প্রায় ১০ মাসের লম্বা সময়, প্রতি সপ্তাহে অন্তত একটি করে লিগের ম্যাচ। মৌসুম এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যোগ হয় অন্যান্য টুর্নামেন্টের ম্যাচের ব্যস্ততা। এরই মাঝে লেখা হয়ে থাকে ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলোর উত্থান-পতনের অনেক গল্প। স্মৃতি হয়ে থাকে কিছু ম্যাচ। বছরজুড়ে বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের বিনোদন দিয়ে যাওয়া ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের মৌসুম শেষ হয়েছে গতকাল। যেখানে কেউ আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের টিকিট পেয়েছে, কেউ আবার লিগ থেকেই অবনমন করেছে।
আগামী ১৫ জুন যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হচ্ছে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ। সেখানে ইউরোপের যেসব ক্লাব অংশ নেবে, সেগুলোর হয়তো বিশ্রামের সুযোগ নেই। তবে বাকিগুলোর হাতে অন্তত আড়াই মাসের ছুটি। এর মাঝে কোনো কোনো ক্লাব ওয়ার্ল্ড ট্যুরে বের হলেও তারকা ফুটবলারদের জন্য সেসব ম্যাচ খেলার তাড়া নেই। আগস্টের মাঝামাঝি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ২০২৫-২৬ ফুটবল মৌসুম শুরু হবে। এর আগে ২০২৪-২৫ মৌসুম শেষে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে কোন দল কোথায় অবস্থান করছে, কোন লিগ থেকে কোন ক্লাব চ্যাম্পিয়ন্স লিগের টিকিট পেয়েছে, কেই বা ইউরোপা লিগ কিংবা কনফারেন্স লিগে খেলার সুযোগ পেয়েছে, সেটা একনজরে দেখে নেওয়া যেতে পারে।
প্রিমিয়ার লিগ (ইংল্যান্ড)
চ্যাম্পিয়ন: লিভারপুল
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ (৬): লিভারপুল, আর্সেনাল, ম্যানচেস্টার সিটি, চেলসি, নিউক্যাসল ইউনাইটেড, টটেনহাম হটস্পার।
ইউরোপা লিগ (২): অ্যাস্টন ভিলা, ক্রিস্টাল প্যালেস।
কনফারেন্স লিগ (১): নটিংহ্যাম ফরেস্ট।
রেলিগেশন: লেস্টারসিটি, ইপসুইচ, সাউদাম্পটন।
প্রমোশন: লিডস ইউনাইটেড, বার্নলি, সান্ডারল্যান্ড।
সিরি-এ (ইতালি)
চ্যাম্পিয়ন: ন্যাপোলি।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ (৪): ন্যাপোলি, ইন্টার মিলান, আটালান্টা, জুভেন্টাস।
ইউরোপা লিগ (২): রোমা, বোলোনিয়া।
কনফারেন্স লিগ (১): ফিওরেন্তিনা
রেলিগেশন : এম্পোলি, ভেনিজিয়া, মোনজা।
প্রমোশন: সাসুওলো, পিসা।
লা লিগা (স্পেন)
চ্যাম্পিয়ন: বার্সেলোনা
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ (৫): বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদ, অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ, অ্যাথলেটিক বিলাবাও, ভিয়ারিয়াল।
ইউরোপা লিগ (২): রিয়াল বেটিস, সেল্টা ভিগো।
কনফারেন্স লিগ (১): রায়ো ভায়েকানো।
রেলিগেশন: লেগানেস, লাস পালমাস, রিয়াল ভায়াদোলিদ।
প্রমোশন: লেভান্তে।
বুন্দেসলিগা (জার্মানি)
চ্যাম্পিয়ন: বায়ার্ন মিউনিখ।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ (৪): বায়ার্ন মিউনিখ, লেভারকুজেন, আইন্ট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্ট, বরুশিয়া ডর্টমুন্ড।
ইউরোপা লিগ (২): এসসি ফ্রেইবুর্গ স্টুটগার্ট।
কনফারেন্স লিগ (১): মাইঞ্জ।
রেলিগেশন: হলস্টেইন কেইল, বোখাম।
লিগ ওয়ান (ফ্রান্স)
চ্যাম্পিয়ন: প্যারিস সেন্ট জার্মেইন (পিএসজি)।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ (৪) : পিএসজি, মাঁর্শেই, এএস মোনাকো, নিঁস।
ইউরোপা লিগ (২) : লিঁলে, লিঁও।
কনফারেন্স লিগ (১) : স্ট্রাসবার্গ।
রেলিগেশন: সেন্ট এতিয়েন, মন্তেপিলার।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কনফ র ন স ল গ ইউর প র
এছাড়াও পড়ুন:
উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।
রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।