২ দিনের রিমান্ডে সাবেক মেয়র আইভী
Published: 25th, May 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার (২৫ মে) বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নূর মহসিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শুনানির সময় গাজীপুর কাশিমপুর মহিলা কারগার থেকে কারা কর্তৃপক্ষের সহায়তা আদালতে আইভীকে ভার্চুয়ালি উপস্থিত রাখা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো.
জেলা আদালতের ভারপ্রাপ্ত পিপি এডভোকেট ওমর ফারুক নয়ন জানান, আদালতে তদন্ত কর্মকর্তা ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এই রিমান্ডের মাধ্যমে মিনারুলকে কীভাবে গুলি করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হত্যা করা হয়েছে সেটা উদঘাটিত হবে।
আইভীর পক্ষের আইনজীবী আওলাদ হোসেন বলেন, মিনারুল হত্যা মামলায় আদালতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে । সে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। এই মামলায় আইভীকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সাবেক মেয়রকে জড়ানো হয়েছে।
শুনানীকালে বিজ্ঞ আদালতে মেডিকেল রির্পোট আদালতে দাখিল করার পর আদালত তা আমলে না নিয়ে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে, গত ৯ মে ভোরে শহরের দেওভোগ এলাকা থেকে মিনারুল হত্যা মামলায় আইভীকে গ্রেফতার করে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ। পরে জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঈনুদ্দিন কাদিরের আদালত আইভীকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাত ১১টার দিকে পুলিশের একটি দল শহরের দেওভোগ এলাকায় অবস্থিত আইভীর বাড়ি চুনকা কুটিরে প্রবেশ করেন। এ সময় আইভীর গ্রেপ্তারের খবরে স্থানীয় বাসিন্দা ও তার নেতাকর্মীরা রাস্তায় নেমে এলে পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এ সময় আইভীর বাড়ির দিকে যাওয়ার দুটি রাস্তায় বাঁশ, ঠেলাগাড়ি, ভ্যানগাড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও আইভীর সমর্থকরা। আশপাশের এলাকার মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে সবাইকে আইভীর বাড়ির দিকে রওয়ানা দেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
পরে শুক্রবার (৯ মে) ভোরে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে পথিমধ্যে তাকে বহনকারী গাড়ি বহরে হামলা করে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
পরে তাকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ে সিদ্ধিরগঞ্জের পোশাকশ্রমিক মিনারুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। পরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার তুহিন হত্যা ও নাদিম হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
আইভীর বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা থানায় হত্যা ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ৬টি মামলা রয়েছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: হত য ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ ন ত কর ম আইভ র ব আইভ ক য় আইভ
এছাড়াও পড়ুন:
ফ্যাসিস্টের দোসররা চান না মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত হোক : ডা. রফিকুল
বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও অধিদপ্তরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে এখনো ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা বহাল তবিয়তে রয়েগেছে। তারা চান না দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত হোক।
এইসব দোসরদের অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে। একই সাথে স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়নের সবচেয়ে বড় বাঁধা দুর্নীতি এই দুর্নীতিরোধ করে স্বাস্থ্য খাতকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে সবার সমন্বিত প্রয়াস দরকার।
সোমবার (৭ জুলাই) ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) নারায়ণগঞ্জ শাখার আয়োজনে “ডেঙ্গু রোগের সাম্প্রতিক চিকিৎসা ও সচেতনতা” শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে ডেঙ্গু বিষয়ক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. পঙ্কজ নাহা। প্যানেল অফ এক্সপার্ট হিসেবে অংশ নেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ড্যাবের সদস্য সচিব ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ।
ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, “আপনাদের মনে আছে, ২০২৩ সালে যখন দেশে ডেঙ্গুর পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়, তখন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী মেয়র তাপস বিদেশ সফরে ছিলেন ১৭ দিন। দৃশ্যত সিটি করপোরেশন বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো সমন্বিত কার্যক্রম ছিল না।”
চলতি বছরে ডেঙ্গু সংক্রমনের হার বিগত দুই বছরের তুলনায় কম উল্লেখ করে তিনি বলেন, "চলতি বছর ২০২৫ সালের ৬ জুলাই পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ১২,২৭১ জন। মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৩১৭ জন। মৃত্যুর সংখ্যা ইতোমধ্যে পৌঁছেছে ৪৫ জনে। এই হার যেনো বিগত বছরের মত না হয় সেই ব্যাপারে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।"
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতির ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, “বারবার বলেছি—পুরোনো, নিষ্ক্রিয় ফগিং মেশিন দিয়ে লোক দেখানো কর্মসূচি বন্ধ করুন। এখন সময় এসেছে মশক নিধনে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করার। জেনেটিক কৌশল, ‘উলবাকিয়া’ পদ্ধতির মতো বৈজ্ঞানিক পন্থাগুলোর বাস্তবায়ন জরুরি।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ড্যাবের আহ্বায়ক ডা. জাহাঙ্গীর আলম।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক প্রফেসর মামুন মাহমুদ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীব, নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যার হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল বাসার, নারায়ণগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন ডা. এএফএম মুশিউর রহমান।
এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন সোসাইটি অফ মেডিসিনের সদস্য সচিব ডা. জাকারিয়া আজিজ, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মাহমুদুর রহমান নোমান, ডা. জাহিদুল কবির, প্লাস্টিক সার্জন ডা. শরীফ, ডা. মিতালী, ডা. সাইফুল আলম বাদশাসহ নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের চিকিৎসকবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা ডেঙ্গু মোকাবিলায় রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং বলেন, এ ধরনের স্বাস্থ্য সংকট প্রতিরোধে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন।