সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় সাত বছরের সাজার বিরুদ্ধে সিনিয়র সাংবাদিক শফিক রেহমানের আপিলের রায়ের দিন আজ ধার্য রয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৭ মে) ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তারিক এজাজ এ রায় ঘোষণা করবেন।

উল্লেখ্য গত ২৭ এপ্রিল শফিক রেহমানের সাজার বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শেষ হয়। আদালত রায়ের জন্য ২৭ মে তারিখ ধার্য করেন।

এর আগে ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে শফিক রেহমান, মাহমুদুর রহমানসহ পাঁচজনকে পৃথক দুই ধারায় সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন, তার ছেলে রিজভী আহাম্মেদ ওরফে সিজার এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ভূঁইয়া।

গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর এ মামলায় শফিক রেহমান ও মিজানুর রহমান ভূঁইয়ার সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে সাজার বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের শর্তে আত্মসমর্পণ করেন শফিক রেহমান। আদালত তার বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার করেন। একইসঙ্গে সাজা পরোয়ানা স্থগিত করেন। এরপর ২১ নভেম্বর আত্মসমর্পণ করে জামিন পান তিনি।

মামলার অভিযোগ বলা হয়, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে যে কোনো সময় থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনসহ বিএনপি ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত অন্যান্য দলের উচ্চপর্যায়ের নেতারা রাজধানীর পল্টনের জাসাস কার্যালয়ে, আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার আসামিরা একত্রিত হয়ে যোগসাজশে সজীব ওয়াজেদ জয়কে আমেরিকায় অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন। ওই ঘটনায় ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট পল্টন মডেল থানায় মামলাটি করেন। ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি এই পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। মামলায় সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১২ জন সাক্ষ্য দেন।

ঢাকা/এম//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র রহম ন বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

দখলদারদের কাছে প্রশাসনের আত্মসমর্পণ

বরিশালের আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী উপজেলার কয়েক হাজার কৃষকের জীবন-জীবিকার উৎস ঐতিহ্যবাহী টরকী–বাশাইল খালটি করুণ মৃত্যুর প্রহর গুনছে। নাব্যতাসংকট, নির্বিচার দখল, দূষণ ও কর্তৃপক্ষের লাগাতার অবহেলার শিকার হয়ে প্রায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই খালের এমন পরিণতি খুবই দুঃখজনক। এটি পরিবেশের ওপর কাঠামোগত আগ্রাসনের ধারাবাহিকতারই চিত্র।

খালটি যখন প্রবহমান ছিল, তখন তা ছিল দুই উপজেলার কৃষকদের জন্য আশীর্বাদ। কিন্তু প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কৃষকদের এখন সেচের
জন্য ‘ডাবল লিফটিং’ (দুবার পানি উত্তোলন) করতে হচ্ছে। প্রথমে পাম্প দিয়ে কোনোমতে খালে পানি আনতে হয়। এরপর সেই পানি আবার পাম্প দিয়ে জমিতে দিতে হয়। এই প্রক্রিয়ায় কৃষকের সেচ খরচ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ২০ শতক জমিতে যেখানে খরচ হতো ৭০০ টাকা, সেখানে এখন গুনতে হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা। লাভের মুখ দেখতে না পেয়ে অনেক কৃষক বোরো আবাদ ছেড়ে মাছের ঘের বা পানের বরজ তৈরি করতে বাধ্য হচ্ছেন, নয়তো আবাদি জমির পরিমাণ কমিয়ে দিচ্ছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে স্থানীয় খাদ্যনিরাপত্তা ও কৃষি অর্থনীতিতে মারাত্মক ধস নামতে বাধ্য।

এ বিপর্যয়ের মূল কারণটি অত্যন্ত স্পষ্ট—অবৈধ দখলদারত্ব ও প্রশাসনিক দুর্বলতা। খালের উৎসমুখ, অর্থাৎ টরকী বন্দরসংলগ্ন পালরদী নদীর মোহনা দখলদারেরা পুরোপুরি রুদ্ধ করে দিয়েছেন। প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে খাল ভরাট করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য পাকা ও আধা পাকা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। গৌরনদী ভূমি কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ‘খালের জমি কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি’—এমনটা বলা হলেও দখলদারেরা কীভাবে খালের জায়গাকে ‘রেকর্ডীয় সম্পত্তি’ বা ‘ইজারা নেওয়া জমি’ দাবি করেন? এর মধ্য দিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীরা প্রকাশ্যেই সরকারি সম্পত্তি দখল করে অবৈধভাবে ইমারত নির্মাণ করছেন।

এই দখলদারদের দাপট এতটাই বেশি যে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) গত বছর খাল খননের আবেদন পেয়েও কাজ শুরু করতে পারেনি। বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী সাহেদ আহমেদ চৌধুরী জানিয়েছেন, অবৈধ স্থাপনার কারণে খননযন্ত্র চালানো বা খনন করা মাটি রাখার মতো সামান্য জায়গাও সেখানে নেই। অর্থাৎ মুষ্টিমেয় অবৈধ দখলদার একটি সরকারি উন্নয়ন সংস্থাকে তার আইনি দায়িত্ব পালনে পঙ্গু করে রেখেছেন এবং স্থানীয় প্রশাসন এই দখলদারত্বের সামনে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ কেন এই অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না? কার ইশারায় এই দখলদারত্ব এত বছর ধরে চলতে দেওয়া হলো? টরকী–বাশাইল খালকে পুনরুদ্ধার করতে এখন কি কোনো আন্তরিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে, নাকি আমরা এ জলধারার উৎসের পুরোপুরি মৃত্যু নিশ্চিত হতে দেখব?

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দখলদারদের কাছে প্রশাসনের আত্মসমর্পণ
  • ছয় বছর ধরে নিখোঁজের পর ফেনীতে মৃত অবস্থায় উদ্ধার, সেই আহাদ আসলে কে