লাগানো হয়।

সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন তদারকি করার জন্য কলকাতা হাইকোর্ট গত মাসে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেন। কমিটিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রেজিস্ট্রার যোগিন্দর সিং, পশ্চিমবঙ্গ আইনি পরিষেবার সদস্যসচিব সত্য অর্ণব ঘোষাল এবং পশ্চিমবঙ্গ বিচার বিভাগীয় পরিষেবার রেজিস্ট্রার সৌগত চক্রবর্তীকে রাখা হয়েছে।

গত শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে এক নির্দেশে বলেছিলেন, মুর্শিদাবাদের সংঘর্ষে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁদের প্রত্যেককে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ওই অঞ্চলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) একটি চৌকি স্থায়ী ভাবে রাখার জন্য স্থানীয় মানুষ আবেদন করেছেন। রাজ্য সরকার এই আবেদনটি বিবেচনা করে দেখতে পারেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কলক ত

এছাড়াও পড়ুন:

মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শিক্ষার্থী নিহত, মা-ভাবি আহত

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কুন্দশী-মল্লিকপুর-পাঁচুড়িয়া আঞ্চলিক সড়কে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সালমান মল্লিক (১৬) নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তার মা চায়না বেগম ও ভাবি তাহেরা খানম। 

বুধবার (২১ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে মল্লিকপুর গ্রামের ডাক্তার আজিজুর রহমান মোয়াজের বাড়ির সামনে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহত সালমান মল্লিক দোয়া-মল্লিকপুর গ্রামের মৃত শহীদ মল্লিকের ছেলে। সে মঙ্গলহাটা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। 

পরিবার ও পুলিশ জানায়, বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সালমান তার মা চায়না বেগম ও ভাবি তাহেরা খানমকে নিয়ে লোহাগড়া বাজার থেকে মোটরসাইকেলে বাড়ি রওনা হয়। পথিমধ্যে মল্লিকপুর ডাক্তার আজিজুর রহমান মোয়াজের বাড়ির সামনে পৌঁছালে মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে থাকা একটি রোড রোলারে সজোরে আঘাত হানে। পরে স্থানীয় লাকজন আহতদের উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার বেলাল সানী সালমানকে মৃত ঘোষণা করেন। 

অন্যদিকে আহত চায়না বেগম ও তাহেরা খানমকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকালে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহত সালমানের মরদেহ পরিবারের কাছে হন্তান্তর করা হয়েছে।

ঢাকা/শরিফুল/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ