হাসিনা দিল্লিতে পালিয়ে থেকে নির্বাচনে জিতলে তাকে মেনে নেব: গয়েশ্ব
Published: 22nd, May 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, শেখ হাসিনা যদি দিল্লিতে পালিয়ে থেকে নির্বাচন করে আর জনগণ তাকে ভোট দেয়, আমি তাকে মেনে নেব। কারণ, এটা জনগণের রায়।
আগামী জাতীয় নির্বাচন কবে হবে, ডিসেম্বর নাকি জুন মাসে, তা ক্লিয়ার করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে খুলনা প্রেস ক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ দাবি জানান গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
খুলনা বিভাগীয় বিএনপির উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, কিছু কিছু পত্র-পত্রিকা, সুশীল বুদ্ধিজীবী ষড়যন্ত্র করে ওয়ান ইলেভেন সৃষ্টি করেছিল। এক-এগারোর কুশীলবরা এ সরকারের ঘাড়ে চেপে বসেছে এবং বিরাজনীতিকরণের চক্রান্ত করছে বলে আমার ধারণা। তারা সদ্য ভূমিষ্ঠ একটি দলকে গুরুত্ব দিচ্ছে। কিন্তু, বিএনপিকে ক্ষমতায় যেতে দেবে না বলে পণ করেছে।
তিনি দাবি করেন, বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য পাগল নয়। কিন্তু, ভোটের অধিকার জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সেনা সদরে সভা হয়েছে। সেনাপ্রধান কিছু আশঙ্কা প্রকাশ করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে বলেছেন। তিনি রাষ্ট্র দখল, সরকার দখল, ক্ষমতা দখলের কথা বলেন নাই। সেন্ট মার্টিন, ট্রানজিট, মানবিক করিডোর ইত্যাদি সেনসেটিভ ইস্যুতে নির্বাচিত সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে জানিয়েছেন। রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার সংসদের মাধ্যমে হতে পারে। হাসিনা ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিল, তখন তো সেনাবাহিনীকে এভাবে কথা বলতে হয় নাই।
প্রবীণ এ রাজনীতিক বলেন, আগে একরকম ষড়যন্ত্র ছিল, এখন ষড়যন্ত্রের রূপ ভিন্ন রকম। কিন্তু, ষড়যন্ত্র থামে নাই। ৫ আগস্টের আগে আমরা একত্রিত হয়েছিলাম। কিন্তু, এখন মতামত ভিন্ন। আমরা আগে জাতীয় নির্বাচন চাই, কেউ চায় আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন। কিন্তু, নির্বাচন হোক, এটাই আমাদের দাবি।
জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে বিএনপির কেন্দ্রীয় এই নেতা বলেন, তারা ট্রাভেল এজেন্সি খুলে মানুষকে বেহেশতের টিকিট দিচ্ছে। কিন্তু, নিজেরা বেহেশতে যেতে পারবে কি না সন্দেহ।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন—বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা, বাগেরহাট জেলার আহ্বায়ক আকরাম হোসেন তালিম ও সদস্য সচিব মোজাফফর আলম, সাতক্ষীরা জেলার আহ্বায়ক রহমত উল্লাহ পলাশ ও সদস্য সচিব আবু জাহিদ ডাবলু, যশোর জেলার সভাপতি সাবিরুল হক সাবু ও সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, নড়াইল জেলার সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম, ঝিনাইদহ জেলার আহ্বায়ক এম এ মজিদ, কুষ্টিয়া জেলার সদস্য সচিব জাকির হোসেন সরকার, মেহেরপুর জেলার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আমিরুল ইসলাম, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, মাগুরার আহ্বায়ক আলী আহমেদ, সদস্য সচিব মনোয়ার হোসেন, খুলনা জেলার আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু প্রমুখ।
পাঁচ তরুণের সদস্য ফরম পূরণের মধ্যে দিয়ে খুলনা বিভাগীয় সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
ঢাকা/নূরুজ্জামান/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ষড়যন ত র অন ষ ঠ ন র সদস য সদস য স ব এনপ র ইসল ম ক ষমত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জামায়াতের তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা
পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন, জাপা ও চৌদ্দ দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ করাসহ ৫ দফা দাবিতে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মগবাজার আল-ফালাহ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির নায়েবে আমির সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।
আরো পড়ুন:
মুক্তিযুদ্ধ না মানলে বাংলাদেশকে অস্বীকার করা হবে: জামায়াত নেতা আযাদ
জনগণ রায় দিলে দেশকে ৫ বছরেই দারিদ্র্যমুক্ত করা সম্ভব: শফিকুর রহমান
তিনি ৫ দফা দাবি তুলে ধরে বলেন, “জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করতে হবে, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে, ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করতে হবে এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।”
এসব দাবি বাস্তবায়নে তিন দিনে কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
কর্মসূচি হলো:
১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানী ঢাকায় সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল, ১৯ সেপ্টেম্বর দেশের সব বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ মিছিল এবং ২৬ সেপ্টেম্বর দেশের সব জেলা উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, অ্যাডভোকেট মোয়াযযম হোসাইন হেলাল, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুর রব ও মোবারক হোমাইন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আবদুর রহমান মুসা, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ইয়াসিন আরাফাত এবং প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি আতাউর রহমান সরকার প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সরকার জুলাই জাতীয় ঘোষণা ও জুলাই জাতীয় সনদ প্রস্তুত করেছেন। একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জুলাই জাতীয় ঘোষণা ও জুলাই জাতীয় সনদের প্রয়োজনীয় সংশোধনীসহ তাদের পরামর্শ সরকারের নিকট উপস্থাপন করে। জামায়াতে ইসলামী বরাবরই জুলাই জাতীয় সনদকে আইনগত ভিত্তি দেওয়ার বিষয়ে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। জাতির ক্রান্তিলগ্নে ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি’ হিসেবে অতীতের বিভিন্ন নজির ও উদাহরণ তুলে ধরে জুলাই জাতীয় সনদের আইনগত ভিত্তির বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান বারবার ব্যক্ত করে আসছে। আমরা মনে করি, জুলাই জাতীয় সনদের আইনগত ভিত্তি প্রদান ব্যতীত ছাত্রজনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত অভ্যুত্থান ও তার অর্জন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে।
সরকার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সরকারের ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও ভয়ভীতিমুক্ত গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে আসছে। অতীত অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কালো টাকার ব্যবহার বন্ধ, ভোটকেন্দ্র দখল, পেশিশক্তি প্রদর্শন ও ভোটের বিভিন্ন অনিয়ম ও অপতৎপরতা বন্ধ, কোয়ালিটি-সম্পন্ন পার্লামেন্ট এবং দক্ষ আইনপ্রণেতা তৈরিসহ প্রতিটি ভোট মূল্যায়নের লক্ষ্যে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের জন্য জোর দাবি জানানো হয়েছে। এমনকি দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, কলামিস্ট, লেখক, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও নানা শ্রেণিপেশার মানুষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবির সাথে একমত পোষণ করেছেন। কিন্তু তারপরও জনগণের দাবিসমূহ কার্যকর করার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। এমতাবস্থায় জনগণের দাবি আদায়ের জন্য গণআন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। তাই জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এবং জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি ন্যায়ভিত্তিক ও জবাবদিহিতামূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্ররূপে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ৫-দফা গণদাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ