অনলাইন জুয়ায় জড়িত হাজার এমএফএস এজেন্ট শনাক্ত: সিআইডি
Published: 27th, May 2025 GMT
সদ্য জারি হওয়া সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ–২০২৫ অনুযায়ী অনলাইন জুয়া ও বেটিংয়ের বিরুদ্ধে সারাদেশে অভিযান শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এখন পর্যন্ত এক হাজারের বেশি মোবাইল ব্যাংকিং (এমএফএস) এজেন্টকে অনলাইন জুয়ার লেনদেনে জড়িত থাকার প্রমাণসহ শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তাদের লাইসেন্স বাতিল ও জরিমানা করার উদ্দেশে তালিকা ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খানের সই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে আরও বলা হয়, বর্তমানে মোবাইল অ্যাপ, ওয়েবসাইট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে অনলাইন জুয়া পরিচালিত হচ্ছে। সেখানে অংশগ্রহণকারীরা সহজে অর্থ উপার্জনের আশায় জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ছেন। অনেকেই আর্থিকভাবে দেউলিয়া ও নিঃস্ব হচ্ছেন। ফলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড, পারিবারিক সহিংসতা, এমনকি আত্মহত্যার মতো ঘটনা ঘটছে। সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫-এর ধারা ২০ অনুযায়ী অনলাইন জুয়া খেলা, জুয়া-সংক্রান্ত অ্যাপ বা পোর্টাল তৈরি ও প্রচারণা চালানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই অপরাধের জন্য দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড প্রযোজ্য। এ ছাড়া ২১ ও ২২ ধারায় জুয়া-সংক্রান্ত লেনদেন, প্রতারণা বা জালিয়াতিকেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে অনলাইন জুয়া ও বেটিংয়ে অংশ না নিতে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে এই সম্পর্কে সচেতন করতে নাগরিকদের প্রতি সিআইডি আহ্বান জানিয়েছে। সন্দেহজনক অ্যাপ, ওয়েবসাইট বা মোবাইল নম্বর সম্পর্কে তথ্য জানাতে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারে যোগাযোগের অনুরোধ করা হয়েছে। হটলাইন নম্বরগুলো হচ্ছে– ০১৩২০০১০১৪৬, ০১৩২০০১০১৪৭ ও ০১৩২০০১০১৪৮।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক মন্ত্রী গাজীসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে মামলা
সাবেক বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী এবং নারায়ণগঞ্জ (রূপগঞ্জ-১) এর সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী (৭৭) ও তার সাবেক পিএস এমদাদুল হক (৫২) সহ মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে সিআইডি।
মামলার অন্য অভিযুক্তরা হলেন- সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নীলা (৫৭), তোফায়েল আহমেদ আলমাছ (৫৫), মো. মাহাবুবুর রহমান জাকারিয়া মোল্লা (৪৮), মো. আনছার আলী (৫৫), আলফাজ উদ্দিন (৬৩) ও দিমন ভূঁইয়া (৫৫)।
প্রতারণাপূর্বক চাঁদাবাজীর মাধ্যমে ভুয়া দলিল তৈরি করে অবৈধভাবে মোট ২৪০১.৪৬ শতাংশ জমি (যার বর্তমান সরকারি বাজারমূল্য ৮৬ কোটি ৭৮ লাখ ৮৭ হাজার ৬৪৪ টাকা) জবর দখল, হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করায় তাদের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট রূপগঞ্জ থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ৪৩
মামলার এজাহার ও সিআইডি সূত্রে জানাগেছে, অভিযুক্তরা অজ্ঞাত ৭/৮ জন ব্যক্তির সহায়তায় একটি সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র গড়ে তোলে। অপরাধ চক্রটি পরস্পর যোগসাজশে গত ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি হতে ২০২৪ সালের ২০ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ভিকটিম মো. শাহ আলমের ১২৪ শতাংশ, আব্দুস সোবহান মিয়ার ১০ শতাংশ, নাঈম প্রধানের ১৮ শতাংশ, হাসিনা বেগমের ০৯ শতাংশ, আলেয়ার ৪৫ শতাংশ, ইয়াছিন প্রধানের ২৭.৫ শতাংশ, সানজুরা বেগমের ০৪ শতাংশ, মো. আশরাফ উদ্দিন ভুইয়ার ৭২ শতাংশমোস্তফা মনোয়ার ভুইয়ার ৩৪৬ শতাংশ, মো. হাবিব খানের ১৮৩.৫ শতাংশ, রাশিদা ভুইয়ার ১২৪ শতাংশ, আমজাদ আলী ভুইয়ার ৭৬০.৫ শতাংশ, মোবারক ভুইয়ার ৩১ শতাংশ, নূর-ই-তাছলীম তাপসের ৪৩০.৭ শতাংশ, মো. মাহবুবুল হক ভুইয়ার ৭১.৪৭ শতাংশ ও মোহাম্মদ মাহমুদুল হকের ৬৫ শতাংশসহ সর্বমোট ২৪০১.৪৬ শতাংশ জমি যার বর্তমান মূল্য (সরকারি দর অনুযায়ী) ৮৬ কোটি ৭৮ লাখ ৮৭ হাজার ৬৪৪ টাকা পরস্পর সংঘবদ্ধভাবে প্রতারণাপূর্বক চাঁদাবাজির মাধ্যমে ভুয়া দলিল সৃজন করে অবৈধভাবে স্থাবর সম্পত্তি জবর দখল করে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করেছে।
এ বিষয়ে সিনিয়র স্পেশাল জজ, মহানগর আদালত, ঢাকার পারমিশন পিটি. নং- ৬৮৪/২০২৫, তারিখ-৮ জুলাই ২০২৫ খ্রি. মুলে সম্পত্তি ক্রোক করা আছে, যার বর্তমান বাজার মূল্য ৪০০ (চারশত) কোটি টাকা।
ক্রোককৃত সম্পত্তির রিসিভার হিসেবে বিজ্ঞ সিনিয়র স্পেশাল জজ, মহানগর আদালত, ঢাকা সিআইডি প্রধান (এ্যাডিশনাল আইজিপি) কে নিয়োগ করেছেন। ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট এই মামলার তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অজ্ঞাত অপর সদস্যদের শনাক্তকরণ ও অন্যান্য আইনানুগ প্রক্রিয়ার স্বার্থে সিআইডির অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।
মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাবজাল বলেন, মামলাটি থানায় দায়ের হলেও তদন্ত করছে সিআইডি।