সোমবার থেকে আমদানি-রপ্তানির সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা
Published: 25th, May 2025 GMT
সোমবার থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ছাড়া কর, শুল্ক ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিলসহ চার দফা দাবিতে কর্মসূচি শেষে রোববার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন ঐক্য পরিষদের নেতারা। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপকমিশনার আব্দুল কাইয়ুম ও মিজ রইসুন নেসা।
নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে তারা বলেন, আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ছাড়া কর, শুল্ক ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি চলবে। অর্থাৎ সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে ওষুধ ও জীবন রক্ষাকারী পণ্য এই কর্মসূচির আওতার বাইরে থাকবে।
এনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিলসহ চার দফা দাবিতে ১৩ দিন ধরে চলছে এ আন্দোলন।
আজ সকাল ৯টা থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ের নিচে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’ এর ব্যানারে আয়কর, শুল্ক ও ভ্যাট বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতির কর্মসূচি পালন করেছেন। তবে কাস্টমস হাউস, এলসি স্টেশন, রপ্তানি কার্যক্রম ও আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এই কর্মবিরতির বাইরে ছিল। সোমবার থেকে শুধু আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।
এদিন সরেজমিন দেখা যায়, এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরি করছেন। কেউ বাইরে, কেউ ভেতরে দাঁড়িয়ে কিংবা পেপার বিছিয়ে বসে অলস সময় পার করছেন। এনবিআরের ভবনের ভেতরে এবং বাইরে বিপুল সংখ্যক বিজিবি এবং পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়। এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য উপস্থিত নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করেছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। তাদের অভিযোগ পরিষদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এনে আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করছে সরকার।
যে চার দাবিতে আন্দোলন
নতুন অধ্যাদেশ বাতিল, চেয়ারম্যানকে অপসারণ এবং রাজস্ব সংস্কারবিষয়ক পরামর্শক কমিটির সুপারিশ জনসাধারণের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। এছাড়া এনবিআরের প্রস্তাবিত খসড়া এবং পরামর্শক কমিটির সুপারিশ আলোচনা-পর্যালোচনা করে প্রত্যাশী সংস্থা, ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের মতামত নিয়ে উপযুক্ত ও টেকসই রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কার করার দাবি জানানো হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনব আর
এছাড়াও পড়ুন:
বাম দলগুলোর প্রতিক্রিয়া: ‘তফসিল হয়েছে, তবে সামনে বড় চ্যালেঞ্জ’
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে দেশের বাম দলগুলো।
তারা দাবি করছেন, তারিখ ঘোষণার পরও মাঠে এখনো কাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়নি,বরং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি জনমনে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। তাই ভোটাধিকার সুনিশ্চিত করতে সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বিত ও দায়িত্বশীল ভূমিকা এখন জরুরি।
আরো পড়ুন:
অসত্য তথ্য ছড়ানোও শাস্তিযোগ্য অপরাধ: সিইসি
তফসিল ঘোষণা করায় নির্বাচন কমিশনকে প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “১৭ বছর পর অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অপেক্ষার অবসান ঘটাতে পারে এই তফসিল। জনগণও নিজেদের দল ও প্রতীকে ভোট দেওয়ার সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। ১২ ফেব্রুয়ারি সেই সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।”
তিনি মনে করেন, “একই দিনে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট-বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে নতুন অভিযাত্রার ইঙ্গিত হলেও সামনে বেশ কিছু ঝুঁকি রয়েছে।”
“একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের জন্য যে পরিবেশ প্রয়োজন, তা এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলো নির্বাচন কমিশনের অধীনে এনে কঠোর নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মানুষের আস্থা ফেরানো জরুরি। ভোটে টাকার খেলা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে”, বলেন সাইফুল হক।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স তফসিল ঘোষণায় নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “এখন থেকে প্রতিটি মুহূর্তে ইসি ও সরকারকে এমন সব পদক্ষেপ নিতে হবে, যা দেখলে সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করবে, এবার সত্যিকার অর্থে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।”
তিনি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ওপর জোর দিয়ে বলেন, “প্রার্থী হওয়া ও ভোট দেওয়ার সমান সুযোগ সবার জন্য নিশ্চিত করতে ইসিকে আরো সক্রিয় হতে হবে। প্রয়োজনে উপদেষ্টা পরিষদকে পুনর্গঠন করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষতার বার্তা আরো দৃশ্যমান করতে হবে।”
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, “বহুল প্রত্যাশিত তফসিল ঘোষণায় স্বস্তি এসেছে, তবে অবাধ সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ এখনো মসৃণ নয়।”
“নির্বাচনকে টাকার প্রভাব, পেশিশক্তি, সাম্প্রদায়িকতা, আঞ্চলিকতা এবং প্রশাসনিক কারসাজিমুক্ত করতে হবে। সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলার অবনতিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে”, যোগ করেন তিনি।
সরকার, ইসি ও রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা এবং জরুরি উদ্যোগ ছাড়া গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন বজলুর রশীদ ফিরোজ।
ঢাকা/এএএম/রাসেল