ঈদুল আজহা উপলক্ষে সারাদেশের মতো কিশোরগঞ্জেও ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করছে টিসিবি। বাজারের চেয়ে কম দামে পণ্য বিক্রি করায় টিসিবির ট্রাক দেখলেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম থাকায় অধিকাংশ ক্রেতাকেই ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে। 
গত বৃহস্পতিবার থেকে দেশব্যাপী সাধারণ মানুষের জন্য ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে সয়াবিন তেল, ডাল ও চিনি বিক্রি শুরু করেছে টিসিবি। সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবির এসব পণ্য বিক্রির কার্যক্রম চলবে আগামী ৩ জুন পর্যন্ত। বিভাগীয় শহর ছাড়াও প্রতিটি জেলা শহরে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। 
গতকাল রোববার দুপুরে কিশোরগঞ্জ শহরের শহীদি মসজিদের সামনে একটি ট্রাক থেকে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছিল। খোলাবাজার থেকে অনেক কম দামে পণ্য বিক্রি হওয়ায় টিসিবির ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের পেছনে নারী-পুরুষের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। ডিলার দেলোয়ার হোসেন জানান, তিনি ৪০০ জনের মাল বরাদ্দ পেয়েছেন। প্রত্যেককে দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি ডাল আর এক কেজি চিনি দিচ্ছেন। ৪০০ জনের পরে বাকিদের খালি হাতে ফেরত যেতে হবে। 
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, টিসিবির ট্রাক থেকে দুই লিটার তেল, দুই কেজি ডাল ও এক কেজি চিনির দাম ৫৩৫ টাকা। খোলাবাজার থেকে একই পরিমাণে এ তিনটি পণ্য কিনতে ক্রেতাদের ৭১৩ টাকা ব্যয় হবে। টিসিবির ট্রাক থেকে কিনলে ১৭৮ টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। এ কারণে টিসিবির ট্রাক দেখলেই কাছাকাছি যেতে মানুষের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়।  
মিঠামইন কলেজ এলাকার রেহেনা বেগম (৩৫) মামলার কাজে শহরে এসেছিলেন। ফেরার পথে টিসিবির ট্রাক দেখে তিনিও লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন পণ্য কেনার জন্য। শহরতলির সতাল এলাকার মামুন মিয়াসহ (৫০) বহু নারী-পুরুষকে প্রখর রোদে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। মামুন মিয়ার ভাষ্য, টিসিবির ট্রাকে বাজার থেকে বেশ কিছুটা কম দামে পণ্য পাওয়া যায়। এ কারণে ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত অনেকেই খালি হাতে বাড়ি ফেরেন। তিনি আজ দুই ঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। শেষ পর্যন্ত পণ্য পাবেন কিনা, বুঝতে পারছেন না। 
টিসিবির আরেক ডিলার মাসুদ রানা জুয়েল জানান, কিশোরগঞ্জ পৌর এলাকায় টিসিবির 
৩৯ জন ডিলার রয়েছেন। ঈদের আগে প্রত্যেক ডিলার তিন দিন করে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে পণ্য বিক্রি করতে পারবেন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

উপদেষ্টাকে দুর্গত এলাকা সফর ক‌রে ব্যবস্থা নেওয়ার দা‌বি এবি পার্টির

দুর্যোগ ব‍্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীকের সাথে সাক্ষাৎ করে সাম্প্রতিক বন্যায় উদ্বেগ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সচিবালয়ে উপদেষ্টার দপ্তরে দেখা করে এবি পার্টির চেয়ারম্যান এই অনুরোধ জানান।

এই সময় ফেনী জেলার সদর উপজেলা, পরশুরাম, ফুলগাজী ও সোনাগাজী এবং নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও পিরোজপুর জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অতিবৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল এবং আকস্মিক বন‍্যা পরিস্থিতিতে উদ্বেগ জানিয়ে, দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা এবং প্রয়োজনীয় ত্রাণ ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।

মজিবুর রহমান মঞ্জু ত্রাণ উপদেষ্টাকে দুর্যোগ কবলিত এলাকা পরিদর্শনের আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “গত বছরের বন্যার পর যথাসময়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারলে এবার আকস্মিক বন্যার কবলে পড়তে হত না।”

মুছাপুর ক্লোজার এবং বল্লামুখা বাঁধ পুনর্নির্মাণে সরকারের অবস্থান জানতে চান মঞ্জু। এছাড়া পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত ও বাধাহীন করার ওপর গুরুত্ব দেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, “বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ ও বন্যা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় অনিয়ম হলে সেগুলো তদন্ত করে বের করা দরকার।”

২৪শের বন্যার পর সরকারের বরাদ্দ দেওয়া বিপুল অংকের টাকা যথাযথভাবে কাজে লাগানোর নিশ্চয়তা চান এবি পার্টির চেয়ারম্যান।

জবাবে উপদেষ্টা বলেন, “ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতায় কোন ঘাটতি নেই, উপজেলা পর্যায়ে যথেষ্ট ত্রাণসামগ্রী মজুত আছে।”

তিনি জেলা প্রশাসকদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন এবং প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান। বাকি দাবিগুলোর সাথে একমত পোষণ করে উপদেষ্টা বলেন, “এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রধান উপদেষ্টার সাথে আলাপ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বৃষ্টি কমে আসলে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন করে প্রয়োজনীয় পুনর্বাসন কার্যক্রম হাতে নেওয়ারও আশ্বাস দেন তিনি। যাদের কৃষি জমি ও ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে ক্ষতিপূরণের বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ